পাইকগাছায় কপোতাক্ষে ব্যাপক ভাঙ্গন ২০ টি বাড়ীঘর সহ রাস্তা বিলিনের পথে

মোঃ মনিরুল ইসলাম, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ
খুলনার পাইকগাছায় রাড়ুলী ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদের ভাঙ্গন আবারো ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে নদী গর্ভে চলে যেতে বসেছে ২০ টি ঘর। ঘর বাড়ী হারিয়ে অন্যত্র চলে গেছে আরো ৭০ টি পরিবার। ভাঙ্গন এলাকার একমাত্র চলাচলের রাস্তাটি তিন ভাগের দুই ভাগ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জোয়ারের পানি ঠেকানোর জন্য নেই কোন বাঁধ। সেকারণে আমাবশ্যা ও পূর্নিমায় জোয়ারের পানি বাড়লেই প্লাবিত হয়ে ক্ষতি হচ্ছে গাছপালা ফসলি জমি ও কাঁচা ঘরবাড়ি।

নদীর পাড়ের জেলে পরিবারের ভূধর বিশ্বাস জানান আমার বাবা দাদারা ১শ বছর ধরে এখানে বাস করে আসছে। নদীর কূলে ১শ থেকে দেড়শ বিঘা জমি ছিল। সেখানে দেড়শটি জেলে পরিবার বসবাস করতো। ভাঙ্গনের ফলে এখান থেকে ৭০ টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তার কেহ জমি কিনে অন্যত্র বাড়ী করেছে কেউবা রাস্তার পাশে ও অনেকেরই গুচ্ছগ্রামে ঠাই হয়েছে।

একই এলাকার লিপিকা বিশ্বাস জানান রাতে জোয়ার আসলে ভয় হয় বাচ্চাদের নিয়ে রাত জেগে বসে থাকি কখননা ঘরবাড়ি নদী গর্ভে নিয়ে যায়। ভাটা হলে ঘুমাতে যাই। রাড়ুলী ৩নং ওয়ার্ডের ফরিদা বেগম বলেন আমাদের বাড়ি ছাড়া নদী প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ছিলো জেলে পল্লীর পরেই ছিলো আমাদের বসবাস। আমরা এখানে প্রায় ৪০ টি পরিবার বসবাস করতাম জেলে পরিবারের পর আমরা এখন নদীর কিনারায় বাস করছি। যেকোন সময় বাড়ী ঘর নদী গর্ভে চলে যাবে। তেমন কোন টাকা নাই জমি কিনে অন্যত্র বাড়ী করবো।

সরকার যদি নদীর ওপারে জেগেউঠা চরে যদি আমাদের ঘর বাঁধার জায়গা দিতেন তাহলে আমরা ছেলে মেয়েদের নিয়ে বসবাস করতে পারতাম। রাড়ুলী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য ইলিয়াস হোসেন বলেন আমাবশ্যা ও পূর্নিমার পানি ঠেকানোর জন্য নিজস্ব অর্থায়নে ২লাখ টাকা দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে ধান গুলো
বাঁচিয়েছি। অতিরিক্ত পানি বাড়লে ফসলাদি বাঁচানো সম্ভব হবে না। রাড়ুলী ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ বলেন কপোতাক্ষ নদ প্রায় ৪০ বছর যাবৎ ভাঙ্গছে।

এখানে সরকার ভাঙ্গন রোধে তেমন কোন বরাদ্ধ দেননি। আমি গত উপজেলা সমন্নয় সভায় উপস্থাপন করে ছিলাম আবারও দু একের ভিতর সভা হবে সেখানে উপস্থাপন করবো এবং যাতে খুব তাড়াতাড়ি ভাঙ্গন রোধে বরাদ্ধ পাওয়া যায় তার জন্য আমাদের এমপি মহাদ্বয়ের সাথে কথা বলবো। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাজু আহমেদ বলেন আমাদের উর্ধতন কতৃপক্ষ ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন শুধু রাড়ুলী মালোপাড়া না বোয়ালিয়া মালোপাড়া ও রামনাথ পুরের ভাঙ্গন এলাকা জরিপ করে কাগজ পত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, বরাদ্ধ এলেই কাজ শুরু হবে।