৭ দিনে নদী উধাও

এই আমার দেশ ডেস্ক : কলম্বিয়ায় মাত্র সাত দিনে একটি নদী উধাও হয়ে গেছে। কাউকা নামের এই নদীটি কলম্বিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী। এটির দৈর্ঘ্য এক হাজার ৩৫০ কিলোমিটার। এটি ম্যাগডালেনা নদীর সঙ্গে মিশেছে।

কাউকার তীরে বাস করে প্রায় এক কোটি মানুষ, যা কলম্বিয়ার মোট জনসংখ্যার ৫ ভাগ। গত বছরের মে’তে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছিল কলম্বিয়ায়। নদীর একটা জায়গায় এক বিরাট বাঁধ দেয়া হচ্ছিল। এ বাঁধ নির্মাণের সময় সেখানে একটি বড় ত্রুটি দেখা দেয়। সেটির কারণে ভাটিতে হঠাৎ বন্যা হয়। হাজার হাজার মানুষ সেই বন্যায় তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হন।

নিন্তু এরপর যা ঘটে তা বেশ নাটকীয়। এ বিরাট নদী হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাউকা নদীর পানি এতটাই শুকিয়ে গেছে যে, স্থানীয় হাইড্রোলজিস্টরা বলছেন তারা এই নদীর পানিও আর মাপতে পারছেন না।

এর কারণ হিসেবে জানা যায়, কলম্বিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পয়ের্তো ভালডিভিয়া এবং ইটুয়াংগো শহরের কাছে একটা বিরাট হাইড্রোলিক-ইলেকট্রিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে করা হচ্ছে। সেটির জন্য কাউকা নদীতে বাঁধ দেয়া হচ্ছে। গেল বছরের ৭ মে সেখানে পানি ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্য তৈরি টানেলের কাছে একটি বিরাট খাদ তৈরি হয়। একই সঙ্গে ভূমিধস শুরু হয়। ফলে টানেলের মুখগুলো বন্ধ হয়ে যায়।

পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বাঁধের অপর পাশে চাপ বাড়তে থাকে। ফলে পুরো জলাধার পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। ১০ দিন পর প্রচণ্ড পানির চাপে একটি টানেলের মুখ আবার খুলে যায়। এরপর এতটাই তীব্র বেগে ওই টানেল দিয়ে পানি ছুটতে থাকে যে, তা ব্যাপক বন্যা তৈরি করে।

পনি কমতে থাকায় এ বছরের ১৬ জানুয়ারি অপরপাশে অবমুক্ত করার পনির পরিমাণ নেমে আসে প্রতি সেকেন্ডে মাত্র ৩৯৫ কিউবিক মিটার। আর ৫ ফেব্রুয়ারি একদম বন্ধ হয়ে যায় পানির স্রোত। এ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যায় কাউকা নদী।