চা উৎপাদনে ১০ কোটি কেজির মাইলফলকে দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯.৬৯ শতাংশ বেড়েছে। এবারই প্রথম চা উৎপাদনে ১০ কোটি কেজির মাইলফলক অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ। উৎপাদনে রেকর্ড হলেও বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় নিলামে চায়ের বিক্রি কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে গড় দামও।
কয়েক বছর ধরে অনুকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও সমন্বিত চেষ্টায় বাংলাদেশে চায়ের উৎপাদন ১০ কোটি কেজির মাইলফলক অতিক্রম করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

চা বোর্ডের তথ্য মতে, দেশের উত্তরাঞ্চলে পাঁচটি জেলা ও ক্ষুদ্রায়তনে চা-বাগানে মোট ১২০৭৯.০৬ একর জমিতে চায়ের আবাদ করা হয়েছে। দেশে এবার চা উৎপাদন হয়েছে ১৬৮টি বাগানে। তার মধ্যে রয়েছে মৌলভীবাজারে ৯০টি, হবিগঞ্জে ২৫টি, চট্টগ্রামে ২২টি, সিলেটে ১৯টি, পঞ্চগড়ে আটটি, রাঙামাটিতে দুটি আর একটি করে বাগান রয়েছে খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও এলাকায়।

২০২৩ সালে দেশের ১৬৮টি বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা চাষিদের হাত ধরে ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি। সেই হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ লাখ কেজি বেশি চা উৎপাদিত হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় চায়ের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৯.৬৯ শতাংশ।

২০২২ সালে ১০ কোটি কেজির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও বছর শেষ হয় ৯ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার কেজি উৎপাদন। ২০২১ সালে সব বাগান মিলিয়ে ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল। ২০২৩ সালেই প্রথমবারের মতো ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে।

গত ২০২৩-এর এপ্রিল থেকে ২০২৪-এর জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রামে চায়ের নিলাম হয়েছে ৩৭টি। এসব নিলামে মোট সাত কোটি ৩৯ লাখ কেজি চা বিক্রি হয়েছে।
যা আগের মৌসুমের একই সময়ের তুলনায় ১ শতাংশ কম ছিল। আগের মৌসুমে আট কোটি ৮৭ লাখ ৪৯ হাজার কেজি চা নিলামে ওঠে। এ ছাড়া নিলামে কেজিপ্রতি চায়ের গড় দর গত মৌসুমের চেয়ে ১২.০৬ পয়সা কমছিল।

গত মৌসুমে (২০২২-২৩) নিলামে চায়ের প্রতি কেজি দর উঠেছিল ১৯৬.৫৮ পয়সা। এ মৌসুমে দর উঠেছে ১৮৪.৫২ পয়সায়। ২০২৩ সালে চা রপ্তানি হয়েছে এক কোটি চার লাখ কেজি আর ২০২২ সালে ৭৮ লাখ কেজি চা রপ্তানি করা হয়। এবার রপ্তানিও বেশি হয়েছে।
চা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, কয়েক বছর ধরে অনুকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বাংলাদেশে চা উৎপাদন বেড়েছে। বাগানগুলোয় আধুনিক সেচ ব্যবস্থা, নিয়মিত বিরতিতে চা চাষের আওতা বৃদ্ধি, উত্তরাঞ্চলের সমতলে চা উৎপাদন বাড়ানো ও একাধিক নিলাম বাজার স্থাপনের মাধ্যমে চা বিপণনে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি উৎপাদনে ইতিবাচক ধারা ফিরিয়েছে।