আশুলিয়ায় চোরের আতঙ্কে দরগার পাড় এলাকাবাসী, প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ

সাভার-আশুলিয়া প্রতিনিধিঃ রাজধানী ঢাকার উপকন্ঠ শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ কাজের সন্ধানে এসে পাড়ি জমান এই শিল্পাঞ্চলে। এই অঞ্চলের বেশির ভাগ পোশাক শ্রমিক। সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় কিংবা সারাদিন কাজ শেষে বাসায় ফেরার সময় রাস্তার ছিচকে চোরের খপ্পরে পরে হারিয়ে ফেলেছেন মোবাইল ফোন সহ মূল্যবান মালামাল। নারী-পুরুষ সকলকেই পড়তে হচ্ছে এই বিড়ম্বনায়।

আশুলিয়ায় গত ২-৩ মাস ধরে ব্যাপক চুরি বেড়ে গেছে। বিভিন্ন মহল্লায় প্রায় রাতেই ঘটছে চুরির ঘটনা। চোরেরা এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে হানা দিয়ে মোবাইল ফোনসেট, মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। ফলে ছিচকে চোরদের যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছে মানুষ। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।

সংঘবদ্ধ চোরেরা এতই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, চুরির সময় কেউ দেখে ফেললে তাকে আঘাত করতেও দ্বিধা করছে না। সম্প্রতি আশুলিয়ার বাইপাইল বাস স্ট্যান্ড, পল্লিবিদ্যুৎ বাস স্ট্যান্ড, নবীনগর বাসস্ট্যান্ড, বলিভদ্রবাজার ও গাজিরচট দরগাহ পাড় ও জামগড়া এলাকায় বেশ চুরির খবর শোনা যাচ্ছে।
ইমরান হাসান লেদু নামের ভুক্তভোগী বলেন, আমাদের এই দরগাহ পাড় এলাকায় প্রায় চুরি হচ্ছে, এলাকার চিন্হিত মাদক সেবীরা এই কাজ করছে, তারা মাদক শুধু সেবন করে না, বিক্রিও করে। তারা সাধারণত গভীর রাতে বাড়িতে হানা দেয়। তারা নানা কৌশল অবলম্বন করে বাসা বাড়ির সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। চোরের কারণে আমরা অতিষ্ঠ। সব সময় আশঙ্কায় থাকতে হয়। আমরা দ্রুত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পদক্ষেপ কামনা করি।’

এর মধ্যে বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সবচেয়ে বেশি, প্রতিদিনই কারো না করো মোবাইল চুরির খবর আসছে। দরগাহ পাড় এলাকায় গত এক মাসে অন্তত ৫টি চুরি হয়েছে। তার মধ্যে, দিন-দুপুরে বায়তুন নাজাত জামে মসজিদের ফ্যান, তালা ভেঙ্গে ৫ ভোরি স্বর্ণ, দোকান থেকে সাইকেল চুরির ঘটনাও রয়েছে। মোটকথা, চোরচক্রের দৌরাত্ম্য বড় রকমের উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশের ক্ষেত্রে চুরির সব ঘটনা থানা-পুলিশ পর্যন্ত যায় না। অনেক সময় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দিয়েও কাজ হয় না। এসব নানা কারণে চোরের উৎপাত না কমে বরং বাড়ছেই।

ভুক্তভোগীরা জানান, চুরির ঘটনায় তেমন কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না, যার ফলে চোররা অধিকতর সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই চোরদের মধ্যে বেশির ভাগ মাদকসেবী। মাদব সেবনের জন্য তাদের টাকার প্রয়োজন হয়। তাদের এই টাকার যোগান দিতেই কোনো উপায় না পেয়ে চুরি-ছিনতাইয়ের কাজ করে।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়, নিয়মিত উনারা এলাকায় টহল দিচ্ছেন। ছিচকে চোরদের গ্রেফতারও করছেন। কোনো কোনো চোরকে একাধিকবারও গ্রেফতার করা হয়েছে, সমস্যা হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যেই তারা ছাড়া পেয়ে একই কাজে জড়িয়ে পড়ে। যার ফলে তাদের দমন করতে বেগ পেতে হচ্ছে।

স্বর্ণ চুরির একটি ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিরুল ইসলাম জানান, অভিযুক্তকে ধরতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।