বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কী বলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম

নিজস্ব প্রতিবেদক : পাশাপাশি বেশ কয়েকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। বিবিসি, রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট, আল জাজিরাসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে।

ওই সব মিডিয়ার প্রতিবেদনে বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রচার করা হচ্ছে বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিস্থিতি। সব পক্ষকে টেনে এতে চূলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে, গোটা ভোট ব্যবস্থাপনার। বেশ ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে, নির্বাচনের নানা ঘাটতি, ত্রুটি-বিচ্যুতি।

মোটা দাগে বলা হচ্ছে, টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। যেখানে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ভোট বর্জন করেছে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ফল কী হবে, তা আগেই বোঝা যাচ্ছে। সরকার বিরোধীরা নির্বাচন বর্জন করায় এবং তাদের অনেক নেতা কারাগারে থাকায় তৈরি হয়েছে এমন পরিস্থিতি। মানবাধিকার ইস্যু নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে যে বিষয়টা বলা হয়েছে, তা হলো নেতাকর্মীরা কারাগারে থাকায় নিস্তেজ হয়েছে পড়েছে বিএনপির আন্দোলন। এর বিপরীতে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন চলছে বেশ জোরেশোরে। যুক্তরাষ্ট্রের আরেক প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে অসুস্থ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনের শিরোনাম, রোববার বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন। প্রকাশিত প্রতিবেদনে নৌকা প্রতীকের প্রচার-প্রচারণার বেশ কয়েকটি ছবি ব্যবহার করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের জরুরি ঋণ সহায়তার প্রয়োজন পড়েছিল বাংলাদেশের। তা সত্ত্বেও টানা চার মেয়াদে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস তাদের প্রতিবেদনে শিরোনাম করেছে, ভোটের মাধ্যমে একদলীয় শাসনে যাওয়ার শঙ্কা বাড়ছে বাংলাদেশে। পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করেও দৌড়ের ওপর রয়েছেন বিরোধীরা। এতে আরও বলা হয়, বিরোধীদের ওপর দমনপীড়ন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। তবে তা প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ বারবার বলেছে, নির্বাচন বানচাল করতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বিএনপি।

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বেশ সরব ভারতের গণমাধ্যমগুলো। নিয়মিত নির্বাচনের খবরের পাশাপাশি মতামতভিত্তিক নিবন্ধও প্রকাশ করছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। এমনই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এমনই এক লেখার শিরোনাম হচ্ছে, ‘বাংলাদেশের নির্বাচনে রশি টানাটানির খেলা : ইসলামি মৌলবাদ বনাম গণতন্ত্র’।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনের শিরোনাম, নিষেধাজ্ঞা ও বয়কট : বাংলাদেশের অশান্তির নির্বাচনের ইতিহাস। প্রতিবেদনে বলা হয়- ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে দেশটিতে হাতেগোনা কয়েকটি নির্বাচন ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ বলে বিবেচিত হয়েছে।