ষষ্ঠ ধাপ: ভোট চলছে ২১৮ ইউপিতে, ভোট শুরুর আগেই মারা গেলেন প্রার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোটগ্রহণ শুরুর ১০ ঘণ্টা বাকি থাকতে মৃত্যুবরণ করলেন মো. আনিছুর রহমান

হবিগঞ্জে ভোটগ্রহণ শুরুর ১০ ঘণ্টা বাকি থাকতে মৃত্যুবরণ করেছেন এক প্রার্থী। মো. আনিছুর রহমান নামে ওই প্রার্থী জেলার বাহুবল উপজেলার দুই নম্বর পুটিজুরী ইউনিয়নের তিন নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে সদস্য পদপ্রার্থী ছিলেন। আজ সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় তার নির্বাচনী এলাকায় শুরু হচ্ছে ভোট গ্রহণ। কিন্তু ভোটগ্রহণ শুরুর ১০ ঘণ্টা বাকি থাকতে মৃত্যুবরণ করলেন তিনি।

গতকাল রোববার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সোয়া ১০টার দিকে উপজেলার রাজসুরত গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান।

আনিছুর রহমান চৌধুরী কামাল বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীক নিয়ে তিন নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত জটিলতা ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। এ ওয়ার্ডের সাবেক নির্বাচিত সদস্যও ছিলেন তিনি। আনিছুর রহমান চৌধুরী কামাল মৃত্যুকালে স্ত্রী, পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলে সন্তান রেখে গেছেন।

মৃত প্রার্থীর চাচাতো ভাই সাজ্জাদুর রহমান সাজু জানান, রবিবার আনিছুর রহমান চৌধুরীকে অসুস্থ অবস্থায় বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১০টা ১০ মিনিটে তিনি মারা গেছেন। সোমবার দুপুর আড়াইটায় তার নামাজে জানাজার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ থেকে জানানো হয়, আনিছুর রহমান চৌধুরীকে কিডনিজনিত সমস্যা নিয়ে সকালে সেখানে আনা হয়েছিল। পরে চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান খান বলেন, প্রার্থীর মৃত্যুর বিষয়টি সকালে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানাবে তার পরিবার। এরপর ইসি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ‎

ষষ্ঠ ধাপ: ভোট চলছে ২১৮ ইউপিতে

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ষষ্ঠ ধাপে দেশের ২১৮টি ইউপিতে ভোট চলছে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, সোমবার সকাল ৮টায় এসব ইউনিয়নে ভোটগগ্রহণ শুরু হয়েছে, একটানা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

৪১ লাখ ৮২ হাজার ২৬৩ জন ভোটারের এসব ইউপির মধ্যে ২১৬টিতে ইভিএমে ভোট হচ্ছে; বাকি দুটিতে ভোটগ্রহণ হচ্ছে ব্যালট পেপারে।

ষষ্ঠ ধাপের এ নির্বাচনে গোলযোগ, সহিংসতা ও অনিয়ম ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের যুগ্মসচিব ও জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, “ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ২২ জন করে নিরাপত্তা সদস্য রয়েছে। প্রতি ইউনিয়নে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব-এর মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স আছে। উপকূলীয় এলাকায় কোস্টগার্ডও নিয়োজিত রয়েছে। বিচারিক ও নির্বাহী হাকিম আছে স্থানীয় প্রশাসনের চাহিদামত।”

এবার ইউনিয়ন পরিষদে প্রথম পাঁচ ধাপের ভোটে বেশ কিছু এলাকায় সহিংসতা ও গোলযোগ হয়েছে। ভোটের আগে, ভোটের দিন ও পরে সহিংসতায় অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানির তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে।

সিইসি হুদার অতৃপ্তি কেবল সহিংসতায়

ষষ্ঠ ধাপে ২১৯ ইউপিতে ভোট ৩১ জানুয়ারি

ইউপি নির্বাচন: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান আরও ১২ জন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাও বলেছেন, নিজেদের মেয়াদে স্থানীয় সরকারের এই ভোটে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার অতৃপ্তি রয়েছে তার। তবে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা যদি সংযত না হন, তাহলে ইসির একার পক্ষে গোলযোগ ঠেকানো সম্ভব না বলেও তিনি মনে করেন।

ভোট তথ্য
>> ২২ জেলার ৪২ উপজেলায় ভোট হচ্ছে ২১৮টি ইউপিতে।

>> ২১৬টি ইউপির ভোট ইভিএমে, বাকি দুটিতে ব্যালট পেপারে।

>> সব মিলিয়ে ২১৮৬টি ভোটকেন্দ্রের ১৩ হাজার ৩০৫টি ভোটকক্ষে হবে ভোটগ্রহণ।

>> এসব ইউপির ভোটার সংখ্যা ৪১ লাখ ৮২ হাজার ২৬৩ জন। তাদের মধ্যে ২১ লাখ ১৪ হাজার ৭২০ জন পুরুষ; ২০ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ জন পুরুষ এবং ৬ জন তৃতীয় লিঙ্গের

>> তিন পদে প্রার্থী মোট ১১ হাজার ৬০৪ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১ হাজার ১৯৯ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ২ হাজার ৫৫৯ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৭ হাজার ৮৪৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন।

>> এ ধাপে চেয়ারম্যান পদে ১২ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৩২ জন ও সাধারণ সদস্য ১০০ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে।

দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ ধাপে অন্তত পৌনে চার হাজার পরিষদের ভোট হয়েছে। ষষ্ঠ ধাপে ২১৮টির ভোট হচ্ছে।

আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সপ্তম ধাপে ১৩৮ ইউপির ভোট রয়েছে। বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষের আগে স্থানীয় সরকারের শেষ নির্বাচনে আরও ৮ ইউপির ভোট হবে ১০ ফেব্রুয়ারি।