ফরিদপুরে যুবদল নেতাসহ ৫ জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিনিধি: ফরিদপুরে কার্তিক সিকদার হত্যা মামলায় যুবদল নেতাসহ পাঁচজনকে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া সাক্ষ্য–প্রমাণ ও আলামত গোপন করার দায়ে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।

সোমবার ফরিদপুরের বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মতিয়ার রহমান এ দণ্ডাদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন নগরকান্দার চর যশোরদী ইউনিয়ন যুবদলের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজ মোল্লা (৩৬) ও তাঁর চার সহযোগী নয়া মোল্লা (৬০), ইমারত মোল্লা (৩২), কালাম মোল্লা (৩৮) ও সিদ্দিক মোল্লা (৩৬)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার নথিপত্র থেকে জানা যায়, চর যশোরদী ইউনিয়নের মেঘারকান্দি গ্রামের কার্তিক সিকদারের অপ্রাপ্তবয়স্ক কন্যাকে অপহরণ ও ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করেন সিরাজ মোল্লা নামে স্থানীয় ব্যক্তি। পরে কার্তিক সিকদারের বাড়িঘর দখল করে নিজে বসবাস শুরু করেন সিরাজ। কার্তিক সিকদারের কাছ থেকে বিভিন্ন দফায় চাঁদা আদায় করতে শুরু করেন তিনি। একপর্যায়ে চাঁদা না দিলে ২০০৬ সালের ১ জুন রাতে সিরাজ ও তাঁর সহযোগীরা কার্তিক সিকদারকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে ফেলে রেখে যান। আহত কার্তিককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতেও বাধা দেওয়া হয়। পরদিন ভয়ভীতি উপেক্ষা করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান কার্তিক। এরপর সিরাজ মোল্লা ও তাঁর সহযোগীরা কার্তিকের লাশ মাটিচাপা দিয়ে রাখেন।

এ ঘটনার পর ভয়ভীতি উপেক্ষা করে ২০০৭ সালের ৩ মার্চ নিহত কার্তিক সিকদারের স্ত্রী মিলনী সিকদার জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে এসে সিরাজ সিকদার ও তাঁর পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। নগরকান্দা থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম তদন্ত করে সিরাজ ও তাঁর চার সহযোগীকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সরকারপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম রব্বানী খান বলেন, এ রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা উচ্চতর আদালতে আপিল করবেন।