যশোরের আহসান মিশন শেল্টার হোমে ভাঙচুর

উৎপল ঘোষ, (ক্রাইম রিপোর্টার) যশোরঃ ঢাকা আহছানিয়া মিশনের যশোরস্থ শেল্টার হোমে থাকা মেয়েরা আজ দুপুরে সেখানে ভাঙচুর করেছে। গেল রাতে শেল্টারেহোমে ভারত ফেরত আরও চার মেয়ে সেখানে পৌঁছায়। এতে তারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।

তাদের দাবি, কোয়ারেন্টিন ছাড়া ওই তিনজনকে সরাসরি শেল্টার হোমে নিয়ে আসায় তারা করোনা ঝুঁকিতে পড়বে। গতকাল রাতে যে চারজনকে নতুন আনা হয়েছে; তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়নি। এখানে যারা থাকে তারা দরিদ্র পরিবারের সন্তান, দেখার কেউনেই। যদি হোমে করোনা ছড়িয়ে যায়, তবে মেয়েদের কী হবে। তারা চিকিৎসা পাবে না। সেকারণে বলা হয়েছে, হয় নতুনদের সরিয়ে অন্য স্থানে নিয়ে যাক, অথবা পুরনোদের সরিয়ে নেওয়া হোক।
বিক্ষুব্ধ মেয়েরা হোমের জানালা, খাট, আলনা ইত্যাদি ভাঙচুর করে।

জানতে চাইলে শেল্টার হোমের ব্যবস্থাপক শাহনাজ পারভীন বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত নয়টার পরে চার মেয়েকে শেল্টার হোমে দিয়ে যায় রাইটস যশোর। মেয়েদের ভারত থেকে রিপ্যাট্রিয়েশন করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন কোয়ারেন্টিন শেষ করা এবং অপর তিনজন গতকাল দেশে ফিরেছেন। বিষয়টি হোমে থাকা অন্য মেয়েদের ভীত সন্ত্রস্ত করে তোলে; এরপর তারা ওই তিনজনকে অন্যত্র পাঠাতে কিংবা তাদের অন্য স্থানে রাখার দাবি জানায় এবং একপর্যায়ে আজ শুক্রবার দুপুরে হোমে ভাঙচুর চালায়।
কোয়ারেন্টিন ছাড়া তাদের কেন হোমে রাখলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে শাহনাজ পারভীন বলেন, রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেছেন, তাদের নেগেটিভ রিপোর্ট আছে। তাছাড়া জেলা প্রশাসনের অনুমতিও রয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, চার মেয়ের মধ্যে একজন ইতোমধ্যে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন সম্পন্ন করেছে। অন্যদের রিপোর্ট নেগেটিভ।

এ ব্যাপারে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান বলেন, ‘সেন্টারে যারা রয়েছেন তারা সকলেই তো ভিক্টিম। যারা গতরাতে এসেছেন তারাও ভিক্টিম। রাইটস যশোরের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা সেখানে নতুন তিনজনকে আলাদা থাকার ব্যবস্থাসাপেক্ষে রাখতে বলি।’
‘ঘটনা শুনে সেখানে আমাদের প্রতিনিধি পাঠিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, গতকাল যারা হোমে ছিলেন, তাদের মধ্যে তিন জনকে গাজীর দরগাহে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে।

সন্ধ্যায় বিনয় মল্লিক জানান, তিন মেয়েকে গাজীর দরগাহে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্তরা ক্ষমা চেয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত।