মিয়ানমারের গুলি বাংলাদেশে, আতংকে স্থানীয়রা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার পাশাপাশি রাখাইনের সর্বত্র এই লড়াই ছড়িয়ে পড়ছে বলে সীমান্তের বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। এদিকে গত শনিবার বিকেলে রাখাইনে দু’পক্ষের গোলাবর্ষণে ছোড়া একটি গুলি এসে পড়েছে টেকনাফের উলুবনিয়া সীমান্তের একটি বাড়িতে। উলুবনিয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, সীমান্তের ওপারে দিনব্যাপী মর্টার শেল হামলা ও গোলাগুলির একপর্যায়ে একটি গুলি বাড়ির টিনের চালে এসে পড়ে। পরে গুলিটি বিজিবির স্থানীয় ফাঁড়ির ইনচার্জকে জমা দেওয়া হয়।

তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সীমান্ত পরিস্থিতি প্রশাসন পর্যবেক্ষণে রেখেছে। বিজিবিসহ আইন শৃংখলা বাহিনী সীমান্তে কঠোর নজরদারির পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

গত কয়েকদিনে ওপারে তীব্র গোলাগুলির শব্দ প্রকম্পিত হচ্ছে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা। শনিবার বিকাল থেকে টেকনাফ উপজেলা সীমান্তের ওপারে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে উলুবনিয়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দার বসত ঘরে একটি গুলি এবং বিভিন্ন জায়গায় ১৩ টি মর্টারশেল এসে পড়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসকারি স্থানীয়দের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান রোববারও পুরোদিন ভর সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। সীমান্ত লাগোয়া ওপারে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। এ পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা আতংকে রয়েছেন। পরিস্থিতি আরও অবনতি হলে রোহিঙ্গাদের আবারও অনুপ্রবেশের আশংকা করা হচ্ছে। এ নিয়ে সীমান্তবাসীর আতংক কাটাতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিজিবিসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান তিনি।

টেকনাফ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্টি আরাকান আর্মির মধ্যে গত এক মাসের বেশী সময় ধরে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যের সর্বত্রই এ লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে বলে নানা সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে রাজ্যটির অস্থির ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সীমান্তে আবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশংকা দেখা দিয়েছে।

এদিকে রোববার দুপুরে সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। এসময় তিনি বিজিবির সদস্যদের প্রতি সীমান্তে কঠোর নজরদারি জোরদারের পাশাপাশি যে কোন পরিস্থিতি মোরাবেলায় সতর্কতামূলক প্রস্তুতি অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান- সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি প্রশাসনের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। উদ্ভুদ পরিস্থিতি সম্পর্কে উর্ধ্বতন মহলে অবহিত করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কোন রোহিঙ্গার যাতে অনুপ্রবেশ না ঘটে এ ব্যাপারে প্রশাসন সার্বিক ব্যবস্থা নিয়েছে।