যমুনায় অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণ কার্যক্রমের আলোচনা সভা

আল-আমিন শেখ, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইল ভূঞাপুরে যমুনা নদীকেন্দ্রিক দুর্গম চর অঞ্চলে অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণ ও নৌপথের বাণিজ্য সম্ভাবনা ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে এক মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

বুধবার (২৩ জুন) ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদে সভা কক্ষে যমুনা পাড়ে অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণ কার্যক্রমে অবিহতকরণ ও এক আলোচনা সভায় যমুনার ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া ভূমিহীন বিভিন্ন শ্রমজীবী পেশার মানুষদের কথা তুলে ধরা হয়েছে। যমুনা পাড়ে অর্থনৈতিক করিডোর স্থাপন করা হলে এসব দুঃস্থ, অসহায় ও দারিদ্র্যতার সীমার নিচে বসবাস করা মানুষদের ভাগ্যের চাকার পরিবর্তন ঘটবে বলে জানিয়েছে বিশিষ্ট জনেরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন গোবিন্দাসী ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অত্র ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ইকরামুদ্দীন তারা (মৃধা), সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম (আমিন), মেম্বার শাহিদা খাতুন, অত্র পরিষদের সচিব মশিউর রহমান, কম্পিউটার কাম-অপারেটর আরিফুল ইসলাম আরিফ, সংবাদকর্মীবৃন্দ ও প্রমুখ।

যমুনাকে ঘিরে রয়েছে শত বছরের পরিকল্পনা ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা । এ পরিকল্পনাকে কাজে লাগিয়ে যদি যমুনা অর্থনৈতিক করিডোর গড়ে তোলা যায়, তাহলে এ অঞ্চলের নদী ভাঙ্গনকবলিত ও দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের জন্য তা নতুন সম্ভাবনার দাঁড় উন্মোচিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্বব্যাপী শিল্পায়ন ও নগরায়ণ প্রসারিত হয়েছে নদীকে কেন্দ্র করেই। দেশেও এক সময় বৃহদায়তনের নৌ-পরিবহন খাতের গুরুত্বপূর্ণ এক রুট গড়ে উঠেছিল যমুনা গোবিন্দাসী নৌ ফেরি ঘাট ঘিরেই। অথচ সঠিক পরিকল্পনা এবং বিজ্ঞানভিত্তিক ও দক্ষ নদী ব্যবস্থাপনার অভাবে দেশের এ গুরুত্বপূর্ণ নদীকে ঘিরে জেগে ওঠা অর্থনৈতিক সম্ভাবনার অপমৃত্যু হয়েছে অনেক আগেই। এখনো নদীর ভাঙ্গনে জমি বিলীন হওয়া ছাড়াও গৃহহীন হচ্ছে হাজারও মানুষ। প্রায় প্রতিদিনই ভূমিহীন হচ্ছে সাধারণ শ্রমজীবী বিভিন্ন পেশার মানুষ। দারিদ্র্যতা যেন কোন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না নদীর পাড় ঘেঁষে বসবাসরত মানুষদের।

এ অঞ্চলের বাণিজ্য প্রসার ও বৃদ্ধিতে নদীপথ হতে পারে সবচেয়ে সম্ভাবনাময়। জমি পুনরুদ্ধার, সেচের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক জোন, নদীভিত্তিক পণ্য পরিবহনের উপযুক্ত হতে পারে যমুনা অর্থনৈতিক করিডোর। পাশাপাশি নদীটিকে ঘিরে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে বাণিজ্য ও শিল্পায়নেরও সম্ভাবনা রয়েছে অনেক।

এ সময় অত্র ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম (আমিন) বলেন, যমুনা নদীকেন্দ্রীক এ অঞ্চলের বসবাসরত বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবী মানুষদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণ খুবই জরুরি। কেননা এ অঞ্চলের বেশি ভাগ মানুষই কৃষি কাজ করে। এছাড়াও রয়েছে, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, চালক ও বিভিন্ন দিনমজুর পেশার শ্রমিক। এসব হতদরিদ্র ও দারিদ্রতা নিপীড়িত মানুষদের আর্থিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অর্থনৈতিক করিডোরের বিকল্প নেই। তিনি আরও অর্থনৈতিক করিডোর স্থাপনে এই আর্থসামাজিক উন্নয়ন পাশাপাশি এলাকার বেকারত্ব দূর হবে।

এ সময় অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানান, অর্থনৈতিক করিডোর নির্মাণে অত্র এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও এলাকার নিম্ন পেশা জীবী মানুষদের আর্থিক স্বচলতা বৃদ্ধি পাবি। এছাড়াও তিনি বলেন অর্থনৈতিক করিডোর স্থাপনে এ অঞ্চল অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও প্রসারে শহর ও নগরায়ণে পরিণত হবে। তিনি আরো বলেন অর্থনৈতিক করিডোর স্হাপনে ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে, জমির মালিকরা যেন ন্যায্য মূল্য পায় এ দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে দাবি জানান, এ অঞ্চলের মানুষদের যেনো আর ভূমিহীন না হতে হয়, সেজন্য নদীশাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।