ফিলিস্তিনের পথে বাংলাদেশিদের পাঠানো বৃহত্তম ত্রাণবহর

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘বাংলাদেশ ফিলিস্তিন মৈত্রী সংস্থা’ ও মিশরে বাংলাদেশি চ্যারাটি ফান্ড ‘ওয়ার্ল্ড ওয়ান উম্মাহ ফাউন্ডেশন’র ব্যানার‌ টানানো ৩৫টি লরিতে ৫ কোটি টাকার‌ও অধিক, অন্তত ৭০০ টন জরুরি ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১১৫টি লরি ভর্তি একটি ত্রাণবহর মিশর থেকে ফিলিস্তিনের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

সোমবার বিকেলে মিশর-ফিলিস্তিন সীমান্ত রাফার উদ্দেশে বহরটি কায়রো‌ ত্যাগ করে।‌ বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুদানে ভর্তি এসব লরির মধ্যে রয়েছে জরুরি ওষুধ, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি, তাবুসহ নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যাবহারিক জিনিসপত্র। এটি ফিলিস্তিনে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের পাঠানো এ যাবতকালের সর্ববৃহৎ ত্রাণবহর।

এই সব অনুদান আল আজহারে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ, স্বেচ্ছাশ্রম এবং তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের একাধিক বেসরকারি সেবা সংস্থা, মিশরস্থ বাংলাদেশি ছাত্র সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল।

ওয়ার্ল্ড ওয়ান উম্মাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হুজাইফা খান জানান, এবারের সপ্তম‌ দফায় ওয়ার্ল্ড ওয়ান উম্মাহ ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে ২২টি লরি গাজার‌ উদ্দেশে র‌ওনা‌ হয়েছে। এর মধ্যে ফাউন্ডেশনটির নিজস্ব ৯টি লরির সঙ্গে আরও ১১টি সংস্থার‌ ১৩টি‌ লরি‌ গাজার‌ উদ্দেশে র‌ওনা‌ হয়েছে‌।

ত্রাণবহরের মধ্যে রয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশের চিকিৎসক দম্পতির একটি ওষুধের লরি, মাকতাবাতুল আশরাফ, ইলমান নাফিয়া, হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) সেবা ফাউন্ডেশন, আস সিরাজ ফাউন্ডেশন, আহলে হাদীস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, অঙ্গিকার ফাউন্ডেশন, ক্রিয়েটিভ ইনস্টিটিউট, উত্তরা গাউসুল আজম জামে মসজিদ, সিম্পল রিজন (ব্রিটেন), দারুল জান্নাহ জামে মসজিদ (ব্রিটেন)।

বাংলাদেশ ফিলিস্তিন-মৈত্রী সংস্থার সভাপতি, বাংলাদেশি ছাত্র আব্দুল আজিজ তরফদার বলেন, ‘ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর থেকে মিশরের গ্রান্ড ইমাম শাইখুল আযহার ড. আহমাদ আল তাইয়িবের তত্ত্বাবধানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার ৮৪০ টন ত্রাণসামগ্রী গাজায় পৌঁছেছে। সেইসঙ্গে প্রথম থেকেই আমরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে নিয়মিত আজহারের মাধ্যমে সরাসরি গাজায় সহায়তা পাঠিয়ে আসছি।’

আব্দুল আজিজ তরফদার যাদের অক্লান্ত শ্রম ও ভালবাসায় আজকের লাল সবুজের এই বিশাল লরির বহর প্রস্তুত হয়েছে তাদেরকে ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্যাতিত মানুষদের পাশে ছিলাম এবং যুদ্ধ পরবর্তী গাজা পুর্ননির্মাণেও তাদের পাশে থাকব। দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণ এই নীরব আন্দোলনে আমাদের পাশে থাকবে বলে মনে করি।’

আল আজহার বাইতুয যাকাত অ্যান্ড সাদাকাত হাউস জানায়, নির্যাতিত অসহায় গাজাবাসীর জন্য আজ কায়রো থেকে ১ হাজার ৮৪০ টন জরুরি খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধ নিয়ে ১১৫ টি লরি গাজার‌ উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়েছে। যার সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে ৩৫টি লরি ভর্তি জরুরি খাদ্য ও ওষুধসমগ্রী যুক্ত রয়েছে।

সংস্থাটির সেক্রেটারি মেজর জেনারেল (অব.) আমর লুতফি সংস্থাটির এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশি ছাত্রদের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রসংশা করেন।