দেওয়ানগঞ্জে শিক্ষা কর্মকর্তাকে মেয়রের থাপ্পড়, থানায় মামলা

এমরান হোসেন , জামালপুর প্রতিনিধি।।

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ শাহনেওয়াজ শাহান শাহের বিরুদ্ধে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে জনসম্মুখে প্রকাশ্যে এক মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে গালিগালাজ ও চড় থাপ্পড় মারার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোর সাতটার দিকে দেওয়ানগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল মাঠে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ওই হাইস্কুল মাঠে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্ব পান মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মেহের উল্ল্যাহ। এ সময় দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ শাহনেওয়াজ শাহান শাহ ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসেন। উপস্থাপক শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্যে পৌরসভার নাম ৫ নম্বরে ঘোষণা করার কারণে মেয়র ওই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন এবং প্রকাশ্যে তাকে চড়-থাপ্পড় ও ধাক্কা মারেন।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মেহের উল্ল্যাহ জানান, প্রশাসনের তালিকায় পৌরসভার নাম ছিল ৫ নম্বরে। তালিকা অনুযায়ী নামগুলো ঘোষণা করা হচ্ছিল। হঠাৎ মেয়র অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পরে সবার উপস্থিতিতে জনসম্মুখে মেয়র চড়-থাপ্পড় ও ধাক্কা মারেন। এ ব্যপারে জেলা প্রশাসক পরামর্শক্রমে মেয়রের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।

পৌর মেয়র মোঃ শাহনেওয়াজ শাহান শাহ মুঠোফোনে জানান, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষা কর্মকর্তা মাইকে ছিলেন। প্রটোকল অনুযায়ী পৌরসভার নাম ঘোষণা হবে ৪ নম্বরে। কিন্তু তিনি ৮ নম্বর সিরিয়ালে ডাকলেন। প্রটোকল অনুযায়ী ঘোষণা না করে অপমান করলেন পৌরসভাকে। তবে এ ঘটনায় শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে শুধু তর্ক হয়েছে। গায়ে হাত দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবির মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার শারীরিক লাঞ্ছনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মেহের উল্ল্যাহ বাদী হয়ে মেয়রকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামীকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন্নাহার শেফা জানান, পৌরসভার মেয়র কর্তৃক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। জনসম্মুখে সরকারি দায়িত্ব পালনরত একজন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি সত্যিই দুঃখজনক। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।