জামালপুরে বন্যায় ২০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

প্রতিনিধি, জামালপুর: এবারের বন্যায় জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ২শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ১৯৮৮ সালের বন্যার চেয়ে বেশি বন্যার কারণে উপজেলা একটি পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ব্যাপক ধ্বংসলীলায় পরিনিত হয়। বন্যায় ভেঙেছে পাঁকারাস্তা, বাঁধ, কাঁচা সংযোগ সড়ক, ঘরবাড়ি, ব্রিজ কালভার্ট।

ক্ষতি হয়েছে উঠতি ফসল পাট, আউস, বীজতলা, সবজি আর ফলজবাগান, পুকুরসহ অসংখ্য বৃক্ষরাজি। গ্রামের পর গ্রামে কৃষকের স্বপ্নের সাজানো গৃহস্থলী তছনছ করে দিয়েছে এই বন্যা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গত ১০ বছরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় যে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছিলো তা একেবারে তছনছ হয়ে গেছে।

এই এলাকার সংসদ সদস্য সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এর স্বপ্নে লালিত উন্নয়নগুলি বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মাদারগঞ্জ-জামালপুর সড়কের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিতসহ উপজেলার ৩শ ৫০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঐ সড়কে বড় বড়গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ছাড়া মাদারগঞ্জ-বগুড়ার সারিয়াকান্দি মহা সড়কের কামারিয়া নামকস্থানে একটি বৃহৎ ব্রিজের এপ্রোজ সড়ক ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছির্ণ হয়ে পড়েছে। ভেঙ্গে গেছে আরো ৩৫টি ব্রিজ ও এপ্রোজ। এ ছাড়া মাদারগঞ্জ উপজেলার সাথে সকল ইউনিয়ন গ্রোথ সেন্টারের যোগাযোগ একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহিদ হাসান জানান, মাদারগঞ্জ উপজেলার সাম্প্রতিক বন্যায় মাদারগঞ্জ উপজেলার প্রত্যক্ষ প্ররোক্ষ ভাবে ২ লাখ ৬০ লোক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভেঙ্গে গেছে ৫০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ১ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ১হাজার ৮শ ৪৫ হেক্টর জমির ফসল, অসংখ্য বাড়িঘর। উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, এলজিইডির ২শ কিলো পাঁকা রাস্তা ও ৮টি ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় ২শ কোটি টাকা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইমলাম জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় মাদারগঞ্জ উপজেলায় সংসদ সদস্যের নির্দেশে ব্যাপক ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মাদারগঞ্জ মেলান্দহের সংসদ সদস্য সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমিন্ত্রী মির্জা আজম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাঘাট, ব্রিজকালভার্ট ও অবকাঠামো দ্রুত সংস্কার করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় আগামী ফসল না আসা পর্যন্ত ত্রাণসহ বিভিন্ন সাহায্য অব্যাহত থাকবে। তিনি জুরুরী ভিত্তিতে রাস্তাঘাট সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।