নিজস্ব প্রতিবেদক : জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আটাপুর ইউনিয়নোর হিলি-শালাইপুর সড়কের কলনন্দপুর তুলশীগঙ্গা নদীর উপর নির্মানাধীন সেতুর নির্মাণ কাজ চলাকালে এক পাশের গার্ডার ধসে পড়েছে। বিভাগীয় তদারকির অভাব ও নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দাবী সেতুটির গার্ডার নির্মানে ক্রটি পরিলক্ষিত হওয়াই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে সেটি সরিয়ে ফেলতে বললে সেটি সরানোর সময় অসাবধানতা বশতঃ ভেঙ্গে পড়ে।

গত ৫ নভেম্বর রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সুত্রে জানা যায়, জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলি ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ সেতু প্রতিস্থাপন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যায়ে ৪৪ মিটার দৈর্ঘ্যের কলন্দপুরে তুলশী গঙ্গা নদীর উপর চলতি বছরের ৮ জানুয়ারী সেতুটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এ্যাডঃ সামছুল আলম দুদু। যৌথ ভাবে সেতুটির নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান মেসার্স জামান ইন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স এমএন এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, নিম্নমানের বালু, পাথর ও কম ঘনত্বের রড দিয়ে সেতু নির্মাণের কাজ করলেও সড়ক বিভাগের কোনো কর্মকর্তাকে তদারকী করতে দেখা যায়নি। আর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন সেতুটির নির্মাণ কাজ করত রাতের বেলায়।

আটাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, সরকার জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে সেতু নির্মার্ণের যে বরাদ্দ দিয়েছে তাতে একটি ভাল সেতু নির্মাণ হওয়ার কথা। কিন্তুু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাজের মানও খুব খারাপ এবং সেতু নির্মাণে পাথরের চেয়ে বালুর পরিমাণই বেশি। তার প্রশ্ন কাজের মান খারাপ না হলে রাতের আঁধারে কাজ করবে কেন?

স্থানীয় এলাকার হাসান বলেন, আমি প্রায় এই এলাকা দিয়ে যাওয়া আসা করি। সেতুর কাজ কখন করে দেখতে পাই না। আজ যাওয়ার পথে দেখি সেতুটি ভেঙ্গে গেছে। কাজ যদি ভাল হতো তাহলে সেতুটি ভাঙ্গত না।
সেতু সংশ্লিষ্ট এলাকার আব্দুর রউফ, সহ একাধিক লোকজন বলেন, সেতুর কোনও কাজ সঠিক ভাবে হচ্ছে না। সিমেন্ট, পাথর ও অন্যান্য সামগ্রীর ব্যবহার একেবারেই কম। তাই ঠিকাদরী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ইন্জিনিয়ার সন্জিত নিম্নসানের কাজের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়ম মেনেই গার্ডার নির্মান করা হয়। কিন্ত সেটি স্থানান্তর করতে গিয়ে দূর্ঘটনা বশতঃ পড়ে যায়। আর রাতে কখনো কাজ করা হয়নি। তবে অনেক সময় দিনে শুরু করা কাজ শেষ করতে গিয়ে সন্ধ্যা পেরিয়ে যায়।

জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহিনুর রহমান বলেন, সেতুর নির্মাণ করা গার্ডাটির নির্মাণ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিকট সিডিউলে বর্নিত না হয়ে ক্রটিপূর্ণ পরিলক্ষিত হয়। সে কারনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে গার্ডাটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। ঠিকাদারের লোকজন সেটি সরাতে গেলে অসাবধানতা বশতঃ ভেঙ্গে পড়ে।