বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার

ডেস্ক রিপোর্ট: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর আগেই তাঁর দণ্ডিত খুনিদের মধ্যে কমপক্ষে দুজনকে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করতে চায় সরকার। পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জটিলতা সম্পর্কে সরকার সচেতন এবং তা কাটিয়ে উঠতে তারা কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

খুনিদের ফেরানোর পথে কিছু বাধা থাকার কথা স্বীকার করে সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, ‘(বিদেশে থাকা) আত্মস্বীকৃত খুনিদের মধ্যে আমরা কমপক্ষে এক বা দুজনকে ফিরিয়ে আনতে চাই।’

আবদুল মোমেন বলেন, তৎকালীন সরকার খুনিদের শুধু অর্থই দেয়নি সেই সাথে বিভিন্ন ধরনের পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে পাসপোর্টে থাকা খুনিদের নাম জানা যায়নি এবং এতে তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। খুনিদের পুরস্কৃত ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে চাকরি দেওয়া হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানান, সরকার খুনিদের ফিরিয়ে আনতে আইনি পথ অনুসরণ করতে চায়। কারণ তারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী।

ড. মোমেনের মতে, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কারা সাহায্য করেছিল তা তদন্ত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বঙ্গবন্ধু। এ ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে পাঁচজনের দণ্ড ২০১০ সালের জানুয়ারিতে কার্যকর করা হয়। একজন ২০০১ সালে জিম্বাবুয়েতে মারা যান। বাকি ছয় আসামি পলাতক। তাদের মধ্যে নুর চৌধুরী কানাডায় ও রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে আছেন বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন দৃঢ়ভাবে রাশেদ চৌধুরীর বিষয়টি তুলে ধরেন এবং তাকে বাংলাদেশে ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চান।

চলতি মাসের শুরুতে ব্যাংককে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পুনরায় সাক্ষাৎ হয়। সেখানে ড. মোমেনকে দেখা মাত্রই পম্পেও বলেন, ‘আপনার রাশেদ চৌধুরী (সম্পর্কে) আমাকে জিজ্ঞাসা করবেন না।’

ব্যাংককে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কানাডিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডেরও বৈঠক হয়। এ সময় তাঁকে ড. মোমেন বলেন, ‘কানাডাকে সব ঘাতক ও খুনিদের কেন্দ্র বানানো উচিত না আপনাদের।’

জবাবে ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেন, তাদের আইন খুব স্পর্শকাতর। কানাডিয়ান আইন বলে যে যদি কেউ তার দেশে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হয় তাহলে তাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যাবে না।

কানাডিয়ান সরকার যদি আইনের শাসনের কথা বলে তাহলে খুনিকে ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানান ড. মোমেন।