আদি বুড়িগঙ্গা নদীর ৩৫০ একর বেদখল!

স্টাফ রিপোর্টার: শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০১৯ সকাল ১০:৩০ মিনিটে আদী বুড়িগঙ্গা নদী পুণরদ্ধারের দাবিতে “নদী রক্ষা জোটের সদস্য ১৩টি নদী ও পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশ গ্রহণে আদি বুড়িগঙ্গা নদীর কামরাঙ্গীরচর লোহার পুল থেকে হাজারীবাগ পর্যন্ত নদীর বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।

‘নদী রক্ষা জোট’ আহবায়ক ও ‘নোঙর’ সভাপতি, সুমন শামস পর্যবেক্ষণ কর্মসূচীর শেষে বক্তব্যে বলেন, “আদি বুড়িগঙ্গা নদীর বুকে একাধিক সরকারী প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে কুড়ারঘাটের, ওপাড়ে নদীর জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে একটি সরকারি হাসপাতাল। পশ্চিম রসুলপুরে নদীর বুকের উপর গড়ে তোলা হয়েছে একটি সরকারী বিদ্যুৎ ষ্টেশন। এই ধরণের অসংখ্য সরকারি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে আদি বুড়িগঙ্গা নদীর বুকে।

নব্বই দশকের পরেও আদি বুড়িগঙ্গা নদীতে জোয়ার-ভাটার প্রবাহ ছিলো। আদালতের আইন অমান্য করে এখনও দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নদীখেকোরা। আদি চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন কোম্পানির নামে সাইনবোর্ড ঝুলছে।গত দুই যুগ ধরে চলতে থাকা আদি বুড়িগঙ্গা নদীর জায়গা দখলের কবলে পড়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, লালবাগ, হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া রাজধানীর পশ্চিমের বুড়িগঙ্গার এই আদি চ্যানেলের প্রায় ৩৫০ একর বেদখল হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, সিটি কপোর্রেশনের ময়লার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে আজ আদি বুড়িগঙ্গা। ম্যাটাডোর গ্রæপ, পান্না গ্রæপ, সিকাদার হাসপাতালসহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান আদী বুড়িগঙ্গা নদীর অস্তিত্ব বিলীন করে তাদের স্থাপনা গড়ে তুলেছে।

আমরা চাই সেনা বাহিনীর সহযোগিতায় এ নদী দখলমুক্ত করে নদীটিকে ঢাকার চারপাশের বৃত্তাকার নৌপথের সাথে যুক্ত করে আদি বুড়িগঙ্গা নদীতে ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা হোক। বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলে রিকশার গ্যারেজ থেকে শুরু করে টেম্পুস্ট্যান্ড, অবৈধ মার্কেট, ট্রাকস্ট্যান্ড, বাড়িঘর, শিল্প-কারখানা, অ্যামিউজম্যান্ট পার্ক এমনকি মসজিদ পর্যন্ত গড়ে উঠেছে। বছরের পর বছর এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠলেও সেসব দখল প্রতিরোধে দায়িত্ব প্রাপ্ত সংস্থাগুলো নির্বিকার ভূমিকা পালন করে চলেছে।

বুড়িগঙ্গা বাচাও আন্দোলনের আহবায়ক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন, কামরাঙ্গীরচর ২ নম্বর পূর্ব রসুলপুর পাকা ব্রিজ ঘেঁষে বালুমাটি দিয়ে নদী ভরাট করে দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। এ ব্রিজের ১শ’ গজ দূরে নবাবগঞ্জ সেকশন ও কামরাঙ্গীরচর রনি মার্কেট সংযোগস্থলে নির্মিত পাকা ব্রিজ ঘেঁষে বিশাল অংশ দখল করে মার্কেট ও বসতঘর নির্মাণ করে ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। এ আদি চ্যানেলের বুকের ওপর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বক্সকালভার্ট নির্মাণ করায় পশ্চিমের নদীর বুক দখলের মহোৎসব চলছে।