শিল্প শহর নওয়াপাড়া থেকে সাতদিনের মধ্যে কয়লা অপসারণ করতে হবে – জেলা প্রশাসক

উৎপল ঘোষ (ক্রাইম রিপোর্টার ) যশোর: যশোহর জেলার শিল্প ও বানিজ্যিক বন্দর নওয়াপাড়ায় বিভিন্ন দেশ থেকে দাহ্য পদার্থ কয়লা নদী পথে আমদানি করে সরকারি নিয়ম – নীতি ভঙ্গ করে বিগত তিন বছর ধরে নদীর জায়গা, সড়ক ও রেলওয়ের পাশে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে ও আবাসিক এলাকায় পাহাড় সমান কয়লা স্তুপ করে রাখার কারনে আশপাশের ফলজ বৃক্ষগুলো মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে বসেছে। এতে আশপাশের পরিবেশ মারাত্মক ভাবে দূষিত হচ্ছে। একদিকে যেমন কয়লার উদ্ভট বিকট ধোঁয়ায় আরাসিক এলাকার মানুষের জনজীবন বিষিয়ে তুলেছে। এই দূর্গন্ধের স্বাদ চেঙ্গুটিয়া থেকে রাজঘাট শিল্পঞ্চল পর্যন্ত সবার পোহাতে হয়। নওয়াপাড়া পৌরবাসীর জনজীবন অতিষ্ঠ ও পরিবেশ মারাত্মক ভাবে দূষিত হওয়ার কারনে যশোর জেলা প্রশাসন ও অভয়নগর উপজেলা প্রশাসন পৌরসভা সহ আশপাশের পরিবেশ ও বায়ূদূষণ ব্যাপরে গঠন মূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশের অন্যতম নওয়াপাড়া বন্দর এলাকার ব্যবসা বানিজ্য সচল রেখে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করে নিরাপত্তার মধ্যে জীবন যাপনেরজন্য যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফের উদ্যোগে গতকাল বিকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সকল শ্রেণী পেশা মানুষের অংশগ্রহনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ী মহল, সাধারণ মানুষ ও পরিবেশের জন্য নজিরবিহীন দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করতে যাচ্ছে। অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল হোসাইন খানের সভাপতিত্বে দাহ্য পদার্থ কয়লা দূষন রোধে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সাইফুর রহমান খান। যশোর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল আল নাসের। যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ – পরিচালক কামরুজ্জামান সরকার। অভয়নগর উপজেলা (ভূমি) কমিশনার কে এম রফিকুল ইসলাম। উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর,উপজেলা মহিলা ভিইস চেয়ারম্যান মিনারা পারভীন।দৈনিক নওয়াপাড়া সম্পাদক ও প্রকাশক আসলাম হোসেন। অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম। সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক রবিউল হাসান , আমদানি কারক নওয়াপাড়া মেসার্স জয়েন্ট ট্রেডিং এর চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান, প্রধান শিক্ষিকা সুফিয়া খাতুন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর,পৌর মেয়র সুশান্ত দাস শান্ত, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিনারা পারভীন,সার, সিমেন্ট, খাদ্য শষ্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শাহ জালাল , কয়লা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রবিন অধিকারী ব্যচা, সার, কয়লা আমদানি কারক আনিসুর রহমান,হোমিও ডাক্তার জুলফিকার, প্রেমবাগ ইউনিয়নের মফিজ ও শ্রীধরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, এ ছাড়াও বিভিন্ন কয়লা ও সার ব্যবসায়ী এলাকার নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সভায় যশোর – খুলনা নওয়াপাড়া হাইওয়ের তালিকা ভূক্ত ৩২ টি প্রতিষ্ঠানের স্তুুপ করা কয়লা সাত দিনের মধ্যে অপসারণ না করা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া রেলওয়ে ও সড়ক বিভাগের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা ব্রীজস্কেল গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাসও দেন তিনি। সাত দফা ভিত্তিক একটি স্থায়ী নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।
১। হাইওয়ে ও রেলওয়ের জায়গা থেকে সাত দিনের মধ্যে রাসায়নিক সার সহ সকলদাহ্য পদার্থ কয়লা অপসারণ করতে হবে।
২। কয়লা ড্যাম্পের চারপাশে ইট/টিন দিয়ে দেওয়াল দিতে হবে।
৩। জনঘনবসতিপূর্ণ এলাকা /কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশ পাশে কোন প্রকার কয়লার পাহাড় সমান স্তুপ করা যাবে না।
৪। ন্দ্রত হাইওয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দাহ্য পদার্থ কয়লার স্তুপ অপসারণ করতে হবে।
৫। সড়কের ওপর ট্রাক/ অন্য কোন পরিবহনে লোড – আনলোড করা যাবে না।
৬। রেলওয়ে ও হাইওয়ে সড়কের পাশেদাহ্য পদার্থ কয়লা স্তুুপ করলে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানা করা হবে।
৭। কয়লার ব্যবসা স্থায়ীভাবে করতে হলে এলাকার একটি সুবিধা জনক মাঠ চিহ্নিত করে সেখানে সকল ব্যবসায়ী কয়লা মজুদ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়লা সরবরাহ করতে হবে।