বইমেলায় সিসিমপুরের আনন্দে মাতোয়ারা শিশুরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বইমেলায় সিসিমপুরের আনন্দে মাতোয়ারা শিশুরা। কার্টুন চরিত্র হালুম, ইকরি, শিকু ও টুকটুকি মাতিয়ে রেখেছিল শিশু প্রহর।

গতকাল শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে শিশুরা মেলায় এসেছিল অভিভাবকদের সঙ্গে। এ সময়ে বিকিকিনিতেও খুশি শিশুচত্বরের বিক্রয়কর্মীরা।

বাংলা একাডেমির বিশেষ আয়োজন ‘শিশু প্রহরে’ এদিন সকাল ১১টায় শিশুচত্বরের মঞ্চে যথারীতি উপস্থিত ছিল জনপ্রিয় কার্টুন সিসিমপুরের চরিত্র হালুম, ইকরি, শিকু ও টুকটুকি। তারা নাচ আর গানে মাতিয়ে তোলে শিশু প্রহর। গানে গানে শিশুদের শেখায় নিরাপদে সড়ক পারাপার সম্পর্কে। শিশুরাও ছিল সমান উচ্ছ্বসিত।

শিশু প্রহরে সিসিমপুরের আয়োজন শেষ হতেই শিশু ও অভিভাবকরা ভিড় করেন স্টলগুলোতে। তবে রাতে বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত শিশুচত্বরে ভোগান্তি হয়েছে অভিভাবক ও শিশুদের। অনেকটা পা টিপে টিপে হাঁটতে হয়েছে সবাইকে। ভোগান্তি থাকলেও বইমেলায় আসার আনন্দে কমতি ছিল না কারও।

অভিভাবকরা জানান, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় বৃষ্টির শঙ্কা নিয়েই শিশুদের মেলায় নিয়ে এসেছেন তারা। সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া শিশুদের নিয়ে বের হওয়ার সুযোগ মেলে না তাদের। তাই বৃষ্টির দোহাই দিয়ে ছোটদের ঘরবন্দি রাখার অর্থ হয় না।

কমলাপুর থেকে ৬ বছর বয়সী ফাইয়াজ এসেছে মা ব্যাংক কর্মকর্তা তাসকিনা ইসলামের সঙ্গে। তাসকিনা বলেন, ‘শুক্র-শনি ছাড়া তো বাচ্চাকে সময় দিতে পারি না। তাই বৃষ্টি হলেও মেলায় এসেছি। মেলার প্রতিটি শিশু প্রহরেই এসেছি আমরা। আর আমি সবসময়ই চাই বাচ্চার বইয়ের সাথে বন্ধুত্ব হোক। তাই প্রতিদিনই বই কিনে দিয়েছি।’

ফাইয়াজ বলেন, ‘শিশু প্রহরে এসে খুব ভালো লাগে। সিসিমপুরের সবাই থাকে। তারপর বই কিনি। এবার মেলায় ১০টি বই কিনেছি।’

শঙ্কা থাকলেও শেষমেশ উপস্থিতি ভালো থাকায় খুশি বিক্রয়কর্মীরাও। মেলার শুরুতে মোটামুটি হলেও শেষ মুহূর্তে বিকিকিনিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।

বনশ্রী থেকে এসেছেন ৭ বছরের বয়সী রাতুল চৌধুরী। রাতুলের বাবা আবির চৌধুরী বলেন, ‘মেলা শেষ হয়ে আসছে, তাই রাতুলের বায়না মেলায় আসবে, বৃষ্টি হলে হবে। আমিও বাধা দেইনি। মেলায় সিসিমপুরের আয়োজনটা সুন্দর। আর আমিও চাই রাতুলের বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক হোক। যদিও বইয়ের থেকে ঘোরাঘুরিতে বেশি আগ্রহ তার। তবু মেলায় এলে বই কেনা হচ্ছে, ও পড়ছে, এটাই মুখ্য।’

শিশুরাজ্য স্টলের বিক্রয়কর্মী রাজু বলেন, ‘আকাশ মেঘলা ছিল সকাল থেকে। মেলার প্রথমদিকে খুব একটা বিক্রি হয়নি। তবে ২১ তারিখ থেকে বিক্রি বেড়েছে। তাই ভাবছিলাম বৃষ্টি হলে আজ মেলায় উপস্থিতি কম হবে। আর শিশু প্রহর আছে এই দুইদিন মাত্র। তবে উপস্থিতি খুবই ভালো। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।’

ময়ূরপঙ্খী স্টলের বিক্রয়কর্মী তারিন বলেন, ‘বৃষ্টি হলে মেলায় লোক কম আসে, বিক্রিও কম। একটু তো চিন্তা ছিলই, কারণ মেলা শেষ হয়ে আসছে। শেষ সময়ে বিক্রি বেশি হয়। একটা দিন নষ্ট হওয়া মানে ক্ষতি। তবে উপস্থিতি আশার চেয়ে অনেক বেশি। আগের শিশু প্রহরগুলোর মতোই। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।’