পটুয়াখালীতে খসে পড়ছে শ্রেণিকক্ষের পলেস্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভবনের ভিম ভেঙে রড বেরিয়ে গেছে। প্রায়ই শিক্ষার্থীদের শরীরে খসে পড়ছে পলেস্তারা। ভবনে নামমাত্র আছে দরজা-জানালা। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পড়ে পানি।

এই চিত্র পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের ১২১ নং দক্ষিণ পশ্চিম কলাগাছীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। সেখানে এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। এতে ক্রমশ কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।

জানা গেছে, ১৯৯২ সালে ১২১ নং দক্ষিণ পশ্চিম কলাগাছীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৭/৯৮ সালে বিদ্যালয়টিতে একটি একতলা পাকা ভবন নির্মিত হয়। সেখানে ৩টি কক্ষ রয়েছে। বর্তমানে মোট ৭২ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। নির্মাণের পরে কোনো সংস্কার না করায় ২০১২ সালে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়।

শুধু এই বিদ্যালয়টিই নয় পটুয়াখালীতে এরকম মোট ৪০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান। এসব ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঝালকাঠিতে মোট ১২ হাজার ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। যার ৪০২টি বিদ্যালয়কে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ৮১টি, বাউফলে ৮২টি, গলাচিপায় ২৮টি, কলাপাড়ায় ৬২টি, দশমিনায় ৫৮টি, মির্জাগঞ্জে ৪৮টি, দুমকিতে ২৩ টি ও রাঙ্গাবালী উপজেলায় ২১ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ফেরদৌসী ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়েম জানায়, ক্লাসে ছাদ থেকে পলেস্তারা খুলে পড়ার ভয় সব সময় তাদের তাড়া করে বেড়ায়। দীর্ঘ সময়েও ভবন সংস্কার না হওয়ায় সব শিক্ষার্থীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সামিনা মুন্নী আক্তার বলেন, টিনশেডের রুমে একটি ক্লাস হয়। তাই সাত বছর আগে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা হলেও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাতেই ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তারাও ঝুঁকিতে আছেন। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানে ঠিকমতো পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা কষ্টকর হয়ে পড়ছে।

প্রধান শিক্ষক শাহাবুদ্দিন বলেন, মাঝেমধ্যেই ভবনের ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে দ্রুত একটি ভবন নির্মাণ জরুরি।

পটুয়াখালী সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার উম্মে সালমা লাইজু বলেন, সরজমিনে গিয়ে বিদ্যালয়গুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। ভবনগুলোর তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত ও নির্মাণ কাজ শুরু হবে।