ঠাকুরগাঁও -৩ আসনে ২২ বছর পর নৌকার প্রার্থী পেলেন ভোটাররা

রানীশংকৈলে( ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:

২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হবার পর দীর্ঘ ২২ বছরেও কোন আ.লীগ নেতাকে নৌকার টিকিট দিয়ে নির্বাচনে পাঠায়নি দলটি। আসন্ন দ্বাদস সংসদ নির্বাচনে পীরগঞ্জ- রাণীশংকৈল উপজেলা নিয়ে গঠিত ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে পীরগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো: এমদাদুল হককে নৌকার টিকিট দেয়া হয়েছে।
রোববার আ.লীগ ঘোষিত ২৯৮ আসনের মনোনিত প্রার্থীর তালিকায় ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের প্রার্থী হিসেবে এই সাবেক এমপির নাম পাওয়া যায়।

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ ও রাণীশংকৈল উপজেলায় আ.লীগ অবস্থান শক্ত। ১৯৯১ সালে মোকলেসুর রহমান ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আ.লীগ মনোনিত প্রার্থী মো. ইমদাদুল হক দল থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ জয় পান এবং তিনি ধরে রাখেন আসনটি। পরে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে ইমদাদুল হক দল থেকে মনোনয়ন পেয়েও জোটগত কারনে আসনটি ছেড়ে দিতে হয়। ২০০৮ সালে মহাজোটের মনোনয়ন পেয়ে জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টির একজন করে প্রার্থী থাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ইয়াসিন আলী।

২০১৮ সালের নির্বাচনে আসনটি আবারও ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হন ইয়াসিন আলী। কিন্তু কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ দেখা দেয়। নির্বাচনে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচন করেন ইমদাদুল হক। আর এই বিভাজনের কারণে তাদের দু’জনই বিএনপির প্রার্থী জাহিদুর রহমানের কাছে পরাজিত হন।পরে ২০২৩ সালে বিএনপির নির্বাচিত প্রার্থী জাহিদুর রহমান সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে আসনটিতে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের সাথে আলোচনা করে এই নির্বাচনে প্রার্থী হন ওয়াকার্স পার্টির ইয়াসিন আলী। নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাফিজ উদ্দীন আহম্মেদের কাছে।

তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন এই আসনে নৌকার শক্তি সবসময় বেশি। বিগত নির্বাচন গুলোতে জোটগত কারনে এ আসনটিতে নৌকার প্রার্থীকে নৌকা না দিয়ে শরীক দলের প্রার্থীকে নির্বাচনে পাঠানো হয়েছে। যদিও এখানকার স্থানীয় আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিলো আসনটিতে কোন আওয়ামী লীগ নেতাকে নৌকা দিয়ে নির্বাচনে পাঠানো হোক। এবার সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতাকে নৌকার টিকিট দেয় সন্তুষ্ট তারা।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা এমদাদুল হক বলেন, তৃণমূলের মানুষ অনেক খুশি। নাম ঘোষণার পর থেকে সাধারণ মানুষের ফোন ধরলেই তাদের আনন্দ অনুভব করছি। এর আগেও নৌকা পেয়েও ছেড়ে দিতে হয়েছিলো এবারও এমন শঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এবারে এমন কোন সম্ভাবনা দেখছিনা। নৌকাকে বিজয়ী করে আসনটি পুন উদ্ধার হবে।