কোটচাঁদপুরে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার জানেন না চাষির নাম

কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি: ব্লকে কাজ করেও চাষি চিনেন না ওই ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন। স্যারের কাছ থেকে শুনতে বলেন চাষির নাম। এতে করে ওই অফিসারের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, সরকার পেঁয়াজের অভাব লাঘবের জন্য চাষিদের মধ্যে প্রণোদনার বারী-১ জাতের পেঁয়াজের বীজ,পলিথিন,সুতলী,সার দেন। এ ছাড়া উৎপাদন ব্যয়ের জন্য ২৮ শ টাকাও দেন সরকার । এরমধ্যে ৫ টি ইউনিয়নে ৬৫ জন। এক ইউনিয়নে ১৩ জন আর পৌরসভায় ১০ জন। উপজেলায় মোট ৭৫ জন চাষিকে প্রণোদনার পেঁয়াজের বীজ সহ অন্যান্য সামগ্রি দেয়া হয়।
এ পেঁয়াজের বীজ বিতরেনর প্রথম থেকেই লুকোচুরি চলছিল,চাষি,কৃষি অফিস ও গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে । ওই সময় দেখা গেছে এক চাষির নামের বীজ অন্যের হাতে। এ সব নিয়ে ওই সময় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও মেলেনি কোন সদোত্তর। চলে আলোচনার ঝড় ওঠে এলাকার মানুষের মাঝে। এরপরও প্রকৃত চাষির সন্ধান মেলেনি আজও।

এ বিষয় নিয়ে কুশনা ব্লকের উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে কথা হলে,তিনি বলেন চাষিদের তথ্য নিতে স্যারের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি এ বিষয়ে জানেন না।
এরপর থেকে আবারও আলোচনায় এসেছে প্রণোদনার পেঁয়াজের বীজ।

কথা হয় বলুহর ইউনিয়নের ফুলবাড়ি ব্লকের দায়িত্ব রত উপ-সহকারী কৃষি অফিসার নজরুল ইসলামের সাথে তিনি বলেন, বীজ দিয়েছেন বিদেধারপুরের ইউপি সদস্য ওলিয়ার রহমান ও ফুলবাড়ির ইউপি সদস্য বিপ্লবকে।

মুঠোফোনে কথা হয় ইউপি সদস্য ওলিয়ার রহমানের সাথে তিনি বলেন পেঁয়াজের বীজ পেয়েছি। বীজ আমার নামে নিলেও আমি লাগায়নি দিয়েছেন তার এক নিকট আত্মীয় কে সে লাগিয়েছে। এখনো জমিতে লাগানো আছে দেখলে দেখতে পারেন।

ইউপি সদস্য বিপ্লব হোসেন বলেন, ওই বীজ পেয়ে ছিলাম। বীজ লাগিয়ে পেঁয়াজ তোলাও হয়ে গেছে। আমার ১০-১২ মন পেঁয়াজ হইলো। সাথে খরচ খরচা, সার, পলিথিন দিইলো।

ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন পেঁয়াজের রোপন ও সংগ্রহ কাল নিয়ে মুরুটিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন তিনি বলেন,পেঁয়াজের বীজ নিয়ে পাতো দিয়ে ছিলাম। ওই পাতো গ্রামের অনেকে নিয়েছেন লাগিয়েছেন। আমার লাগানোর জন্য কিছু রাখা হয়েছে। এ পেঁয়াজ ৩ মাসের আগে উঠে না। আর উঠালেও তাতে পেঁয়াজ কেমন হবে এটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। যারা বলছে লাগিয়ে তুলা হয়েগেছে তারা চাষি না।

বহরমপুর গ্রামের কৃষক মোশারেফ জানায়, কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির কোনো কিছুই পাননি তিনি। কৃষি অফিসে যোগাযোগ করলেও পাওয়া যায় না। প্রণোদনা পাওয়া কৃষক আলাদা। লাল তীর জাতের পিঁয়াজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। তিনি ১০ কাঠ জমিতে লাল তীর জাতের গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষ করেছেন। তার ক্ষেতে উৎপাদিত প্রতিটি পিঁয়াজের ওজন ৫০-১০০ গ্রাম ২৫-৩০ মন পিঁয়াজ উৎপাদন হবে বলে আশাবাদী তিনি । তিনি এ জমি থেকে ২৮-৩০ হাজার টাকার পিঁয়াজ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাপোষণ করছেন। তার জমিতে উৎপাদিত পিঁয়াজ দেখে অন্যান্য চাষিরাও এ জাতের পিঁয়াজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাসিন আলী বলেন,সব কৃষকের নাম হয়তো জানার কথা না। তবে কিছু তো জানার কথা। তবে বিষয়টি কেন বললো,আমি শুনে দেখছি। এ পেঁয়াজের রোপন ও সংগ্রহ কাল নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে,তিনি বলেন,পেঁয়াজ ৩ মাসের ফসল। এর আগে তুললে ফলন কম হবে। পরে তুললে ফলন আরো বেশি হবে। উপজেলায় এবার পেঁয়াজ চাষের লক্ষ মাত্র ১৬৭ হেক্টর জমিতে। অগ্রগতি ১৩০ হেক্টর। এখনো রোপন চলছে কিছু জমিতে। লক্ষ মাত্র পুরোন হবে। এই পেঁয়াজ চাষে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি আমদানি নির্ভরতা কমবে।