শৈলকুপায় পেঁয়াজের প্রদর্শনী প্লটে বরাদ্দ বারী-১ জমিতে শোভা পাচ্ছে লাল তীর !

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপায় উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কনোজ কুমারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। দেশের বীজ গবেষণায় উন্নতমানের জাত প্রসারের জন্য বারী-১ (তাহেরপুরী) পেঁয়াজের বীজ বরাদ্দ করা হলেও প্রদর্শনীপ্লটে শোভা পাচ্ছে লাল তীর পেঁয়াজ। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসের পাল্টা-পাল্টি বক্তব্য পাওয়া গেছে। সরেজমিন দেখা যায়, শৈলকুপার হাকিমপুর ইউনিয়নের সাধুহাটি গ্রামে চলতি অর্থ বছরে এক একর জমিতে বারী পেঁয়াজ-১ প্রদর্শনী প্লট তৈরি করা হয়। চাষী মনিরুল ইসলাম জানান, কনোজ কুমার তাকে চাষাবাদে নানাভাবে সহযোগিতা করার আশ^াস দিয়ে বারী পেঁয়াজ-১ বীজ উৎপাদনে উৎসাহীত করে। এরপর তথ্য গোপন করে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বারী পেঁয়াজ-১ এর পরিবর্তে ৩৫ মন লালতীরের বীজ সরবরাহ করে উপসহকারি কৃষিকর্মকর্তা কনোজ কুমার। একাধিক কৃষক জানায়, বীজ কোম্পানীর কাছ থেকে মালপানি খেয়ে কনোজ কুমার সরকারী ভাবে সরবরাহকৃত বারী পেঁয়াজ-১ এর প্রদর্শনী প্লটে লাল তীর ঢুকিয়ে দিয়েছে। সুত্র জানায় সাধুহাটী গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম প্রথম থেকেই বারী পেঁয়াজ-১ প্লট উৎপাদনে আগ্রহ না দেখালে তাকে ভুলভাল বুঝিয়ে প্লটের জমি নির্দিষ্ট করে লালতীরের বীজ লাগিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমান ওই জমিতে লাল তীর পিয়াজ উৎপাদন হলেও সাইনবোর্ড ঝুলছে বারী পেঁয়াজ-১ এর। এলঅকার চাষি বিল্লাল শেখ ও প্লট মালিকের চাচাতো ভাই কমির উদ্দিন জানান, এ প্রদর্শনী প্লটে লালতীরের বীজ উৎপাদন হচ্ছে কিন্তুু উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন গ্রামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চাষীদের উক্ত প্লট মালিকের কাছ থেকে বারী পেঁয়াজ-১ (তাহেরপুরী) এর বীজ সংগ্রহের কথা বলে গেছেন। একই এলাকার চাষী নজরুল ইসলাম প্রশ্ন রেখে বলেন, আবাদ হয়েছে লালতীর বীজ অথচ কর্মকর্তাগণ বারী-১ (তাহেরপুরী) পেঁয়াজ বীজ ক্রয়ে উৎসাহ দেওয়ার নেপথ্য কি ? একাধিক চাষী জানান, শৈলকুপা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কনোজ কুমার তথ্য গোপন করে চাষীকে ভূলভাল বুঝিয়ে সরকারের বীজ উৎপাদন গবেষণাকে বিতর্কিত করতেই হয়তো প্রাইভেট কোম্পানীর বীজে উৎপাদনে সহযোগিতা করছেন। চাষীরা জানান, তাহেরপুরী পেঁয়াজ অনেক ভাল অধিক ঝাঁঝ। আকার চেপ্টা গোলাকার, বোটা চিকন, মধ্যম আকৃতির লালচে বর্ণের। অথচ সাধুহাটী গ্রামের প্রদর্শনী প্লটে লাগানো পেয়াজের সাথে কোন মিল নেই। এ ব্যাপারে শৈলকুপা উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কনোজ কুমার জানান, অফিস থেকে সরবরাকৃত বীজ সংগ্রহ করেই কৃষক মনিরুল ইসলামের প্লটে রোপন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় কুমার কুন্ডু জানান, বীজ উৎপাদন, সংগ্রহ, সংরক্ষন কৃষি বিভাগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন ব্যক্তির কর্মকান্ডের জন্য সরকারের কৃষি বিভাগের বীজ গবেষণাগার বির্তকিত হবে এমন দায়ভার অফিস বহন করবেনা। তিনি বলেন কোন অনিয়ম হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।