শবেবরাতে নামাজ পড়ার নিয়ম কী?

নিজস্ব প্রতিবেদক : শাবান মাসের ১৪ তারিখের দিবাগত রাতকে শবে বরাত বলা হয়। হাদিসের ভাষায় এই রাতকে লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান বা মধ্য শাবানের রজনী বলা হয়েছে। শবেবরাতের এ রাতকে ঘিরে বিভিন্ন বই-পুস্তকে নামাজের নির্দিষ্ট নিয়মকানুন লেখা আছে। অর্থাৎ কত রাকাত নামাজ পড়তে হবে, প্রতি রাকাতে কোন সুরা কতবার পড়তে হবে। কিন্তু বলা হচ্ছে এর কোনোটিই সঠিক নয়। এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস শরিফে এ ধরনের কোনো নিয়ম নেই, এগুলো মানুষের মনগড়া পন্থা। তবে শবেবরাত বা নিফসে শাবানে ইবাদতের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। এ রাতের যত ইবাদত আছে সবই নফল। শবেবরাতের বিশেষ কোনো ফরজ, ওয়াজিব বা সুন্নতে মুয়াক্কাদা ইবাদতের কথা হাদিসে বর্ণিত হয়নি।

কোরআন ও হাদিসের আলোকে আলেমরা শবেবরাতে কোরআন শরিফ তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, দোয়া-ইস্তেগফার এবং নফল নামাজ পড়ার কথা বলেন। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রাতে দীর্ঘ সময় নিয়ে নফল নামাজ পড়েছেন বলে হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত। নির্দিষ্ট বা আলাদা কোনো নিয়মে এই রাতে আল্লাহর রাসুল ও সাহাবিদের থেকে নামাজ বা অন্য ইবাদতের কথা প্রমাণিত নয়।

শবেবরাতে কেউ নফল নামাজ পড়তে চাইলে তার নিয়ম হলো, অন্য নফল নামাজের মতোই দুই রাকাত করে নামাজ পড়া। প্রতি রাকাতেই সুরা ফাতেহার পর পবিত্র কোরআনের যে কোনো সুরা পড়া। এরপর যথা নিয়মে রুকু-সিজদা করা এবং অন্য রুকনগুলো আদায় করা।

দুই বা চার রাকাত নামাজ পড়ার পর কিছু সময় দোয়া-দরুদ, তাসবি-তেলওয়াত করা, জিকির করা, কোরআন পড়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। এভাবে সাধ্য অনুযায়ী যত রাকাত নামাজ পড়া যায় পড়তে বলা হয়েছে। রাকাতেরও নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই। পবিত্র কোরআনে যথাসাধ্য নফল ইবাদত করার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে।

তবে শবেবরাতে নফল নামাজ, ইবাদত-বন্দেগির ব্যাপারে বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ি কোনোটাই করা যাবে না। কারণ, ইসলামে নফল নামাজ পড়ার নির্দিষ্ট নিয়ম বানিয়ে নেওয়া সম্পূর্ণ সরিয় বিরোধী। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং খোলাফায়ে রাশেদিনের সাহাবায়ে কেরাম কখনো তা পড়েননি। এ রাতে যেহেতু দীর্ঘ সময় পাওয়া যায়, তাই ফজিলতময় নামাজ সালাতুত তাসবিহ পড়া যেতে পারে।