আটাশ বছরের প্রতীক্ষার অবসান। তবে তা হয়েছে কলঙ্কজনক এক অধ্যায় রচনার মধ্য দিয়ে। সাম্প্রতিক অন্যান্য নির্বাচনগুলোর অনিয়মের ধারাবাহিকতাই দেখা গেল ডাকসু নির্বাচনে। রাতেই ব্যালটে সিল মেরে বস্তা ভরে রাখা, ব্যালট লুকিয়ে রাখা, মেকি লাইন দিয়ে সাধারণ ভোটারদের আটকে রাখার মতো ঘটনা ঘটেছে মিনি পার্লামেন্ট খ্যাত ডাকসু নির্বাচনে।
তবে ব্যতিক্রম শুধু প্রতিবাদের ক্ষেত্রে। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে নানা অনিয়ম হলেও তার প্রকাশ্য প্রতিবাদ ছিল না খুব একটা। এক্ষেত্রে নতুন ইতিহাসই গড়লেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হলের ছাত্রীরা। তারা অনিয়ম ধরেছেন, প্রতিবাদ করেছেন। পুরো নির্বাচনের চিত্রটি জাতির সামনে তুলে ধরেছেন।
আলোচিত ডাকসু
নির্বাচনে অনিয়মের
অভিযোগ তুলে ছাত্রলীগ
ছাড়া অন্যসব প্যানেলের
প্রার্থীরা দুপুরের
পরই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান
করেন। নির্বাচন বাতিল
এবং অনিয়মের তদন্ত
দাবি করে তারা
বিক্ষোভের ডাক
দিয়েছেন। এদিকে
নানা অভিযোগের বিষয়ে
নির্বাচনের প্রধান
রিটার্নিং কর্মকর্তা
দুঃখ প্রকাশ করে
অভিযোগকারীদের মামলা
করার পরামর্শ দিয়েছেন।
যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি
আখতারুজ্জামান বলেছেন,
নির্বাচন সুষ্ঠু
ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনে ব্যালটের
নিরাপত্তা নিশ্চিত
না করতে পারায়
বাংলাদেশ-কুয়েত
মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ
অধ্যাপক ড.
শবনম জাহানকে অব্যাহতি
দেয়া হয়েছে। ঘটনায়
চার সদস্যের তদন্ত
কমিটিও গঠন করেছে
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
হলটিতে নতুন প্রাধ্যক্ষ
নিয়োগ দিয়ে সাড়ে
৩ ঘণ্টা পর
নির্বাচন শুরু
হয়।
ভোট শুরুর আগেই ছাত্রলীগের পূর্ণ প্যানেলে ভোট
সকাল ৮টা থেকে
ভোটগ্রহণ শুরু
হলেও বাংলাদেশ কুয়েত
মৈত্রী হলে ভোটগ্রহণ
শুরু হয়েছে দুপুর
সোয়া ১১টায়। ভোটগ্রহণের
শুরুতে প্রার্থীরা ব্যালট
বাক্স খালি কিনা
দেখতে চায় কিন্তু
প্রশাসন তা
দেখাতে অস্বীকৃতি জানায়।
এ নিয়ে ভোট
প্রদান থেকে বিরত
থাকে শিক্ষার্থীরা। তারা
ব্যালট বাক্স দেখানোর
পর নির্বাচন করবেন
বলে প্রাধ্যক্ষকে জানিয়ে
দেন এবং বিক্ষোভ
করেন। এ বিষয়ে
কুয়েত মৈত্রী হল
সংসদের ভিপি পদের
স্বতন্ত্র প্রার্থী
শামসুন্নাহার পলি
অভিযোগ করেন, হলের
মিলনায়তনের পাশে
রিডিং রুমে বসে
ব্যালটে ভোটের
চিহ্ন দেয়া হচ্ছিল।
‘ভেতর থেকে দরজায়
ছিটকিনি দিয়ে
ভেতরে বসে এগুলো
করছিল। ওই রুমে
বসে সিল মারছিল।
আমরা সাড়ে ৭টার
দিকে ম্যামকে বলেছিলাম
‘ম্যাম আমরা দেখবো
ব্যালট বাক্স খালি
কিনা। তিনি কিছুতেই
দেখাবেন না।
উনি বলেন, প্রক্টর
স্যার এসে দেখাবেন।
‘প্রক্টর স্যার
এসে বললেন, নির্বাচন
সুষ্ঠু হবে।
সব দেখাবো। এটা
বলে তিনি ওই
রুমে নিয়ে গিয়ে
ছিটকিনি দিয়ে
দিয়েছেন। আমরা
দরজা ধাক্কাচ্ছি, কিছুতেই
খোলে না। যখন
দরজা খুললো, আমরা
ভেতরে গিয়ে দেখি
বস্তাভর্তি ব্যালট
পেপার।’ এদিকে শিক্ষার্থীরা
যখন ব্যালট বাক্স
মিলনায়তন থেকে
বের করে আনেন
তখন সেখানে পাওয়া
বস্তাভর্তি ব্যালটে
ছাত্রলীগের প্রার্থীদের
পক্ষে ভোট দেয়া
দেখতে পান। এ
ঘটনায় বিক্ষোভ বাড়তে
থাকে। এক পর্যায়ে
ঘটনাস্থলে আসেন
প্রো-ভিসি অধ্যাপক
ড. মু. সামাদ,
প্রক্টর অধ্যাপক
ড. এ কে
এম গোলাম রব্বানী
ঘটনাস্থলে উপস্থিত
হলে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের
মুখে পড়েন।
ছাত্রীরা দুই
শিক্ষককে ঘিরে
ধরে ব্যালটে কেন
ভোট দেয়া জানতে
চান। তীব্র বিক্ষোভের
মধ্যে প্রশাসন জড়িতদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নেয়ার আশ্বাস দিয়ে
শিক্ষার্থীদের নির্বাচনে
অংশ নিতে বলেন।
কিন্তু বিক্ষোভকারীরা সেটি
মানতে অস্বীকৃতি জানায়।
তারা এর কারণ
ও প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক
ড. শবনম জাহানের
পদত্যাগ দাবি
করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে
প্রো-ভিসি (প্রশাসন)
ও চিফ রিটার্নিং
কর্মকর্তা অধ্যাপক
ড. এস এম
মাহফুজুর রহমান
নির্বাচন স্থগিতের
ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে
হলটির প্রাধ্যক্ষকে তাৎক্ষণিকভাবে অব্যাহতি দেয়া
হয়। গঠন করা
হয়েছে চার সদস্যের
তদন্ত কমিটি। নতুনভাবে
প্রাধ্যক্ষ হিসেবে
নিয়োগ প্রদান করা
হয় অধ্যাপক ড.
মাহবুবা নাসরীনকে।
পরে তার নেতৃত্বে
তিন ঘণ্টা পর
ভোটগ্রহণ শুরু
হয়। তখন চিফ
রিটার্নিং কর্মকর্তা
মাহফুজুর রহমান
জানিয়েছেন, বেলা
১১টা ১০ মিনিটে
কুয়েত মৈত্রী হলে
ভোটগ্রহণ শুরু
করেছেন তারা, চলবে
বিকাল পাঁচটা ১০
মিনিট পর্যন্ত। মৈত্রী
হলে গিয়ে দেখা
যায়, বস্তাভর্তি ব্যালট
বাক্স ভেতর থেকে
নিয়ে আসে বিক্ষুব্ধ
ছাত্রীরা। এ
সময় তারা বলেন,
আগের রাতেই এসব
ব্যালটে ‘ক্রস
চিহ্ন’ দিয়ে ভোটের
চিহ্ন দিয়ে রাখা
হয়েছে। যেসব নামে
ভোটের চিহ্ন দেয়া
হয়েছে সেগুলো ছাত্রলীগের
হল প্যানেলের প্রার্থীদের।
ট্রাঙ্কভর্তি ফাঁকা ব্যালট নিয়ে উত্তেজনা, তিন ঘণ্টা বন্ধ নির্বাচন
এদিকে রোকেয়া হলে
নির্বাচন শুরু
থেকে তিনটি ব্যালট
বাক্স দেখার আপত্তি
জানিয়েছিল প্রার্থীরা।
কিন্তু প্রশাসন নয়টির
মধ্যে ছয়টি দেখালেও
বাকি তিনটি দেখাতে
অস্বীকৃতি জানায়।
এ নিয়ে ক্ষোভ
শুরু হয় প্রার্থীদের
মধ্যে। দুপুর সাড়ে
১১টার দিকে প্রার্থীদের
বিক্ষোভের মুখে
ভোটগ্রহণ বন্ধ
করে দেয়া হয়।
এ সময় প্রার্থীদের
মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ
করে। মারধর করা
হয় কোটা আন্দোলনকারীদের ভিপি প্রার্থী
নুরুল হক নূরসহ
তিনজনকে। একপর্যায়ে
লুকোচুরি করা
তিনটি ব্যালট বাক্স
বাইরে এনে ফাঁকা
ব্যালট পায় প্রার্থীরা।
যদিও সেসব ব্যালটে
ছাত্রলীগের প্রার্থীদের
নামে ভোট দেয়া
আছে বলে অভিযোগ
করেছিল তারা। নানা
নাটকীয়তার পর
বিকাল ৩টায় ফের
ভোটগ্রহণ শুরু
হয়। হলটির রিটার্নিং
কর্মকর্তা অধ্যাপক
ফারহানা ফেরদৌসী
জানিয়েছেন, বিকাল
৩টায় তারা আবার
ভোটগ্রহণ শুরু
করেছেন।
‘উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা
২ হাজার ৬০৭টি
ব্যালট পেপার ছিনিয়ে
নিয়ে গেছে। এ
কারণে বেলা সোয়া
১২টা থেকে ভোটগ্রহণ
বন্ধ রাখা হয়েছিল।
অন্য হলের বেঁচে
যাওয়া ব্যালট পেপার
এনে আমরা আবার
ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা
করেছি।’ জানা গেছে,
সকাল ৮টা থেকে
সব হলে একসঙ্গে
ভোট শুরুর কথা
থাকলেও ব্যালট বাক্স
সিলগালা করা
নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে
রিটার্নিং কর্মকর্তা
ও প্রভোস্টের বাদানুবাদে
ভোটগ্রহণ শুরু
হতে এক ঘণ্টা
দেরি হয়। বাম
সংগঠনগুলোর প্যানেল
থেকে এ হলের
জিএস প্রার্থী মনিরা
দিলশাদ অভিযোগ করেন,
সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর
আগে খালি ভোট
বাক্স প্রার্থীদের দেখিয়ে
সিলগালা করার
দাবি জানানো হয়
শিক্ষার্থীদের পক্ষ
থেকে। কিন্তু রিটার্নিং
কর্মকর্তা তাতে
কর্ণপাত করেননি।
‘ভোটবাক্স খালি
দেখালেও তিনি
আমাদের সামনে সিলগালা
করতে চাননি। এ
নিয়ে বাদানুবাদ হয়।
তিনি বারবার আমাদের
বলছিলেন, তোমরা
এমন কিছু করতে
চাইলে আমাকে লিখিতভাবে
জানাও। পরে দু-একজন সাংবাদিককে নিয়ে
আমরা তার কাছে
গেলে তিনি তাদের
সামনে পরে ভোটবাক্স
সিলগালা করেন।’
এদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা
অধ্যাপক ফারহানা
ফেরদৌসী বলেন,
‘ভোটগ্রহণ কক্ষের
পেছনে আমরা একটি
কন্ট্রোল রুম
করেছিলাম। সেখানে
একটি ট্রাঙ্কে ব্যালট
পেপার রাখা ছিল।
ছাত্রীরা অভিযোগ
করছে, এই ব্যালট
পেপারে সিল মারা
ছিল আগে থেকে।
কিন্তু আমি বলছি,
ব্যালট পেপারগুলোতে কোনো
সিল মারা ছিল
না। তারা ব্যালট
পেপারগুলো নিয়ে
যাওয়ায় আমরা ভোটগ্রহণ
স্থগিত করেছি।’ উত্তেজনাকর
পরিস্থিতির মধ্যে
ডাকসুর ভিপি পদে
ছাত্রলীগের প্রার্থী
রেজওয়ানুল হক
চৌধুরী শোভন, এবং
জিএস পদপ্রার্থী গোলাম
রাব্বানী রোকেয়া
হলে গেলে শিক্ষার্থীদের উত্তেজনা নতুন
মাত্রা পায়। এ
সময় সেখানে যান
কোটা, স্বতন্ত্র জোট
ও বাম জোটসহ
অন্যান্য স্বতন্ত্র
প্রার্থীরা। সব
পক্ষের প্রার্থীদের উপস্থিতিতে
রোকেয়া হলে এ
সময় উত্তেজনা বিরাজ
করে। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। প্রাধ্যক্ষের
পদত্যাগ দাবিতে
বিক্ষোভ করে
সাধারণ ছাত্রীরা। অন্যদিকে
ছাত্রলীগ ব্যালট
‘ছিনতাইকারীদের’ প্রার্থিতা
বাতিলের দাবিতে
বিক্ষোভ করে।
ছাত্রলীগ ছাড়া সবার নির্বাচন বর্জন, পুনঃতফসিল চেয়ে ভিসির পদত্যাগ দাবি
নির্বাচনে ভোট
কারচুপি, ছাত্রলীগের
প্রার্থীদের নামে
সিল মেরে রাতে
ব্যালট বাক্স ভর্তি
করা, ব্যালট বাক্সের
লুকোচুরি, প্রার্থীদের
মারধর, আবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে
না দেয়া, ভোটারদের
ভয়ভীতি দেখিয়ে ফেরত
দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে
নির্বাচন বর্জন
করেছে ছাত্রলীগ ছাড়া
অন্যসব প্যানেল ও
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
পুনঃতফসিল ঘোষণা
করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের
দাবি করেন তারা।
ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ
করেছে অনিয়মের দায়
মাথায় নিয়ে ভিসি
অধ্যাপক ড.
মো. আখতারুজ্জামানের পদত্যাগ
দাবিতে। গতকাল
দুপুর ১টায় মধুর
ক্যান্টিনে যৌথ
সংবাদ সম্মেলন থেকে
চারটি প্যানেল ও
কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী
ভোট বর্জনের ঘোষণা
দেয়। এরপর সংবাদ
সম্মেলন করে
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
নির্বাচন বর্জন
করে।
নির্বাচন বর্জন
করেছে জাসদ ছাত্রলীগ
ও ছাত্র মৈত্রীও।
প্রথমে ভোটে অনিয়ম
ও কারচুপির অভিযোগ
তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র
সংসদ (ডাকসু) ও
হল সংসদ নির্বাচন
বর্জনের ঘোষণা
দিয়েছে বাম জোট,
কোটা সংস্কার আন্দোলন,
স্বতন্ত্র জোট,
স্বাধিকার স্বতন্ত্র
পরিষদ ও কয়েকজন
স্বতন্ত্র প্রার্থী।
বাম জোট থেকে
ভিপি প্রার্থী লিটন
নন্দী বলেন, ‘আমরা
এই প্রহসনের নির্বাচন,
জালিয়াতির নির্বাচন
ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান
করছি।’ পুনঃতফসিলের দাবি
জানিয়ে তিনি বলেন,
‘প্রশাসনকে এই
ভোট বাতিল করে
পুনরায় তফসিল ঘোষণা
করতে হবে। যারা
এই ভোট জালিয়াতির
সঙ্গে জড়িত তাদের
শাস্তির আওতায়
আনতে হবে।’ তিনি
বলেন, ‘হলগুলোতে ভোটের
পরিবেশ নেই। ভোট
হতে হবে একাডেমিক
ভবনে।
ভোটগ্রহণে করতে
হবে নতুন কমিটি।’
এ সংবাদ সম্মেলনে
অভিযোগ করা হয়,
সলিমুল্লাহ মুসলিম
হল, শহীদুল্লাহ হল,
হাজী মুহম্মদ মুহসীন
হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট
দিতে বাধা দিয়েছে।
ডাকসুর ভিপি পদে
ছাত্রলীগের প্রার্থী
রেজওয়ানুল হক
চৌধুরী শোভনের উপস্থিতিতে
রোকেয়া হলে নারী
শিক্ষার্থীদের ওপর
হামলা হয় এবং
সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থী
অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের
প্যানেলের ভিপি
প্রার্থী নুরুল
হক নূরের ওপর
হামলা করা হয়
বলে অভিযোগ আসে
এই সংবাদ সম্মেলন
থেকে। সংবাদ সম্মেলনে
কোটা থেকে এজিএস
প্রার্থী ফারুক
হাসান, ছাত্র ফেডারেশনের
জিএস প্রার্থী উম্মে
হাবিবা বেনজীর, স্বতন্ত্র
জোটের ভিপি প্রার্থী
অরণী সেমন্তী খান
এবং স্বাধিকার স্বতন্ত্র
পরিষদের জিএস
প্রার্থী এ
আর এম আসিফুর
রহমান এই সংবাদ
সম্মেলনে ছিলেন।
এর কিছুক্ষণ পরই
আলাদা সংবাদ সম্মেলনে
ছাত্রদলের ভিপি
প্রার্থী মোস্তাফিজুর
রহমান বলেন, ‘আমরা
সার্বিক পরিস্থিতি
বিবেচনা করে
দলকানা প্রশাসনের একপক্ষীয়
আচরণ, রাতভর কুয়েত
মৈত্রী হলে ব্যালটে
ভোট প্রদান, বিভিন্ন
প্রার্থীর ওপর
হামলা ও ভোটারদের
বাধা দেয়াসহ বিভিন্ন
অনিয়মের প্রতিবাদে
ভোট বর্জন করলাম।’
হলে হলে ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণ
এদিকে নির্বাচন শুরুর
পর থেকে হলে
হলে ছাত্রলীগ ভোটারদের
ভোট দিতে নিরুৎসাহিত
করছে বলে অভিযোগ
করেছেন প্রার্থীরা। তারা
বলেন, হলের গেট
থেকে অনাবাসিক ভোটারদের
ফেরত দেয়া হচ্ছে।
লাইনে অযথা দাঁড়িয়ে
থেকে সময় নষ্ট
করতে চাচ্ছে ছাত্রলীগ।
প্রার্থীদের অভিযোগ
মহসীন হল ছাত্রলীগের
সাধারণ সম্পাদক মেহেদী
হাসান সানির নেতৃত্বে
ছাত্রলীগ ভোটারদের
লাইন ‘নিয়ন্ত্রণ’ করায়
অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী
ভোট না দিয়ে
ফিরে গেছেন। নাম
প্রকাশে অনিচ্ছুক
একজন ভোটার বলেন,
‘ছাত্রলীগের অবস্থানের
ভয়ে অনেকেই ভোট
দিতে আসছে না।
ছাত্রলীগ হলের
প্রবেশমুখ থেকে
ভোটার লাইন নিয়ন্ত্রণ
করছে।’ এসব বিষয়ে
জানতে এসে ছাত্রলীগের
হামলার শিকার হন
বাম জোটের ভিপি
প্রার্থী লিটন
নন্দী। এ বিষয়ে
লিটন নন্দী বলেন,
‘হলের কেন্দ্র ছাত্রলীগ
দখল করে আছে।
আমি অভিযোগ জানাতে
গেলে তারা আমার
ওপর হামলা চালায়।’
লিটন নন্দীর অভিযোগের
বিষয়ে জানতে হলটির
প্রাধ্যক্ষ নিজামুল
হক ভূঁইয়া বলেন,
‘ভোটারদের লাইন
মেহেদী হাসান সানি
নিয়ন্ত্রণ করছে
বলে অভিযোগ পেয়েছি।
আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এদিকে শহীদুল্লাহ হল,
এস এম হল,
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান
হল, বিজয় একাত্তর
হল, স্যার এ
এফ রহমান হলেও
ছাত্রলীগ সাধারণ
শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে
প্রবেশে বাধা
দিয়েছে বলে বিক্ষিপ্তভাবে অভিযোগ করেছে
প্রার্থীরা। ডাকসুর
জিএস পদে ছাত্রদলের
প্রার্থী আনিসুর
রহমান খন্দকার অনীক
বলেন, ‘১০টার পর
থেকে শহীদুল্লাহ হলে
সাধারণ শিক্ষার্থীদের গেট
পার হয়ে ভেতরে
প্রবেশ করতে দিচ্ছে
না। এভাবে যদি
নির্বাচন হয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসকে
কলঙ্কিত করা
হবে।’
অনিয়মের জন্য প্রশাসনকে দুষলেন: চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা
এদিকে নির্বাচনের অনিয়মের
অভিযোগ এনে ছাত্রলীগ
ছাড়া অন্যসব ছাত্র
সংগঠনের নির্বাচন
বর্জন, কুয়েত মৈত্রী
হলে সিল মারা
ব্যালট বাক্স পাওয়াসহ
কয়েকটি ঘটনায় নিজে
বিব্রত বলে জানিয়েছেন
চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা
এস এম মাহফুজুর
রহমান। এসব ঘটনার
জন্য হল প্রশাসনকে
দায়ী করেন তিনি।
বিকাল ৪টা ২৪
মিনিটে চিফ রিটার্নিং
কর্মকর্তার কাছে
একটি লিখিত অভিযোগ
জমা দেন নির্বাচন
বর্জন করা বিভিন্ন
প্যানেল ও
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
তারা নির্বাচনে অনিয়মের
কথা উল্লেখ করে
ভোটের ফলাফল ঘোষণা
না করার দাবি
জানান। জবাবে মাহফুজুর
রহমান বলেন, ‘আমি
কিছু বলবো না।
তোমাদের কথা
শুনেছি।’ কর্মী
ও প্রার্থীরা তখন
ক্ষোভ প্রকাশ করে
বলেন, ‘ছাত্রলীগকে জিতিয়ে
দেয়ার দায়িত্ব আপনারা
নিয়ে থাকলে আমাদের
কেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ
করালেন।’ তখন
চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা
বলেন, ‘যেসব ঘটনা
আজ ঘটেছে সেগুলোর
জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে বিব্রত।’ এ
সময় প্রার্থীরা বলেন,
স্যার আপনি বিব্রত
হলে কী হবে?
আপনার অধীনে থেকে
ভোটে কারচুপি হবে
আর আপনি বিব্রত
হয়ে একটি পক্ষকে
জেতানোর কাজ
করবেন, তা কী
করে হয়? জবাবে
মাহফুজুর রহমান
বলেন, ‘আমার কী
ক্ষমতা আছে বলো?
আমি যথাযথ জায়গায়
তোমাদের কথাগুলো
জানাবো।’ কত
সময়ের মধ্যে জবাব
পাওয়া যাবে এমন
প্রশ্ন করলে ডাকসু
নির্বাচনের চিফ
রিটার্নিং কর্মকর্তা
বলন, ‘যার কাছে,
যেখানে যেতে তোমাদের
মন চায়, তোমরা
যাও। আমাকে সময়
দাও। আমার কমিটি
আছে। তাদের সঙ্গে
আলোচনা করতে হবে।’
প্রায় আধা ঘণ্টা
কথা কাটাকাটির পর
রিটার্নিং কর্মকর্তার
কার্যালয় ত্যাগ
করেন প্রার্থীরা।
মামলা করবে ছাত্রলীগ
এদিকে রোকেয়া হলে
ব্যালট ছিনতাই হয়েছে
দাবি করে অভিযুক্তদের
বিরুদ্ধে মামলা
করা হবে বলে
ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ।
গতকাল বিকাল ৪টায়
মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ
সম্মেলন করে
এ ঘোষণা দেয়া
হয়।
এ সময় নেতারা
বলেন, ডাকসু নির্বাচন
প্রশ্নবিদ্ধ করতে
রোকেয়া হলে ‘নাটক’
হয়েছে দাবি করে
পুরো প্রক্রিয়ায় জড়িতদের
বিরুদ্ধে মামলা
করা হবে। বাম
সংগঠনগুলোর প্যানেলের
ভিপি প্রার্থী ছাত্র
ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক
লিটন নন্দী, কোটা
আন্দোলনকারী সাধারণ
শিক্ষার্থী অধিকার
সংরক্ষক পরিষদের
ভিপি প্রার্থী নুরুল
হক নূর ও
জিএস প্রার্থী রাশেদ
খানকে মামলায় আসামি
করা হবে বলে
ছাত্রলীগ নেতারা
জানিয়েছেন। এ
সময় গোলাম রাব্বানী
বলেন, ‘রোকেয়া হলে
তারা ছিল ৪০
জন, আমরা ছিলাম
২ জন। খালি
ব্যালট পেপার নিয়ে
এসেছে সেখানে; সিল
ছিল না। যখন
নূর ধরা খেয়েছে,
তখন অভিনয় করে
ফিট হয়ে পড়ে
গেল। এটা নাটক।’
তিনি বলেন, ‘তারা
যে যে অভিযোগ
করেছে, তার একটিও
প্রমাণ করতে পারেনি।
নাটক সুন্দর করে
মঞ্চস্থ করা
হয়েছিল।
কিন্তু পরে শিক্ষার্থীদের দ্বারা গণপ্রত্যাখ্যানের বিষয়টি আন্দাজ
করতে পেরে তারা
এখন লজ্জার হাত
থেকে বাঁচার জন্য
সেইফ এক্সিট খুঁজছে।’
ছাত্রলীগ সভাপতি
ও ডাকসুতে সংগঠনের
ভিপি প্রার্থী রেজওয়ানুল
হক শোভন সংবাদ
সম্মেলনে বলেন,
‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ
করার জন্য নূর,
লিটন নন্দী ও
ছাত্রদলের সকলে
এক হয়েছে। গতকালই
আমরা আন্দাজ করতে
পেরেছিলাম, তারা
একত্রিত হয়ে
এ কাজটি করবে।’ শোভন
বলেন, ‘রোকেয়া হল
থেকে ব্যালট ছিনতাই
করে নূররা শিক্ষার্থীদের ‘স্বপ্ন ছিনতাই’
করেছে।’ তিনি বলেন,
‘কুয়েত মৈত্রী হলে
যে ব্যালট পাওয়া
গিয়েছে, তার সঙ্গে
হলের মূল ব্যালটের
কোনো মিল নেই।
হলের প্রভোস্টের সিগনেচার
এবং সিলের সঙ্গেও
কোনো মিল ছিল
না।’ ছাত্রলীগের সাধারণ
সম্পাদক পদপ্রার্থী
গোলাম রাব্বানী বলেন,
‘কীভাবে ব্যালট হাতছাড়া
হওয়ার ঘটনা ঘটলো,
পুরো জাতি তা
দেখল। দরজা ভেঙে
আমাদের শিক্ষিকাদের লাঞ্ছিত
করে তারা সেটা
বাইরে নিয়ে গেছে।
এই ব্যালটগুলো ভুয়া
ব্যালট, মূল ব্যালটের
সঙ্গে এর মিল
নেই।
যারা ভোট বর্জনের
কথা বলছেন তারা
নাটকটি সুন্দর করে
মঞ্চস্থ করতে
চেয়েছিলেন। তাদের
প্রতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন নেই
বুঝে তারা একটি
সেফ এক্সিট খুঁজছিল।’
কুয়েত মৈত্রী হলসহ
বিভিন্ন ঘটনায়
ভোট দিতে না
পারা এবং বাধা
দেয়া হয়েছে বলে
সাংবাদিকরা প্রশ্ন
করলে রাব্বানী বলেন,
‘কোন হলে কাকে
বাধা দেয়া হয়েছে
সুনির্দিষ্টভাবে বলতে
হবে। আমরা শতভাগ
ভোট কাস্ট হোক
সেটা চেয়েছি। সবাই
যেন ভোট দিতে
পারে সেজন্য আমরা
আন্তরিক ছিলাম।
যেখানেই অভিযোগ
শুনেছি, আমরা ছুটে
গিয়েছি এবং সমাধানের
চেষ্টা করেছি।’
নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি: পর্যবেক্ষণকারী শিক্ষকরা: এদিকে
ডাকসু নির্বাচনে পর্যবেক্ষণকারী শিক্ষকরা এক
বিবৃতিতে জানিয়েছেন
নির্বাচন সুষ্ঠু
হয়নি। গতকাল সন্ধ্যায়
গণমাধ্যমে এ
বিবৃতি দেন শিক্ষকরা।
বিবৃতিতে তারা
বলেন, আজ ১১ই
মার্চ বহুল প্রতীক্ষিত
ঐতিহাসিক ডাকসু
নির্বাচন অনুষ্ঠিত
হলো। ডাকসু নির্বাচন
নিয়ে তফসিল ঘোষণার
সঙ্গে সঙ্গে এই
নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আমাদের
সাধারণ শিক্ষকদের মধ্যেও
ব্যাপক আগ্রহের সঞ্চার
হয়। আমরা কয়েকজন
শিক্ষক নিজস্ব উদ্যোগে
স্বেচ্ছাসেবামূলক পর্যবেক্ষক
হিসেবে দায়িত্ব পালন
করার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চিফ রিটার্নিং
অফিসার মৌখিকভাবে অনুমতি
দেন এই বলে
যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
হিসেবে এই দায়িত্ব
চাইলেই পালন করতে
পারবো। আমরা সকাল
নয়টা থেকে বিকাল
দুইটা পর্যন্ত ছাত্রদের
হল এসএম হল,
সূর্যসেন হল,
মহসিন হল, এফ
রহমান হল, শহীদুল্লাহ
হল এবং ছাত্রীদের
রোকেয়া হল এবং
কুয়েত মৈত্রী হল
পরিদর্শন করি।
আমরা কুয়েত মৈত্রী
হল থেকে আমাদের
পর্যবেক্ষণ শুরু
করি কারণ, আমরা
শুরুতেই জানতে
পারি এই হলে
ভোটদানে অনিয়মের
কথা। আমরা জানতে
পারি, ভোট গ্রহণ
শুরু হবার আগে
ছাত্রীরা নির্বাচনের
দায়িত্বে থাকা
শিক্ষিকাদের কাছে
ভোটদানের পূর্বে
শূন্য ব্যালট বাক্স
দেখতে চান কিন্তু
তাদের এই ন্যায্য
দাবি অগ্রাহ্য করা
হয়। এতে ছাত্রীরা
বিক্ষুব্ধ হয়ে
উঠে এবং এক
পর্যায়ে কেন্দ্রের
পাশের কক্ষ থেকে
একটি বিশেষ ছাত্র
সংগঠনের পক্ষে
পূরণ করা প্রচুর
ব্যালটপেপার উদ্ধার
করে। সেগুলোর বেশ
কিছু আমরা শিক্ষকরাও
দেখতে পেয়েছি। এরকম
অবস্থায় স্বাভাবিক
ভাবেই সেখানে ভোট
গ্রহণ স্থগিত হয়ে
যায়। এই ঘটনায়
প্রভোস্টের সঙ্গে
যোগাযোগ করতে
সমর্থ না হলেও
আমরা রিটার্নিং অফিসারদের
লজ্জিত ও মর্মাহত
দেখতে পাই। এক
পর্যায়ে রোকেয়া
হলে গোলযোগের খবর
পাই। সেখানে গিয়ে
জানতে পারি, সকালের
কুয়েত মৈত্রী হলের
অভিজ্ঞতার পর,
সরকারি ছাত্রসংগঠনের বাইরের
নানান প্যানেলের শিক্ষার্থীরা
ভোটকেন্দ্রের পাশের
রুমে ব্যালট পেপারের
সন্ধান পান এবং
সেগুলোকে দেখানোর
জন্য কর্তৃপক্ষকে বাধ্য
করেন। কিন্তু সেগুলো
ছিল সাদা ব্যালট
পেপার। এরপর পরিস্থিতির
অবনতি ঘটে এবং
সরকারি ছাত্র সংগঠনের
নেতা-কর্মীরা বিরোধীদের
ওপর চড়াও হয়।
বিরোধীপক্ষের কয়েকজন
আহত হন।
উভয় পক্ষের উত্তেজনায়
এরকম অনেক অপ্রীতিকর
ঘটনা ঘটেছে রোকেয়া
হলে, যার নিন্দা
জানাই আমরা। এতে
আরো বলা হয়,
ছাত্রদের হলের
ভেতরে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত
হতে দেখা যায়।
তবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে
কতকগুলো অনিয়ম
চোখে পড়ে। ক.
ভোটারের আইডি
চেক করার ক্ষেত্রে
ছাত্রলীগের সদস্যরাই
বেশিমাত্রায় ভূমিকা
রেখেছেন এবং
অনাবাসিক ছাত্রদের
ভোট দিতে বাধাপ্রদান
ও নিরুৎসাহিত করেন
খ. ছাত্রলীগের কর্মীরা
নির্বিঘ্নে চলাফেরা
করলেও, অন্য প্যানেলের
প্রার্থী ও
কর্মীরা ভোটকেন্দ্রের
বাইরে বা ভোটারের
সারির আশেপাশে অবস্থানগ্রহণ
করতে বাধাগ্রস্ত হয়েছেন
গ. ভোটকেন্দ্রের অব্যবহিত
বাইরে কৃত্রিম জটলা
করে রেখেছেন ছাত্রলীগের
কর্মীরা যাতে
ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া
সুষ্ঠু না হয়
এবং বাকিরা ভোটদানে
নিরুৎসাহিত হয়
ঘ. অনেকক্ষেত্রে বুথের
ভেতরে আমরা সময়
গণনা করে দেখেছি
৫ থেকে ২৩
মিনিট পর্যন্ত সময়
ব্যয় করেছে কোনো
কোনো ভোটার যা
ইচ্ছাকৃত মনে
হবার কারণ রয়েছে
খ. ভোট চলাকালেই
রোকেয়া হলের সামনে
একটি সংগঠনের ২০/২৫ জন কর্মীকে
বাইকের হর্ন বাজিয়ে
শোডাউন করতে দেখা
গেছে যা আচরণবিধির
লঙ্ঘন।
বিবৃতিতে শিক্ষকরা
বলেন, একটি বড়
অসঙ্গতি মনে
হয়েছে, ব্যালট পেপারে
কোনো সিরিয়াল নাম্বার
ছিল না। ৪৩
হাজার ভোটারের একটি
নির্বাচনের ব্যালটপেপারে
সিরিয়াল নম্বর
না থাকাটা আমাদের
কাছে বিস্ময়কর মনে
হয়েছে। কারণ এতে
নির্বাচনের ফলাফলে
গুরুতর অনিয়ম ঘটানো
অনেক সহজ হয়ে
যায়। কোন হলে
কোন সিরিয়াল গেল,
তাও ট্র্যাক রাখার
উপায় থাকার কথা
না। বিবৃতিতে বলা
হয়, আমরা এটাই
বলতে চাই এই
বহুল প্রতীক্ষিত ডাকসু
নির্বাচনের অনিয়মের
ঘটনাগুলো আমাদের
খুবই লজ্জিত করেছে।
এই ঘটনা করে
পরিচালিত পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের
ভাবমূর্তিকে চরমভাবে
বিনষ্ট করেছে। এতে
শিক্ষার্থী ও
শিক্ষক সম্পর্কের অবনতি
ঘটেছে যা সার্বিকভাবে
অ্যাকাডেমিক পরিবেশ
বিঘ্নিত করবে।
এত বছর পরে
অনুষ্ঠিত এই
ডাকসু নির্বাচন সফলভাবে
না করতে পারার
ব্যর্থতার দায়ভার
প্রশাসন থেকে
শুরু করে সাধারণ
শিক্ষক সবার এবং
এই ব্যর্থতা সমগ্র
শিক্ষক সম্প্রদায়ের নৈতিকতার
মানদণ্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ
করেছে। আমরা চাই
এই ব্যর্থতার একটি
সুষ্ঠু তদন্ত হোক
এবং দায়ী ব্যক্তিদের
চিহ্নিত করে
শাস্তির আওতায়
আনা হোক। সেই
সঙ্গে এই নির্বাচন
স্থগিত ঘোষণা করে
অবিলম্বে নতুন
নির্বাচনের তফসিল
ঘোষণা করা হউক।
বিবৃতিদাতা শিক্ষকরা
হলেন- গীতি আরা
নাসরীন, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ
ও সাংবাদিকতা বিভাগ,
কামরুল হাসান, অধ্যাপক,
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ,
ফাহমিদুল হক,
অধ্যাপক, গণযোগাযোগ
ও সাংবাদিকতা বিভাগ,
মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন
খান, সহযোগী অধ্যাপক,
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
বিভাগ, রুশাদ ফরিদী,
সহকারী অধ্যাপক, অর্থনীতি
বিভাগ, কাজী মারুফুল
ইসলাম, অধ্যাপক, উন্নয়ন
অধ্যয়ন বিভাগ, তাহমিনা
খানম, সহকারী অধ্যাপক,
ব্যবস্থাপনা বিভাগ
ও অতনু রব্বানী,
সহযোগী অধ্যাপক, অর্থনীতি
বিভাগ।