গঙ্গাচড়ায় সরিষা চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে

আব্দুল আলীম প্রামানিক, গঙ্গাচড়া (রংপুর)

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ভোজ্য তেলের দাম বাড়ায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ভালো ফলনের পাশাপাশি দাম ভালো পাওয়ার আশা কৃষকদের স্বপ্ন। উপজেলা কৃষি বিভাগ প্রণোদনা হিসেবে কৃষকদের মাঝে উপকরণ প্রদান করায় এ বছর সরিষার চাষাবাদ আরও বৃদ্ধির আশাবাদ কৃষি বিভাগের।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে মাঠ ঘাট। সরিষার ফুলে আকৃষ্ট হয়ে মৌ মাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত। গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ নবনীদাস গ্রামের শাহিন বলেন, সরিষার চাষাবাদের ফলে পরিবারের যে তেলের চাহিদা তা পূরণ হয়। পাশাপাশি সরিষা বিক্রি করে বোরো আবাদের জন্য পানি দাম পরিশোধসহ সার কিনতে পারছি। বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৬ মণ সরিষা পাওয়া যায়। এ বছর সরিষার ভালো ফলন হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক মনছুর রহমান বলেন, সাধারণত আমন ধান কাটার পর বোরো ধান রোপনের আগ পর্যন্ত জমি খালি পরে থাকে। এই সময়ে জমি ফেলে না রেখে বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষার চাষ করছি। আর ধান কাটার পর সেই জমিতে দুটি চাষ দিয়ে সরিষা লাগানো যায়। তাতে বিঘা প্রতি আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। তিনি বলেন, সরিষা চাষাবাদের ফলে আমন ও বোরো ধানের মাঝে উপরি ফসল পেয়ে আমাদের লাভ হয়। পাশাপাশি নিজেদের তেলের চাহিদা পূরণ হয় ও খৈল পাওয়া যায়। সরিষার গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সরিষা শাক বিক্রি হয় তবে সরিষা চাষাবাদে তেমন খরচ নেই বললেই চলে। পানি সেচ ও সার তেমন লাগে না। শুধু সরিষা লাগালে হয়। সরিষার ক্ষেত গরু ছাগলও খায় না। এ জন্য বাড়তি কোন চিন্তা করতে হয় না।
স্থানীয় কৃষক নুর আমিন বলেন, বাজারে সয়াবিন তেলসহ অন্যান্য তেলের দাম বাড়ায় গত মৌসুমে সরিষার ব্যাপক চাহিদা ছিল। গত বছর প্রতিমণ সরিষা ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫শত টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এবারও সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গাছ দেখে বোঝা যায় ফলন ভালো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে গঙ্গাচড়া উপজেলায় সরিষার লক্ষ্যমাত্রা ২৮৫ হেক্টর। জমিতে সরিষা চাষে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে চাষাবাদের উপকারীতা কৃষকদের কাছে তুলে ধরেছি। পাশাপাশি তেলের দাম বেড়ে গেছে। এজন্য কৃষকরা আগ্রহী হয়ে এবার বেশি পরিমাণ সরিষার চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগ আশাবাদি আগামীতে সরিষার চাষাবাদ আরও সম্প্রসারিত হবে। সেই সঙ্গে কৃষকরাও লাভবান হবে।