‘সম্মান’ ফেরানোর লড়াইয়ে আজ পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা মুখোমুখি


কাগজে কলমে দুটি দলই সেমিফাইনালের লড়াই থেকে মোটামুটি পিছিয়ে পড়েছে। তাই আজ যখন লর্ডসে পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা মুখোমুখি হবে তখন সেমিফাইনালে চোখ রাখার চেয়ে সম্মান ফেরানোর দিকেই বেশি মনোযোগ থাকবে।

তবে, পাকিস্তানের চেয়ে পিছিয়েই থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকা। কারণ, ছয় ম্যাচ শেষে মাত্র তিন পয়েন্ট পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা খুবই কম। বাকি তিনটি ম্যাচ তাদের জিততে তো হবেই, সাথে রান-রেট বাকিদের ম্যাচের ফলাফল — অনেক কিছুর দিকেই নজর রাখতে হবে। প্রোটিয়ারা অবশ্য এখনো স্বপ্ন দেখছে। অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস বলেন, ‘আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবার কোনো সুযোগই নেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের জন্যই মাঠে নামবো আমরা।’

ঘুড়ে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা করছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদও। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন যে অবস্থায় আছি, সেখান থেকে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। একটি জয়ই দলের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাবে। তাই কালই জয় তুলে নিতে চাই আমরা।’

পয়েন্ট টেবিলের যা অবস্থা, তাতে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে একটু হলেও বেশি। এর জন্য বাকি চারটা ম্যাচের সবগুলোতেই জিততে হবে। সেটা হয়ে গেলে হয়তো ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের পর নতুন একটা বিস্ময়ই সৃষ্টি করবে পাকিস্তানের এবারের বিশ্বকাপ দলটি।

সর্বশেষ ভারতের বিপক্ষে গেল ১৬ জুনের ম্যাচটি হারের পর থেকেই অবশ্য তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে পাকিস্তান দলকে। এই সমালোচনাকারীদের মধ্যে যেমন সাধারণ ক্রিকেট ভক্তও আছেন, তেমনি সামিল হয়েছেন সাবেক কিংবদন্তি তারকারাও। তবে, এই সমালোচনাকে খুবই স্বাভাবিক দৃষ্টিতেই দেখছেন সাবেক পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি।

সাবেক কিংবদন্তি পেসার শোয়েব আখতারের ইউটিউব চ্যানেলে এসে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান যখন খারাপ খেলে তখন তো এমন সমালোচনা হওয়াটাই রেওয়াজ। তাই নয় কি?’

বাজে পারফরম্যান্সের মধ্যেও পাকিস্তান দলকে বিশ্বকাপে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিশ্বাস এনে দিয়েছেন বাঁ-হাতি পেসার মোহাম্মদ আমির। তিনি চার ইনিংসে পেয়েছেন ১৩ উইকেট। তবে, স্বস্তির চেয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজও আছে। শোয়েব মালিকের মত সিনিয়র ক্রিকেটাররা একদমই রান পাচ্ছেন না।

পাকিস্তানের সকল মনোযোগ আপাতত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের দিকে। শীর্ষ ক্রিকেটার ওয়াহাব রিয়াজ বলেন, ‘একটা দল হিসেবে আমরা চেষ্টার কোনো কমতি করছি না। আমাদের সকল মনোযোগ এখন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের দিকে। আসলে আমাদের ইংল্যান্ডের মাটিতে যেভাবে উইকেট নেওয়ার দরকার ছিল, সেটা হচ্ছে না। এটা দ্রুতই কাটিয়ে তুলতে হবে।’

পাকিস্তান আপাতত সেমিফাইনালের দিকে চোখ রাখছে না। বরং ‘ম্যাচ বাই ম্যাচ’ এগোতে চায় তারা। ওয়াহাব রিয়াজ বলেন, ‘আপাতত আমরা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে চাই। আমরা জানি এই ম্যাচটা জিতলেই কেবল আমরা ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে পারবো। আমরা একটা একটা করে ম্যাচ নিয়ে ছক কষতে চাই। খুব বেশি দূরে তাকালে ম্যাচগুলোর ওপর থেকে মনোযোগ সরে যেতে পারে।’

ওয়াহাব জানালেন, নিজেদের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়েছে পাকিস্তান। তিনি বলেন, ‘ভালো দল তারাই যারা নিজেদের ভুলগুলো বুঝতে পারে। আমরা গেল কয়েকটা দিন নিজেদের ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি ও নিজেদের চাঙ্গা করে ফেলেছি। আশা করি আমরা নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নিতে পারবো।’