২৬ জেলায় পেট্রোল পাম্প ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন, খোলা বাজারে পেট্রোল একশত টাকা

রাজশাহী ব্যুরোঃ ১৫ দফা দাবিতে রাজশাহীতে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে পেট্রলপাম্প ধর্মঘট। প্রথম দিনের তুলনায় আজ যানবাহন চলাচলের সংখ্যা আরও কমে এসেছে। ফলে দেখা দিয়েছে জন সাধারণের দুর্ভোগ। খোলা বাজারে পেট্রোল ৮৬ টাকার নিচ্ছে ১০০ টাকা। পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা অবরোধের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এই অচলাবস্থা না কাটলে সারাদেশের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।

বিভাগ তিনটির মোট ২৬ জেলায় একযোগে কর্মবিরতিতে রয়েছেন মালিক-শ্রমিকরা। ২৬ জেলার পেট্রোল পাম্প থেকে তেল বিক্রি বন্ধ রয়েছে। ডিলাররা ডিপো থেকে জ্বালানি তেল তুলছেন না, ট্যাংকলরির মালিক-শ্রমিকরা তেল পরিবহণ করছেন না।

ফলে বিপাকে পড়েছেন যানবাহনের মালিক ও যাত্রীরা। কিছু কিছু স্থানে খুচরা হিসেবে সামান্য তেল বিক্রি হলেও তার দাম দ্বিগুণ বা তারও বেশি। ফলে খুব জরুরি না হলে তেল কিনতে পারছেন না গাড়ির মালিক ও চালকরা। সবচেয়ে বিপদে পড়েছেন সেই ব্যবসায়ীরা যারা কাঁচা সবজি কিনে শহরে পাঠান তারা।

দাবিগুলো হলো- জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে সাড়ে ৭ শতাংশ করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট নাকি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান-বিষয়টি সুনিন্দিষ্টকরণ, প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংক লরি শ্রমিকদের পাঁচ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বিমা প্রথা প্রণয়ন, ট্যাংক লরির ভাড়া বাড়ানো, পেট্রোল পাম্পের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পে অতিরিক্ত পাবলিক টয়লেট, জেনারেল স্টোর ও ক্লিনার নিয়োগের বিধান বাতিল, সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক পেট্রোল পাম্পের প্রবেশ দ্বারের ভূমির জন্য ইজারা গ্রহণের প্রথা বাতিল, ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতীত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কর্তৃক আন্ডার গ্রাউন্ড ট্যাংক পাঁচ বছর অন্তর বাধ্যতামূলক ক্যালিব্রেশনের সিদ্ধান্ত বাতিল, ট্যাংকলরি চলাচলে পুলিশি হয়রানি বন্ধ, সুনিন্দিষ্ট দপ্তর ব্যতীত সরকারি অন্যান্য দাপ্তরিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ডিলার বা এজেন্টদের অযথা হয়রানি বন্ধ, নতুন কোনও পেট্রোল পাম্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জ্বালানি তেল মালিক সমিতির ছাড়পত্রের বিধান চালু, পেট্রোল পাম্পের পাশে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে জেলা প্রশাসকের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক ও বিভিন্ন জেলায় ট্যাংকলরি থেকে জোরপƒর্বক পৌরসভার চাঁদা গ্রহণ বন্ধ করা।

উল্লেখ্য গেল ২৬ নভেম্বর দুপুরে জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন এবং ট্যাংক লরি ভাড়া বাড়ানোসহ ১৫ দফা দাবি ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ট্যাংক লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। পরে বেধে দেয়া সময়ে দাবি না মানায় তারা ধর্মঘটে যায়।