হবিগঞ্জ চা বাগানের লেকগুলো এখন পাখির কলকাকলিতে মুখর

লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের চা বাগানের বিভিন্ন লেকে পরিযায়ী পাখির বিচরণ বাড়ছে অতি শীত প্রধান দেশ থেকে ছুটে আসছে এসব পাখি লেকের ছোট মাছ এদের প্রিয় খাবার। এসব মাছ শিকার করেই জীবন ধারণ করছে পরিযায়ীরা। তবে এক শ্রেণির লোকেরা এসব পাখি শিকার করতে চেষ্টা করছে। যদিও প্রশাসন পাখি রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে জেলার চুনারুঘাট, মাধবপুর নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার বিভিন্ন চা বাগানে লেক রয়েছে। চারদিকে টিলায় টিলায় চা গাছ। মাঝখানে লেক। দেখতে মনোমুগ্ধকর। শীতকাল আসায় নির্জন এসব লেকে অতিথি পাখি আসছে স্থানীয় গবেষকর বলছেন, প্রায় ২১ বছর ধরে অতি শীত প্রধান দেশ থেকে এ লেকগুলোতে হাজার হাজার অতিথি পাখি আসছে আবার শীতের শেষে তারা নিজ আপন ঠিকানায় ফিরে যাচ্ছে।

চুনারুঘাট উপজেলার লালচান্দ বাগানে গেলে দেখা যায়, চারদিকে চা-গাছ- মাঝখানে ছোট বড় ৬টি লেক (ঝিল) এসব জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নিচ্ছে প্রচুর ছোট মাছ এখানে অতিথি পাখিরা বসবাস করে লেকের কোমল পানিতে গা ভাসিয়ে বিভিন্ন পোকামাকড় ও ছোট মাছ খেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে অবস্থান করছে। হাজার হাজার অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত এসব লেক। তাতে দর্শনার্থীরা মুগ্ধ হচ্ছেন কেউ যাতে তাদেরকে বিরক্ত করতে না পারে সেদিকে বাগান কর্তৃপক্ষও খুব সজাগ এ বাগানের বাসিন্দা পরিবেশ প্রেমিক ডা. অক্ষয় কুমার বাবুল বলেন লেকগুলোতে লাল শাপলা ফুটেছে ব্যাপকভাবে।

শীত আসলেই অতিথি পাখিদের আগমন ঘটে লেকগুলোতে। চা-গাছ বেষ্টিত মাঝখানের লেকে অতিথি পাখির কিচির মিচির শব্দে স্থানীয় লোকদের ঘুম ভাঙে। সত্যি এ বিষয়টি অতি আনন্দের। নিজ চোখে না দেখলে কারো বিশ্বাস হবে না স্থানীয় বাসিন্দা এসএম সুমন মিয়া বলেন, প্রতি বছরই অতিথি পাখিদের আগমন হচ্ছে লেকগুলোতে। লেকের পাড়ে নীরবে বসে থাকলে পাখিদের কিচির মিচির শব্দ শোনা যাবে। তবে লোকজনের আভাস পেলেই পাখিরা লেক থেকে আকাশের দিকে ছুটে যায়। সে দৃশ্যও মন কেড়ে নেয় বাগান কর্তৃপক্ষ জানান লেকগুলোতে অতিথি পাখি আসে শীতের মৌসুমে পাখি শিকার হচ্ছে না।

তবে কেউ যাতে ওই পাখিদের কোন প্রকার বিরক্ত না করতে পারে সে ব্যাপারে তারা সজাগ রয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, অতিথি পাখি শীত নিবারণের জন্য অসহায় অবস্থায় আমাদের দেশে আসে। তারা সাধারণত লেক (ঝিল) ও বিলের এর মধ্যে সববাস করে। তবে সব বিল ও ঝিলে বসবাস করে না। কারণ তারা নিরব স্থান খুঁজে পেলেই অবস্থান নেয়। এ জেলায় লেকের সংখ্যা প্রায় অর্ধশতাধিক আর সরকাবি বিলের সংখ্যা ৬৭৫টি। এগুলোতে থাকা প্রচুর মাছ ও পোকামাকড়ে আকৃষ্ট এসব পরিযায়ীরা।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, অতিথি পাখি মারা যাবে না এটি আইনগত অপরাধ তাদেরকে আমরা বিরক্ত করব না। তারা যাতে সুস্থভাবে থাকতে পারে সেদিকে সবার নজর রাখা প্রয়োজন
বনগবেষক আহমদ আলী বলেন, অতিথি শিকার করা গুরুত্বর অপরাধ। কারণ তারা অন্য দেশ থেকে আমাদের দেশে আসে শীত নিবারণের জন্য শীতের শেষে তারা আবার চলে যায় এ পাখিগুলো আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে।

হবিগঞ্জ বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগরে ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ র্কমর্কতা ফরেস্টার তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী জানান- পাখির উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে, দেশের শ্রেষ্ঠ পাখি দর্শনের স্থান রেমা ও কালেঙ্গা এখানে দেশীয় নানা প্রজাতির পাখি বসবাস করছে।