ঝিনাইদহে প্রধান শিক্ষক রফিকুলের ইয়াবা সেবনের ভিডিও ভাইরাল

এম.মাসুম আজাদ, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৫নং কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের রাধাকান্তপুর প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইয়াবা সেবনকারী রফিকুল ইসলাম।

সম্প্রতি ওই শিক্ষকের ইয়াবা সেবনের বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিকদের হাতে এসে পৌঁছেছে। ভিডিওতে ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অবস্থিত একটি ক্লাব ঘরে রাতের আঁধারে অন্য একজনের সহায়তায় লাইটার ও কাগজের সাহায্যে ইয়াবা সেবন করতে দেখা গেছে। এসব ভিডিও এখন সোশাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে,এলাকায় মানুষের মুঠোফোনে চলছে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের ইয়াবা সেবনের ভিডিও।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম প্রায়ই রাতে ওই ক্লাব ঘরে মজমা বসিয়ে ইয়াবা সেবন করতো এবং তিনি নাকি দীর্ঘদিন যাবত মরণনেশা মাদক ইয়াবায় আসক্ত ছিলো। অতিরিক্ত মাত্রায় ইয়াবা সেবনের কারণে তার পরিবারেও নাকি ঝামেলা চলছে এমনটাই জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত মাদকসেবী ওই প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী নাটাবাড়িয়া প্রাইমারী স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা।

অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিষয়ে জানতে সরেজমিনে রাধাকান্তপুর প্রাইমারি স্কুলে গেলে কথা হয় তার স্ত্রীর সাথে। তার স্ত্রী সাংবাদিকদের সামনে কান্নাবিজড়িত কন্ঠে তার স্বামীর ইয়াবা সেবনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার স্বামী নাকি গভীর রাত পর্যন্ত বাইরে থাকতো। ইয়াবা সেবনের বিষয়ে বারংবার নিষেধ করার পরও সে তার কথা শোনেনি যে কারণে প্রায়ই তার সংসারে অশান্তি লেগেই থাকতো। একপর্যায়ে তিনি বিষয়টি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের কাছে মাদক সেবনের ব্যাপারে জানতে চাইলে, তিনি মাদক সেবনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সঙ্গদোষে অনেক কিছুই হয়। যেহেতু আপনারা আমার বাড়িতে গেছেন, দেখে শুনে এসেছেন, তাছাড়া আমি একজন শিক্ষক মানুষ একথা বলে তিনি প্রতিবেদন টা প্রকাশ না করার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করা সহ টাকার অফার দেন। কিন্তু তাতে রাজী না হয়ে সাংবাদিকরা ইয়াবা সেবনের ব্যাপারে বক্তব্য নিতে চাইলে, তিনি সাংবাদিকদের ফুটেজ নিতে বাঁধা প্রদান করেন এবং ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সটকে পড়েন।

এ সকল অভিযোগের ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনন্দ কিশোর সাহার কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টা আমি আগেই শুনেছি এবং ওনার মাদক সেবনের কিছু ফুটেজ ও পেয়েছি। তিনি আরও বলেন, একজন মাদকসেবী শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের কি শেখাবে? শিক্ষকদের মাদক সেবনের কোন অধিকার নেই। আপনারা নিউজ করেন ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

এদিকে শিক্ষকের ইয়াবা সেবনের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলেন, যে শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদেরকে মাদক থেকে দূরে রাখার শিক্ষা দেবেন সে কিনা নিজেই মাদকাসক্ত। তাকে দ্রুত বিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানান এলাকাবাসী।