রাজারহাটে জেলা আ.লীগের সহ সভাপতি লাঞ্চিত সাবেক উপজলা চেয়ারম্যান সহ ১৫জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

ইব্রাহিম আলম সবুজ রাজারহাট কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজারহাট সরকারী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় হল রুমে উপজেলা আ.লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা চলাকালীন সময়ে কুড়িগ্রাম জেলা আ.লীগের সভাপতি আলহাজ্ব জাফর আলীর উপস্থিতিতে জেলা আ.লীগের সহ সভাপতি আকবর আলী সরকার কে লাঞ্চিত করা হয়। এঘটনায় রাজারহাট উপজেলার তৃণমূল আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাচাই ও কেন্দ্রীয় আ.লীগের কার্যালয়ে তালিকা প্রেরণের জন্য উপজেলা আ.লীগ কর্তৃক এই বর্ধিত সভার আহবান করা হয়। কুড়িগ্রাম জেলা আ.লীগের সভাপতি আলহাজ্ব জাফর আলী সহ অন্যান্য নেতাদের সাথে জেলা আ.লীগের সহ সভাপতি আকবর আলী সরকার সভাস্থলে আসেন। তিনি তার বক্তব্যে জেলা আ.লীগের সভাপতি আলহাজ্ব জাফর আলী কে জিজ্ঞাসা করেন গত ১২ই অক্টোবর কুড়িগ্রাম জেলা সার্কিট হাউজে জেলা আ.লীগের বর্ধিত সভায় রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সাখাওয়াত হোসেন সফিক রাজারহাট উপজেলা আ.লীগের বিতর্কিত কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহবায়ক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন সভাপতি(আপনাকে) এবং সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু কে। অথচ আপনি দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতার নির্দেশ অমান্য করে জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে বিতর্কিত উপজেলা আ.লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় যোগদিয়ে ইউপি নির্বাচনের প্রার্থী বাচাইয়ে আলোচনা করছেন যা দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুনুর মোঃআখতারুজ্জামান এর নির্দেশে তার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী আকবর আলী সরকারের উপর ঝাপিয়ে পড়ে তাকে শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করেন। উপস্থিত নেতাকর্মী এগিয়ে এলেও তাদেরও শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করেন। সন্ত্রাসী বাহিনীর আঘাতে উপজেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান জেলা আ.লীগের সদস্য আলহাজ্ব আব্দুস সালাম চাষী ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ আহত হন। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে আবুল কালাম আজাদ রাজারহাট থানায় উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুনুর মোঃআখতারুজ্জামান কে প্রধান আসামি করে ১৫জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন।

এবিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা আ.লীগের সহ সভাপতি আকবর আলী সরকার বলেন, বিশেষ বর্ধিত সভায় আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে জেলা আ.লীগের সভাপতির উপস্থিতিতে সুপরিকল্পিতভাবে আমাকে লাঞ্চিত করা হলো। সত্য বলা কি আমার অপরাধ ছিলো। এই ঘটনার শাস্তি দাবি জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আ.লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা আপার কাছে।

অভিযোগের বিষয়ে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ রাজু সরকার সত্যতা স্বীকার করে বলেন বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এবিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন,গতকালের ঘটনাটি শুনেছি খুবই দুঃখজনক ঘটনা।
আমি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
কেন্দ্রীয় নেতার নির্দেশ অমান্য করে জেলা আ.লীগের সভাপতি রাজারহাটে সভা করতে গিয়েছেন। যাদের নিয়ে সভা করেছেন তাদের অনেকেই স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সদস্য আর যাদের লাঞ্চিত করা হয়েছে তারাই প্রকৃত আওয়ামীলীগার। বিষয় টি আমি রংপুর বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সফিক ভাই ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড.হাসান মাহমুদ ভাইকে ফোনে জানিয়েছি তারা রাজারহাট উপজেলা আ.লীগের বিতর্কিত কমিটির বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। এর আগেই ১২ই অক্টোবর কুড়িগ্রাম সার্কিট হাউজে জেলা আ.লীগের বর্ধিত সভায় রাজারহাটের বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত করে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে আহবায়ক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন সাখাওয়াত হোসেন সফিক ভাই কিন্তু সভাপতি তা না মেনেই রাজারহাটে মিটিংয়ে যান। মিটিংয়ে তার অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন সভাপতি আমাকে মিটিংয়ে উপস্থিত থাকার জন্য বলেছে আমি তাকে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ অমান্য করে মিটিংয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানাই।