বাবার ইচ্ছা পূরনে বউ ছেলে বউ আনলেন হেলিকপ্টার করে।

মোঃজাকির হোসেন (বাসাইল,প্রতিনিধি): ছেলে জন্মের পর থেকে বাবার ইচ্ছা ছিল হেলিকপ্টারে করে ছেলের বউ আনবেন। বিষয়টি প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনরা শোনার পর বিশ্বাস করেননি।

বাবার সেই ইচ্ছা পূরণ করতেই রোববার বিকালে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পোড়াবাড়ী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল বাউসাইদ গ্রামে হেলিকপ্টারে করে নববধূ নিয়ে আসেন কৃষক রাসেল মিয়া। এই বিয়েকে কেন্দ্র করে বিয়েবাড়িসহ আশপাশের গ্রামজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। ছিল বাদ্যের ঝঙ্কার, হরেকরকম খাবারের আয়োজন।

সরেজমিন জানা যায়, বাউসাইদ গ্রামের কৃষক মহির উদ্দিনের একমাত্র ছেলে রাসেল মিয়ার সঙ্গে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বাটাজোর গ্রামের মুন্নু খার মেয়ে মিতু আক্তারের আড়াই মাস আগে কাবিন হয়। রাসেল মিয়া কৃষিকাজ করেন। দুপুরে ছেলের বাড়ির পাশে কৃষিজমিতে হেলিকপ্টার আসে। পরে বর হেলিকপ্টার নিয়ে বাটাজোর যান। সেখান থেকে কনে নিয়ে বিকালে ফিরে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

বরযাত্রীরা দুটি প্রাইভেটকার ও একটি বাসে চড়ে কনের বাড়ি গেলেও বর যান হেলিকপ্টারে চড়ে। প্রত্যন্ত গ্রামে হেলিকপ্টার আসাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ; যা প্রশংসা কুড়িয়েছে আগত সবার। ব্যতিক্রমধর্মী এ আয়োজন সামাল দিতে উপস্থিত ছিল স্থানীয় পুলিশের টিম।

৮০ বছরের বৃদ্ধ জিন্নাত আলী বলেন, আমার বয়সেও এমন বিয়ে দেখিনি। হেলিকপ্টারে করে বউ আনে এটা প্রথম দেখলাম। রাসেল এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

কনে মিতু আক্তার বলেন, আমি কখনো কল্পনাও করিনি আমার বর আমাকে হেলিকপ্টারে করে তার বাড়ি নিয়ে যাবে। এতে আমি খুব খুশি।

বর রাসেল মিয়া বলেন, বাবার ইচ্ছা পূরণ করতেই হেলিকপ্টারটি ভাড়া আনা হয়। টাঙ্গাইল থেকে রওনা দিয়ে ময়মনসিংহের বাটাজোর থেকে নববধূকে নিয়ে ফিরে এসেছি।

রাসেলের বাবা মহিউদ্দিন বলেন, আমার অনেক সাধনার পর ছেলেসন্তান হয়েছে। তারপর থেকে আমার ইচ্ছা ছিল ছেলেকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করাব। সেই ইচ্ছা পূরণ করতেই এ আয়োজন। এক লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে দুই ঘণ্টার জন্য হেলিকপ্টারটি ভাড়া করা হয়েছিল। হেলিকপ্টারটি চারজন যাত্রী বহন করেছে।

ছেলের চাচা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর সালাউদ্দিন হায়দার বলেন, অজপাড়া গাঁয়ে হেলিকপ্টার এটিও ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি অংশ। আমি অনেক বিয়ের বরযাত্রী গিয়েছি তবে আজকের মতো এত আনন্দ পাইনি। হেলিকপ্টারে চড়ে এ বিয়েকে কেন্দ্র করে আমাদের গ্রামে সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। বড় বড় অনুষ্ঠানেও এত লোকজন আসে না। পশ্চিম টাঙ্গাইলে এই প্রথম হেলিকপ্টারে করে কেউ বিয়ে করল।

নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা টাঙ্গাইল সদর থানার এসআই মো. মনিরুজ্জামান মুন্সি বলেন, বরপক্ষ নিরাপত্তার জন্য এক সপ্তাহ আগে আবেদন করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।