ভাদ্র মাসের প্রখর রোদ উপেক্ষা করে মাছ শিকারের ব্যাস্ত ওরা

ওমর আলী মোল্যা, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ ভাদ্র মাস প্রখর রোদ ভেপসা গরম এখনো গাজীপুরের কালীগঞ্জে নদী-নালা, খাল-বিল পানিতে টইটুম্বুর। এসব জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নিয়েছে বিভিন্ন রকমের দেশীয় মাছ।প্রখোর রোদ উপেক্ষা করে আর সেইগুলো শিকার করতে এলাকার ছেলে-বুড়োরা মেতে উঠেছেন। সকাল থেকে সন্ধ‌্যা পর্যন্ত এই এলাকায় চলে মাছ শিকারে ব্যাস্ততা।

সকালে কালীগঞ্জ পৌর এলাকার বালীগাঁও গ্রামের শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে ও উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের বেতুয়ারটেক বিল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই বিভিন্ন বয়সের মাছ শিকারিরা জড়ো হচ্ছেন স্থানীয় নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুরে। তাদের কারো হাতে ছিল ছিপ, আবার কারো হাতে মাছের খাবার। এই দিয়ে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে তাদের মাছ শিকার। তাদের বরশিতে ধরা পরে রুই, কাতল, ব্রিগেট, মৃগেল, তেলাপিয়া,কালবাউশ,পাংগাস, বোয়াল, আইরসহ নানা দেশি মাছ।

বেতুয়ারটেক গ্রামের কৃষক হরে কৃষ্ণ, স্বপন ও শংকর প্রতিদিনই বিলে ছিপ দিয়ে দেশি মাছ শিকার করেন। তারা জানান, এখন আর আগের মতো বিলে দেশি মাছ পাওয়া যায় না। তাই যে আশা নিয়ে তারা মাছ শিকারে এসেছিলেন, তা পূরণ হয়নি।

বেতুয়ারটেক গ্রামের চা দোকানি আশু বলেন, ‘সকাল থেকে বিলের ধারে বসে আছি। ১০/১২টা ছোট কৈ আর ১৫/২০ টা পুঁটি মাছ ধরা পড়েছে। তবে আশে-পাশে কয়েকজন দেশি শিং ও মাগুর পেলেও সেগুলোর সাইজ খুব ছোট।’

স্কুল শিক্ষার্থী শিশু আলভী জানায়, এখন তার স্কুল বন্ধ। তাই সকাল থেকে দুপুর আবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিদিনই সে মাছ ধরে। মাছ ধরতে তার ভালো লাগে।

জাংগালীয়া গ্রামের করিম শেক বলেন, আমি একজন কৃষক। বর্ষ মৌসুমে আমার জমিগুলো পানিতে ডুবে যায়। তাই বেকার বসে না থেকে মাছ ধরে সময় কাটাই।মাছ ধরা আমার শখ।বিগত দিন গুলোতে এই মৌসুমে অনেক মাছ ধরতে পারলে ও এ বছর খুব একটা মাছ ধরতে পারছি না।

কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোসা. সাদিয়া রহমান জানান, বর্ষায় এলাকার নদী-নালা, খাল-বিল পানিতে ভরে গেছে। এতে জলাশয়গুলোতে দেশি মাছ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই মাছ এখানকার মানুষের আমিষের বড় উৎস। স্থানীয়রা নির্বিঘ্নে এই মাছ শিকার করে। পোনা আর মা মাছও শিকারিদের হাত থেকে রেহায় পায় না। এই মাছগুলো যদি আরও কিছুদিন জলাশয়ে থাকে তো মাছের সংখ‌্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই এই বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।