বঙ্গবন্ধুর দেয়া মুজিব কোট নিয়ে এখনও কাঁদেন আজিজ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : সংগ্রামের চার-পাঁচ বছর আগের কথা; ডাকলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কাছে গেলাম। বললেন- এই কোটটা তুমি নিয়ে যাও। কথাগুলো বলতে বলতেই বুধবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মো. আবদুল আজিজ কাজী।
তিনি বলেন, এই কাল আগস্টই কেড়ে নিল বঙ্গবন্ধুকে। এ মাস এলেই নিজেকে ঠিক রাখতে পারি না। বঙ্গবন্ধুর দেয়া মুজিব কোটে হাত বুলাই আর কাঁদি। বঙ্গবন্ধুর জন্য নামাজ পড়ে মোনাজাত করি।
তিনি উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়নের মৃত হাজী আলী হোসেনের ছেলে। পাঁচ মেয়ে সন্তানের জনক। আবদুল আজিজ বয়সের ভারে এখন ন্যুব্জ। সোজা হয়ে দাঁড়াতেও পারেন না। অসুস্থতায় জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছেন।
তিনি জানান, মুজিব ভাই জনসভা করতে নেত্রকোনা যাবেন। গৌরীপুর জংশনে আসার পর এমসিএ হাতেম আলী মিয়াসহ আমরাও ওই ট্রেনে উঠলাম। সেটি স্বাধীনতার চার-পাঁচ বছর আগের কথা।
সভাশেষে আবারও ট্রেনে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গৌরীপুর জংশনে হাতেম ভাই ও অন্যরা নেমে গেলেন। ঢাকায় কাজ ছিল তাই ট্রেনেই মাগনা (ফ্রি) যেতে পারব, তাই আর নামলাম না। ঢাকায় পৌঁছলাম গভীর রাতে।
বঙ্গবন্ধু সবাইকে বাসায় নিয়ে গেলেন। রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে গেলাম। নাস্তা শেষে যখন চলে আসব বললাম। আমাকে ডাক দিলেন। কাছে গেলাম। একটি মুজিব কোট দিয়ে বললেন, এটি তুমি নিয়ে যাও। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রিয় জিল্লুর রহমান ভাই। এ বর্ণনা দিতে দিতেই বারবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন আবদুল আজিজ।
এ প্রসঙ্গে লামাপাড়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. কলিম উদ্দিন বলেন, আজিজ ভাইকে বঙ্গবন্ধু যে কোট দিয়ে ছিল। সেই সময় এলেই পুরো গ্রামবাসীকে আনন্দ-উল্লাস করে তার জানান দিয়েছিলেন।
দৌলতপুরের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মো. হাবিবুর রহমান (৭৮) জানান, এই মুজিব কোট দেখে তখন গৌরীপুরে অনেকে মুজিব কোট তৈরি করেন।
মেসিডেঙ্গী গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে মো. আবুল কাসেম বলেন, কাজী ভাই বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসার জন্য আজও সেই স্মৃতি ধরে রেখেছেন।
তবে মইলাকান্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এ ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। বঙ্গবন্ধু মুজিব কোট দিয়েছেন তা শুনিনি। তিনিও আওয়ামী লীগের কোনো কার্যক্রমে আসেন না।
মো. আবদুল আজিজ কাজী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধরে রেখেছি। তিনি মানুষকে কীভাবে আপন করেছিলেন, তার কাছে যারা ছিলেন, তারাই উপলব্ধি করতে পারেন। মনে হলে শুধু চোখে পানি আসে। আল্লাহ যেন উনাকে বেহেশত দান করেন।