কখনো মনে হয়নি ফারুকী আমার ঘরের মানুষ: তিশা

বিনোদন ডেস্ক : জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় করছেন। ছোট-বড় দুই মাধ্যমেই তিশা নিজের মেধার পরিচয় দিয়েছেন বহুবার। স্ক্রিন শেয়ার করেছেন দেশের আলোচিত অভিনেতাদের সঙ্গে। এবারে তার ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা হলো। অভিনয় করেছেন যার সঙ্গে তিনি তার সঙ্গেই পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ। প্রথমবার অভিনয় করলেন স্বামী খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে।

এই অভিজ্ঞতা ঠিক কেমন? এ বিষয়ে তিশার উত্তর খুবই সাবলীল, ‘আমি তাকে একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবেই দেখেছি। এটা খুবই দারুণ বিষয় যে, ফারুকীর সঙ্গে আমি স্ক্রিন শেয়ার করতে পেরেছি। এটা আমার জন্য অবশ্যই ভালো অভিজ্ঞতা’।

গত ৩০ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে তিশা-ফারুকীর ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’। এতে জীবনসঙ্গীর সঙ্গে অভিনয়, এক্ষেত্রে শুটিংসেটে এর প্রভাব পড়তেই পারে। সিরিয়াস শট দিতে গিয়ে দুজনেই হেসে উঠতে পারেন। ঘটতেই পারে আরও ছোটখাটো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। তবে এমন কোনো ঘটনাই নাকি ঘটেনি।

তিশা জানালেন, ফারুকী সিরিয়াস অভিনয়শিল্পীর মতোই ক্যামেরার সামনে কাজ করেছেন। তিশার ভাষ্য, ‘আমিও তাকে ক্যামেরার সামনের শিল্পীই মনে করেছি, কখনই মনে হয়নি তিনি নেপথ্যের একজন নামী নির্মাতা, মনে হয়নি আমার ঘরের মানুষ। আমাদের এই কাজটা আসলেই দুর্দান্ত একটা কাজ হয়েছে। আমি বলব, সবার এই ফিল্মটা দেখা দরকার। শুধু এটার কথাই কেন বলব, যে কোনো সিনেমায়ই সবার দেখা উচিত। এটা যেমন বিনোদনের বিষয়, তেমনই একটি সিনেমায় অনেক বিষয় থাকে, যা সবার দেখা উচিত। সিনেমা বানানোই তো হয় দর্শকদের জন্য। তারা না দেখলে কারা দেখবে?’

২৮তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয় ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’। তখন কোরিয়াতে ছিলেন ফারুকী-তিশা দম্পতি। আর দ্বিতীয় প্রদর্শনী হয় মুম্বাইয়ে। সে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিশা বলেন, ‘মুম্বাইয়ে এই সিনেমার শো দেখে দর্শকরা যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তা মনে রাখার মতো। তারা যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, তারা সিনেমাটিকে নিজের সঙ্গে মেলাতে পেরেছেন। শো শেষে আমাদের কাছে এসে আবেগ প্রকাশ করেছেন, ভালো লাগা প্রকাশ করেছেন। তাই এটা যে নিঃসন্দেহে ভালো কাজ হয়েছে, সেটা আমরা নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি।’

ফুরফুরে মেজাজের মানুষ মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তবে সিনেমায় প্রথমবার অভিনয় নিয়ে মিশ্র অনুভূতি হচ্ছে তাঁর। ফারকী বলেন, ‘অনেক দিন তো কাজ করছি। কখনো ভাবিনি অভিনয় করব। সেটাও করা হয়ে গেল। ফলে একধরনের সংকোচ ভাব তো আছেই। একই সঙ্গে উত্তেজনাও কাজ করছে। নিজেদের জীবন ছেনে গল্প বের করার মধ্যে একটা ভালনারেবিলিটি আছে। কিন্তু হৃদয় খুঁড়ে বেদনা বের করে আনাই তো শিল্পীর কাজ।’

ফারুকী আরও বলেন, ‘নিজের সময়টার সাক্ষী হওয়া ছাড়া আমাদের আর কীই–বা করার আছে। আমরা এখানে সেটাই করার চেষ্টা করেছি। বাবা-মা হিসেবে আমরা বিশেষ কেউ না। সব মা–বাবার গল্পই এক। সন্তানের জন্য সব মা–বাবারই স্পেশাল ত্যাগের গল্প আছে, আনন্দের গল্প আছে, বিব্রতকর গল্প আছে—এই ছবিটা যদি তাঁদের সেসব অনুভূতির কথা মনে করিয়ে দেয়, তাহলেই আমরা খুশি হব।’

‘অটোবায়োগ্রাফি’র সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন তাহসিন রহমান, সম্পাদনা করেছেন মোমিন বিশ্বাস। কালার গ্রেডিংয়ে ছিলেন দেবজ্যোতি ঘোষ। সাউন্ড ডিজাইনে ছিলেন রিপন নাথ ও ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর করেছেন পাভেল আরিন। শিল্প নির্দেশক শিহাব নুরুন নবী।

সিনেমার শিল্পীদের ক্যামেরায় অনন্য ও বাস্তবরূপে করে তুলেছিলেন দুই নারী। তাঁরা হলেন মেকআপের আতিয়া রহমান ও কস্টিউম ইদিলা ফরিদ তুরিন।

ফারুকী ও তিশার সঙ্গে এই সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন ইরেশ যাকের, ডলি জহুর, শরাফ আহমেদ জীবনসহ অনেকে।