নাইক্ষ্যংছড়িতে স্বাক্ষর জাল করে স্কুলের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ

বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দৌছড়ি ইউনিয়নের কোলাচি সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুইচিং মার্মা স্কুলের সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে নাইক্ষ্যংছড়ি জনতা ব্যাংক থেকে দেড় লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের মাঝে চলছে বাকবিতণ্ডা। যে কোন মূহুর্তে তাদের মাঝে মারামারি বা বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করেছেন স্থানীয়রা। এ বিষয়ে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেম্বার মুজিবুর রহমান,  সদস্য ওসমান গণি থেকে জানতে চাইলে তারা বলেন,  বিগত ১২/১১ /২০১৮ ইং সনে বিদ্যালয়টিতে যোগদান করেন সুইচিং মার্মা। এর পর হইতে বিদ্যালয়ের যৌথ একাউন্টের স্বাক্ষর পরিবর্তনের কথা বলেন আমাকে। গত ২১/০১/২০১৯ ইং তারিখে মিটিং ও রেজুলেশন করে আমার ছবি ও আইডি কার্ড এর ফটোকপি সংগ্রহ করেন। কিন্তু নতুন ভাবে করা যৌথ একাউন্টের জনতা ব্যাংকের নমুনা স্বাক্ষরের কার্ডে আমার স্বাক্ষর সংগ্রহ করে নাই। আমি প্রধান শিক্ষককে উক্ত নমুনা স্বাক্ষরের কার্ডে আমার স্বাক্ষর নেওয়ার কথা বলিলে, উনি আমার থেকে পরে স্বাক্ষর নিবে বলিয়া জবাব দেন। পরে আমি জানিতে পারি জনতা ব্যাংকে আমার স্বাক্ষর জাল করে স্কুলের নামীয় ২টি একাউন্ট করেন ঐ একাউন্টে স্বাক্ষর পরিবর্তন করেন প্রধান শিক্ষক। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে অত্র বিদ্যালয়ের স্লিপ ও ক্ষুদ্র মেরামত এবং পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুদান সহ মোট ২ লক্ষ সাতানব্বই হাজার ৩ শত ৯১  টাকা জমা হয়। উক্ত টাকা সমূহের বিষয়ে উল্লেখিত ব্যক্তিকে জিঙ্গাসা করিলে, বিদ্যালয়ের এস.এম.সি ও স্লিপ কমিটির সাথে কোনখাতে কত টাকা বাজেট হইয়াছে, তাহা প্রকাশ করে নাই। তিনি নিজের মনগড়া ও সমঝোতা ছাড়া কমিটিকে তোয়াক্কা না করে মিটিং করে রেজুলেশন না করে জনতা ব্যাংকের চেকের মধ্যে আমার স্বাক্ষর জাল করে অর্থ উত্তোলন করেন। স্লিপ হইতে ৭০ হাজার টাকা,ক্ষুদ্র মেরামত ২ লক্ষ টাকা, প্রাক-প্রাথমিক ১০ হাজার টাকা এবং চেকের মাধ্যমে জেলা পরিষদ হইতে ১৭ হাজার ৩ শত ৯১ টাকা স্কুলের নামে অনুমোদন হইয়াছে। গোপন সূত্রে
আমার স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলনের ব্যাপারে জেনে গত ২০জুলাই  জরুরিভিত্তি কমিটির সকল সদস্য এবং স্কুলের সকল শিক্ষকসহ একটি মিটিং করি। উক্ত মিটিং এ আমি উল্লেখিত অনুমোদিত টাকার কথা বলিলে তিনি সর্বমোট দেড় লক্ষ টাকা সংগ্রহ হইয়াছে বলিয়া জানান এবং আমার স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলনের কথা বলিলে, তিনি বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে জবাব দেন যা করিয়াছি বেশ করিয়াছি এবং আমাকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও জনতা ব্যাংক,নাইক্ষ্যংছড়ি শাখার ম্যানেজার বলেন  সভাপতির প্রয়োজন নাই তাহার স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন করিতে পারিবেন।
পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম জানান। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে তিনি ক্লাস না করে বন্য শুকর ধরতে যায়। উল্লেখিত ব্যাপারেও বলিলে, কাহারো কথা তোয়াক্কা করে না এবং মন চাইলে স্কুলে আসে -যায়। তাহার এহেন চালচলন এবং আচরনে কমিটি, অভিভাবকের মাঝে  অসন্তোষ বিরাজ করছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে  জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার আশিফ বলেন,স্বাক্ষর জাল করার বিষয়টি সভাপতির কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে আপাতত টাকা উত্তোলন বন্ধ রেখেছি। উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ কামাল হোসেনের মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি জেনেছেন যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন এ প্রতিবেদককে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সুইচিং মার্মার মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করে সংযোগ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে গত ২২ জুলাই বান্দরবান জেলা পরিষদ,জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার,ইউএনও নাইক্ষ্যংছড়ি ও জনতা ব্যাংক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন সভাপতি মুজিবুর রহমান।