অমর একুশে ও ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রসঙ্গে

খোন্দকার হাফিজ ফারুক : আমি যেটা বলতে চেয়েছি, ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লক্ষ লক্ষ মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে আসে। সেখানে সুশৃঙ্খলভাবে সবাই সারিবদ্ধভাবে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। সেখানে বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশের আইজি বা সচিব প্রথমে পুষ্প স্তবক অর্পণ করে না। জনগণের নেতা বা জন প্রতিনিধি এ সম্মান পেয়ে থাকেন। আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন ছাত্র সংগঠন শহীদ মিনার নিয়ন্ত্রণ করতো। কবিতা আবৃত্তি সংগীত পরিবেশন করে ভাব গম্ভীর পরিবেশ সৃষ্টি করা হতো। খালি পায়ে প্রভাত ফেরি করেছি। ” আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি” এই ঐতিহাসিক গানটি গাইতে গাইতে শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছি। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করানো হতো। আমি যখন অধ্যক্ষ ছিলাম তখনো একুশের শপথ পাঠ করিয়েছি ছাত্রদেরকে। এখন শপথ বাক্য পাঠ করতে দেখছি না কেন?
ছাত্রদের বুকের রক্তের বিনিময়ে এসেছে একুশ। একুশ আমাদের অহংকার, একুশ মানে মাথা নত না করা, একুশ অচলায়তন ভাঙার প্রেরণা, একুশ জাতির বাতিঘর, জাতীয় জীবনের সংকটময় সন্ধিক্ষণে অচলায়তন ভেঙে চুরমার করে দেয় যে একুশ, তারই প্রতীক শহীদ মিনার। শহীদ মিনারের মাঝের স্তম্ভের অর্থ দেশমাতা, পাশের চারটি স্তম্ভ দেশের তেজোদ্দীপ্ত,প্রমত্তপ্রাণ সন্তান মায়ের আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তাঁরা কোন অশুভ শক্তি বা অন্যায়ের সামনে মাথা নত করে না।
কিন্তু কি দেখছি এখন? এবারে একুশের প্রথম প্রহরে একুশের তাৎপর্য কি তুলে ধরতে পেরেছি? পেরেছি কি একুশের আবহ সৃষ্টি করতে।
ঝিনাইদহের শহীদ মিনার যদি প্রশাসনের শহীদ মিনার হয়, তবে ছাত্র জনতার জন্য পৃথক শহীদ মিনার চাই। যে শহীদ মিনার নিয়ন্ত্রণ করবে ছাত্র সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রশাসন থাকবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে। এমন একটি শহীদ মিনার দেখতে চাই যা ছাত্র জনতা নিয়ন্ত্রিত।
কেন সবকিছু পাল্টে গেলো আমি জানি না, কারো জানা থাকলে জানান।