জগন্নাথপুরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৭ লাখ টাকা লুট, গ্রেপ্তার ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রেমের ফাঁদে ফেলে কম টাকায় ডলার বিক্রির লোভ দেখিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে সাত লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায়। প্রতারণার এমন অভিযোগে প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার ( ২৩ নবেম্বর) গ্রেপ্তারদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার দিনে জগন্নাথপুর এবং সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- জগন্নাথপুর পৌরসভার ইসহাকপুর এলাকার মকতুল মিয়ার মেয়ে সমলা বেগম (৪০), মৃত আমির উদ্দিনের স্ত্রীর নেছাফুল বেগম (৬০), কেশবপুর এলাকার মৃত ময়না মিয়ার ছেলে রাজু মিয়া (৫০), নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার ফেরীরচর গ্রামের মৃত রহিম উদ্দিনের ছেলে আবুল মিয়া (৫০) ও কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ডোহাজোড়া গ্রামের বাক্কার মিয়ার স্ত্রী আনারকলি (৩০)।

এ ঘটনায় গত বুধবার সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কচুয়া গ্রামের মৃত মাওলানা আব্দুল গফুরের ছেলে ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম (৪৪) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৬ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে জগন্নাথপুর থানায় একটি মামলা করেন।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ মাস আগে রং নম্বরে ফোন আলাপের মাধ্যমে সমলা বেগম তার নাম বদলে শুকরিয়া বেগম পরিচয়ে ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। একপর্যায়ে সমলা বেগম জাহিদুলকে জানায় তার এক বান্ধবীর কাছে ১০০ ডলারের ২৯০টি নোট আছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০ লাখ টাকা। ওই ডলার ব্যাংকে গিয়ে ভাঙ্গানোর জন্য জাহিদুলের সহযোগিতা চায় সমলা বেগম। তখন জাহিদুল ওই ডলার তার কাছে বিক্রি করার প্রস্তাব দেন। পরে তার কাছে সাড়ে ৭ লাখ টাকায় ডলার বিক্রি করতে রাজি হন সমলা বেগম।

গত এক মাস আগে সমলা বেগমের কথায় জাহিদুল ইসলাম জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর (হাড়িকোনা) গ্রামে আসেন। সেই সময় অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি তাকে ১০০ ডলারের ২৯০টি নোট দেখিয়ে বলেন যদি সে সাড়ে ৭ লাখ টাকা দেন তাহলে তারা ওই সব ডলার দিয়ে দিবেন।

ভুক্তভোগী জাহিদুল মামলায় উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন গত ১৩ নভেম্বর তিনি সাড়ে ৭ লাখ টাকা নিয়ে ওই ডলার কেনার জন্য জগন্নাথপুর পৌরসভার হবিবনগর এলাকায় নেছাফুল বেগমের বাড়িতে আসেন। সেখানে সমলা বেগমসহ অজ্ঞাত ৪ জন উপস্থিত ছিলেন। এ সময় চায়ের সঙ্গের ঘুমের বা নেশা জাতীয় ওষুধ মিশিয়ে তাকে খাওয়ানো হয়। পরে তার কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা নিয়ে ভয়ভীতি ও ব্ল্যাকমেইল করেন ওই প্রতারক চক্র।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, কম দামে ডলার বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে বাইরে ডলার আর ভেতরে সাদা কাগজের বান্ডিল দিয়ে সাড়ে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আন্তঃজেলা প্রতারক চক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় নগদ ৩০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইলসহ বেশকিছু আলামত জব্দ করা হয়।