বলিউডে ‘লিভ টুগেদার’

এই আমার দেশ ডেস্ক : সদ্য প্রকাশিত হয়েছে কার্ত্তিক আরিয়ান ও ক্রিতি শ্যানন অভিনীত ছবি ‘লুকাচুপি’ ছবির ট্রেলার। এই ছবির কাহিনী গড়ে উঠেছে দুই তরুণ-তরুণীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে ঘিরে। যেখানে দেখা যায়, বিয়ে না করে লুকিয়ে লিভ টুগেদার করছেন কার্ত্তিক ও ক্রিতি। আর একসঙ্গে থাকতে গিয়ে তাঁরা বিভিন্ন হোটেল ও ভাড়া বাসায় বিভিন্ন বিব্রতকর পরিস্থিতে পড়েন। শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েন পরিবারের কাছে। বলিউডে এ ধরণের কাহিনী নিয়ে ছবি বানানোর প্রবণতা অনেক আগ থেকেই দেখা যায়।

বলিউডের ছবিতে সর্বপ্রথম ‘লিভ টুগেদার’ দেখানো হয়েছিল ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘সালাম নমস্তে’ ছবিতে। এই ছবিতে দেখা যায় অস্ট্রেলিয়ায় থাকা দুই ভারতীয় তরুণ-তরুণী বিয়ে না করে একসঙ্গে থাকছেন। শুধু তা-ই নয়, এক সময় সন্তানও নেন তাঁরা। পরবর্তীতে সন্তানসহ দু’জন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ছবিটির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সাইফ আলী খান ও প্রীতি জিনতা। সে সময় ভারতে এ ধরণের গল্পের ছবি খুবই স্পর্শকাতর বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ওয়েক আপ সিড’ ছবিতে লিভ টুগেদার দেখানো হয়েছিল কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে। এই ছবির মূল দুই চরিত্র রণবীর কাপুর ও কঙ্কনা সেন শর্মা। উচ্চবিত্ত পরিবারের এই দু’জন এক সময় বাড়ি ছেড়ে বাইরে একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে সেটা প্রেমিক-প্রেমিকা হিসেবে নয়, বরং বন্ধু হিসেবে। কিন্তু এক সময় এই সম্পর্ক বন্ধুত্ব ছাপিয়ে প্রেমের দিকে গড়ায়। এই ছবির মাধ্যমে মুলত উচ্চবিত্ত পরিবারের শহুরে তরুণ-তরুণীদের চালচিত্র দেখিয়েছেন পরিচালক অয়ন মুখার্জী।

‘ওয়েক আপ সিড’ এর তিন বছর পর ২০১২ সালে মুক্তি পায় সাইফ আলী খান, দীপিকা পাড়ুকোন ও ডায়ানা পেন্টি অভিনীত ছবি ‘ককটেল’। এই ছবিটিও গড়ে উঠেছে লন্ডনে থাকা তিন ভারতীয় তরুণ-তরুণীর লিভ টুগেদারের গল্প নিয়ে। শুরুতে সাইফ আলী খান ও দীপিকা পাড়ুকোনকে একসঙ্গে থাকতে দেখা যায়। এরপর প্লেবয় ইমেজের সাইফের সঙ্গে পরিচয় হয় ডায়ানা পেন্টির। স্বামীর কাছ থেকে বিতাড়িত ডায়ানাকে লন্ডনে নিজ গৃহে আশ্রয় দেয় সাইফ। আর সেখান থেকেই শুরু হয় ত্রিমুখী প্রেমের জটিলতা।

‘যশরাজ ফিল্মস’-এর ব্যানারে ২০১৩ সালে মুক্তি পায় ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’। এই ছবিতে দেখানো হয় কিভাবে ‘লিভ ইন’ সম্পর্ক শহরের উচ্চবিত্ত পরিবার থেকে মফস্বলের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে। ছবিতে জয়পুরের বাসিন্দা সুশান্ত সিং রাজপুত বিয়ে করবেন বলে পরিকল্পনা করেন। সেই সূত্রে তাঁর পরিচয় হয় স্বাধীনচেতা মেয়ে পরিনিতি চোপড়ার সঙ্গে। এক সময় তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং বিয়ে না করে তাঁরা একসঙ্গে থাকা শুরু করেন। ছবির শেষ পর্যন্ত তাঁদেরকে বিয়ে না করেও একসঙ্গে থাকতে দেখা যায়।

‘লিভ ইন’ সম্পর্কের আরও একটি ব্যতিক্রমধর্মী ছবি ‘ওকে জানু’। এই ছবির মাধ্যমে মুলত বিয়ে ও বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের তুলনা দেখিয়েছেন পরিচালক সাদ আলী। ছবিতে আদিত্য রয় কাপুর ও শ্রদ্ধা কাপুরের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু এক সময় তাঁরা ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠা করার অজুহাত দেখিয়ে বিয়ে ছাড়া একই ছাদের নিচে বসবাস করা শুরু করেন। তাঁদের ওই বাড়ির মালিক আবার বয়স্ক দম্পতি। এক সময় শ্রদ্ধা কাপুর তাঁর ব্যবসায়িক কাজে আদির কাছ থেকে আলাদা হয়ে পড়েন। দুজনের মধ্যেই এক ধরণের শুন্যতা অনুভব হতে শুরু করে। এদিকে বাড়ির বয়স্ক দম্পতির একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়িত্ববোধ দেখে আদির বোধোদয় ঘটে। এরপর তাঁরা বিয়ে করেন এবং নিজেদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হন।