সাতক্ষীরার আশাশুনিতে ঘুর্ণিঝড় আম্পানে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ একমাসেও পুন:নির্মাণ সম্ভব হয়নি,জনসাধারণের ভোগান্তি চরমে

আশাশুনি প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা: সুপার সাইক্লোন আম্পানের তান্ডবে আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর একমাস অতিবাহিত হলেও বাঁধ পুন:নির্মাণ সম্ভব হয়নি। ফলে ভাঙন কবলিত মানুষের ভোগান্তি পৌছেছে চরমে এবং অসহায় মানুুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে।

সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা ইউনিয়নের ভেঙে যাওয়া পাউবো’র বেড়িবাঁধ এখনো পুন:নির্মাণ সম্ভব হয়নি। কিছু স্থানে রিংবাঁধ দিয়ে সাময়িকভাবে কিছু এলাকা রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা পুনরায় ভেঙে একাকার হয়ে গেছে। ফলে প্লাবিত এলাকা নদীর জোয়ার ভাটার পানি উঠানামা করায় ঘরবাড়ি, মৎস্য ঘের, জমির ফসল নিয়মিত নিমজ্জিত হয়ে যাচ্ছে। লবণাক্ত পানিতে গ্রামের পর গ্রাম নিমজ্জিত ও জলমগ্ন থাকায় মানুষ কুলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না। খোলপেটুয়া নদী ও কপোতাক্ষ নদের জোয়ার-ভাটায় এলাকা এখন একাকার হয়ে গেছে। স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, গবাদিপশু, খামারিদের সম্বল, জমির ফসল ও মৎস্য ঘেরের মাছ ভেসে গিয়ে মানুষকে নি:স্ব করে দিয়েছে। টোং ঘর বেঁধে, বেড়িবাঁধে কিংবা আশ্রয় কেন্দ্রে বসবাসের স্থায়ীত্ব কত দিনের হবে তা ভেবে দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে মানুষ। পরিবারের আয়ের উৎস শেষ সম্বল মাছ ধরার নৌকায়ও কেউ কেউ বাসগৃহ করে ভাসমান বসবাস করছে। এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলেও গেছে কিছু কিছু পরিবার।

প্রতি বছর নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ইউনিয়ন বা গ্রামের মানচিত্র পরিবর্তন হতে হতে ভিন্নচিত্রে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছর বাঁধ ভাংছে এবং প্রতি বছর সাময়িকভাবে রক্ষার লক্ষ্য নিয়ে বাঁধের কাজ করায় এলাকার মানুষ সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে।সরকার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণের ঘোষণায় এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেছে। টেঁকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তড়িৎ পদক্ষেপে আশায় বুক বেধেছে এলাকাবাসী।
আশাশুনি শ্রীউলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল বলেন, দূর্ভাগ্য আমাদের, আজ একটি মাস অতিবাহিত হতে চললো কিন্তু এখনও বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় এলাকার মানুষ ভীষনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। নিয়মিত জোয়ার ভাটার কারনে কবরের লাশ পর্যন্ত পানিতে ভেসে যাচ্ছে। তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রæত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার এ প্রতিবেদক কে জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে আমরা কাজ শুরু করেছি। ওখানে জিও ব্যাগ ও জিও ২ দিয়ে কাজ করা হবে। ইতিমধ্যে জিও ব্যাগ ও ১টি পনটন চলে এসেছে। আজকালের মধ্যে জিও ২ ও আরেক টি পনটন চলে আসবে এবং আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে পুরোপুরি কাজ শুরু করার আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।