তাহিরপুরে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, স্থানীয় বিচার শালিসে দামাচাপা দেয়ার চেষ্টা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা অাব্দুল মোতালিব(৪২) ৪ সন্তানের জনক কর্তৃক ২০ বছর বয়সী এক অসহায় দিনমজুর কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ধর্ষক মাহারাম গ্রামের ইছব অালীর ছেলে। এ ঘটনার জানাজানি হওয়ার পর থেকেই অভিযুক্ত ধর্ষক মেতালিব পলাতক রয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, তার এই চরিত্রের জন্য প্রায় ১০/১২ বছর আগে লম্পট মোতালিবের প্রথম স্ত্রী গলায় ফাস লাগিয়ে আত্নহত্যা করে। পরে সে আবার ২য় বিয়ে করে এখন ৪ সন্তানের জনক।এ ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার দিবাগত  রাত আড়াইটা সময় তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মাহারাম অাদর্শ গ্রামে। ধর্ষকের পরিবার স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায়  এ ঘটনাটি জানাজানি পর  একটি প্রভাবশালী মহল স্থানীয় বিচার শালিসে ধর্ষণের দামাচাপা দিতে এবং অাইনি সহায়তা না নিতে সকাল থেকেই ঘরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে এমন অভিযোগ ধর্ষিতার পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসীর। স্থানীয় এলাকাবাসী ও ওই কিশোরীর পরিবার  ও ধর্ষিতা কিশোরী জানাযায়,  মাহারাম অার্দগশ গ্রামের দিনমজুর শাহ বেওয়াজের ওই কিশোরী মেয়েটি তার নিজ বসত ঘরে এক বছর আগে একটি ছোট মুদির দোকান দেয়। এর সুবাদে মাহারাম চকবাজারের মোতালিবের দোকান থেকে পাইকারি মুদি মাল কিনে তার দোকানে বিক্রি করত। এই সুবাদে মোতালিব কিশোরীর বাড়িতেও অাসা যাওয়া করতো প্রায় সময়। পরে কিছুদিন যেতে না যেতেই ওই লম্পট মোতালিবের চোখ পরে ওই কিশোরীর উপর।  পরে গত ৫/৬ মাস যাবৎ ওই দিনমজুর কিশোরীকে বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে অাসে। এএমনকি ওই কিশোরীর মোবাইলে ফোন করে তাকে বিয়ে করবে এবং  ৪০ হাজার  দেবে এমন বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে ওই কিশোরীর রাজি না হয়ে লম্পট মোতালিবকে মোবাইলে গালমন্দ করে তার বাড়িতে না আসতে না করে। পরে লম্পট মোতালিব এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কিশোরীকে একদিনের জন্য হলেও দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়। এরই জের ধরে গতকাল ১২ অক্টোবর সোমবার তার  আড়াইটার সময় বাড়িতে গিয়ে ঘরের বেরা  ভেঙে ঘরে ডুকে মুখ বেধে জোরপূর্বক কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষিতা কিশোর আত্ন চিৎকারে পাশ্ববর্তী ঘরের লোকজন অাসলে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ধর্ষিতা কিশোরী অারও জানায়,  সকাল থেকেই অামাকে ও অামার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে। স্থানীয়ভাবে শেষ করার জন্য কিন্তু অামির এর সুষ্ঠু বিচার চাই। 
মাহারাম অাদর্শ গ্রামের সভাপতি অাব্দুল জবাব (৫৫) বলেন, মেতালিব মেয়েটির দোকানের মাজন (মহাজন)  হওয়ায় বিভিন্ন সময় তার বাড়িতে অাসত। এবং বিভিন্ন সময়  কুপ্রস্তা দিত। কিন্তুগত রাত ২ টা অাড়াইটার সময় মেয়েটির ঘরে চেচামেচি শেনেছি। অামরা মনে করছি তার মা বাপের মধ্যে কিছু হইছে। অাধাঘন্টা পারে যখন সুমা(ধর্ষিতা) তার মা ও বাপে মেতালিবকে ধরে  হইহুলার ও চিৎকা শুরু করে পরে অামরা গিয়ে দেখি মেতালিব সুমার মা ও বৃদ্ধ বাবাকে কিল-ঘুষি মেরে ছোটে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে অামরা সকালে নেয়াজ অালী মেম্বারকে  জানিয়েছি। মেম্বার কইছে এডা শেষ করব। এব্যাপারে উত্তর বড়দল ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য নোয়াজ অালী বলেন,ধর্ষণের বিষয়টি অামাকে জানিয়েছে।  বাবা অামি মেয়ের পরিবারকে ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে বিচার শালিসি বসে  মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য  মেতালিবকে ২০/৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে  শেষ করা চিন্তা করছি। বাবা এটা নিয়ে তুমি লেখালেখি কইরনা। অামি তোমার বিষয়টা দেখব। এব্যাপারে উত্তর বড়দল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল কাসেম বলেন,  বিষয়টি আমাকে গ্রামের অনেকেই ফোনে জানিয়েছে। তবে বিষয়টি সত্য।এব্যাপারে তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন,  বিষয়টি আমি জানিনা। এবং কেই এবিষয়ে কোন অভিযোগ করেনি। এখনি আপনার কাছ থেকে শোনেছি। ঠিক আছে এখনি খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি