যে কারণে ‘এক্সপ্রেসওয়েতে’ বাস-মিনিবাস উঠছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (০২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা অংশে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন। তিনি প্রথম টোলে দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পার হন। রোববার (০৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয় এক্সপ্রেসওয়েটি।

অনুমতি থাকা সত্ত্বেও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাস-মিনিবাস চলাচল করছে না। এই প্রশ্নটা অনেকের মনেই ঘুরপাক খাচ্ছে, কেন হাইস্পিড এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাস ও মিনিবাস উঠছে না?

এ বিষয়ে জানতে বেশ কয়েকজন বাস ড্রাইভার ও কন্ট্রাক্টরের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ওপর দিয়ে গেলে যাত্রী সংকটে পরতে হবে তাদের। আজিমপুর থেকে উত্তরা চলাচল করে ‘বিকাশ’ বাস। নাম না প্রকাশের শর্তে এ বাসের এক ড্রাইভার বলেন, আমাদের বাসের অনেক যাত্রী বনানী, মহাখালী নামে। কিন্তু ওপর দিয়ে গেলে ওই যাত্রীগুলো আমাদের বাসে উঠবে না। ফলে আমরা যাত্রী সংকটে পরব।

গাজীপুর থেকে গুলিস্তান চলাচল করে ‘গাজীপুর পরিবহন’ বাস। এ বাসের কয়েকজন ড্রাইভার ও কন্ট্রাক্টরও একই কথা বলেন। তারা বলছেন, ওপর দিয়ে গেলে দ্রুত যাওয়া যাবে কিন্তু অনেক যাত্রী হারাতে হবে। আবার ৩ থেকে ৪ কিলোমিটারের জন্য ১৬০ টাকা টোল দিতে হবে। ফলে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিতে হবে। এ ছাড়া ওপর দিয়ে গেলে খিলক্ষেতসহ মাঝপথের যাত্রী তোলা যাবে না। উপর দিয়ে পথচারীদের হাঁটাচলা নিষেধ। এ কারণে বাস-মিনিবাস ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ দিয়ে চললে পর্যাপ্ত যাত্রী পাওয়া যাবে না।

এই উড়ালসড়ক দিয়ে গাড়ি চললে পর্যাপ্ত যাত্রী পাওয়া যাবে না বলেই ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে’ বাস-মিনিবাস উঠছে না। এমনটিই বলেছেন বাস-মিনিবাস কোম্পানির মালিকেরা।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম জানান, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সোমবার (০৪ সেপ্টেম্বর) থেকে বিআরটিসি’র বাস চালানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তা আপাতত চলছে না। এ পথে বাস চালাতে আরও সময় নেবে সরকারি এই সংস্থাটি।

দ্রুতগতির এই ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’র মোট দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কিলোমিটার। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছের কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত চালু হওয়া অংশের দূরত্ব সাড়ে ১১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৫টি স্থানে ওঠানামা করার ব্যবস্থা (র‌্যাম্প) আছে।

বিমানবন্দর এলাকায় দুটি, কুড়িলে তিনটি, বনানীতে চারটি, মহাখালীতে তিনটি, বিজয় সরণিতে দুটি ও ফার্মগেট এলাকায় একটি ওঠানামার জায়গা আছে। তবে মহাখালী ও বনানী ১১ নম্বর দিয়ে নামার পথ দুটি পরে চালু হবে।

এই এক্সপ্রেসওয়েতে বর্তমানে ৮ ধরনের যানবাহন চলাচলের অনুমতি রয়েছে। এগুলো মধ্যে রয়েছে বাস, মিনিবাস, কার (সেডান), মাইক্রোবাস, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল (এসইউভি, যা জিপ নামে পরিচিত), কয়েক ধরনের পণ্যবাহী ট্রাক ও পিকআপ। মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার যান ও বাইসাইকেল চলাচলের অনুমতি নেই। পথচারীদেরও চলাচলের অনুমতি নেই।