জয়পুরহাট-১ আসন প্রচারণায় ব্যস্ত আওয়ামীলীগ, বিএনপিতে গ্রেফতার আতংক

মোঃ বাবুল হোসেন, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) সংবাদদাতাঃ
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রচারণায় নিজেদের ব্যস্ত রেখেছেন। নিজেদের ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন বিভিন্ন হাট বাজার, পথসভায় ও পাড়া মহল্লায় গিয়ে। মানুষের দৌড়গোড়ায় গিয়ে আওয়ামীলীগ সরকারের বহুমুখী উন্নয়ন তুলে ধরছেন। সেই সঙ্গে আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেলে নৌকা প্রতীকে আগাম ভোট প্রার্থনা করছেন। অন্যদিকে সরকার পতন আন্দোলনে মরিয়া হয়ে নেমেছে বিএনপি। বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচী বাস্তবায়নে জেলা-উপজেলায় কাজ করছেন নেতাকর্মীরা। তবে ধরপাকড় ও গ্রেপ্তার আতংকে মাঠে বেশি দেখা যাচ্ছেনা বিএনপির নেতাকর্মীদের।

জয়পুরহাট সদর ও পাঁচবিবি উপজেলার মোট ১৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত জয়পুরহাট-১ আসন। জয়পুরহাটে ২টি সংসদীয় আসনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে অন্যতম গুরুত্বপুর্ণ ও মর্যাদার আসন এটি। স্বাধীনতার পর প্রায় বেশিরভাগ সময়ই আসনটি ছিল বিএনপির দখলে। বর্তমানে এ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুই বারের এমপি এ্যাড. সামছুল আলম দুদু। জেলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ আসনটি দখলে রাখার নিরন্তর চেষ্টা প্রাই সব দলের। আগামী নির্বাচনে যে কোনো মূল্যে আসনটি নিজেদের দখলে নিতে চায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে জোরেশোরে। সেই সঙ্গে ভোটারদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাস্তবায়িত উন্নয়নের কথা। তবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে ছাড় দিতে নারাজ বিএনপি। বিএনপির চেষ্টা আসনটিতে ঘুরে দাঁড়াতে।

তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত প্রার্থী নিয়ে চিন্তার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন জেলা উপজেলার একাধিক বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা আন্দোলনের মধ্যে আছেন এবং আন্দোলন সফল হওয়ার পরই তারা প্রার্থী নিয়ে চিন্তাভাবনা করবেন। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মনোনয়নের জন্য জোর লবিং করছে। এ আসনে আওয়ামী লীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত। এতে দ্বিধাবিভক্তিতে পড়েছে সাধারণ ভোটার। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন, বড় দলের বিভক্তি খুব স্বাভাবিক। তবে নির্বাচন এলে এ বিভক্তি থাকবে না। নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন।
এই আসনে বিএনপির অবস্থান ভালো থাকলেও দলটি দুটি গ্রুপে বিভক্ত। এ আসনে বিএনপির ভোটার থাকলেও দলের বিভক্তির কারণে ভোটারদের মাঝে হতাশা বাড়ছে।

নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে ততই দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, দল থেকে যাকে মনোনয়ন দিবেন তাকেই বিজয়ী করতে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। তখন কোনো দ্বিধাবিভক্তি থাকবেনা। তবে, আওয়ামী লীগের কিছু নতুন প্রার্থী ছুটছেন মানুষের কাছাকাছি। গ্রাম-শহর সর্বত্রই ছুটে বেড়াচ্ছেন। সরকারের উন্নয়ন, মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কর্মকান্ড তুলে ধরছেন শহর, বন্দর ও গ্রামে-গঞ্জে। নিজেদের ক্লিন ইমেজের মনে করে নেতারা বলেন, সরকার এবারের নির্বাচনে দলকে আরও শক্তিশালী করতে মনোনয়ন প্রার্থীদের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে মনোনয়ন দেবে। তবে আমাদের নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন, তার জন্যই কাজ করব ঐক্যবদ্ধভাবে।

সাধারণ ভোটাররা বলছেন, নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ, এলাকার রাস্তাঘাট, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, সেতু, ব্রীজ, কালভার্ট নির্মাণ করাসহ যাঁদের দ্বারা আমাদের উন্নয়ন ঘটবে আমরা তাকেই ভোট দিব।