২১ আগষ্ট আ.লীগের সভামঞ্চ লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইকবাল গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইকবাল হোসেন ওরফে জাহাঙ্গীর ওরফে সেলিমকে রাজধানীর দিয়াবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২১ আগষ্টে সেদিন আওয়ামী লীগের সভামঞ্চে গ্রেনেড ছুড়েছিল ইকবাল। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) দাবি করছেন যে, গ্রেফতারকৃত আসামী ইকবাল হরকাতুল জিহাদের সদস্য এবং এক সময় তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।

আজ মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে র‍্যাব বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেছেন।

র‌্যাবের ডিজি বলেন, গত ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত সেলিমকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে রাজধানীর দিয়াবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইকবাল হােসেন ওরফে ইকবাল ওরফে জাহাঙ্গীর ওরফে সেলিমের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে।

র‌্যাব কর্তৃক আরও জানা যায়, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় অংশ নেওয়ার পর ঝিনাইদহে চলে যান সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইকবাল। পরবর্তীতে কয়েকমাস বাড়িতে থাকার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি কখনো নিরাপত্তাকর্মী, কখনো রিকশাচালক, আবার কখনো মেকানিক হিসেবে নিজের নাম পরিবর্তন করে কাজ করেছিলেন। এরপর ২০০৮ সালে তিনি দেশত্যাগ করেন। প্রবাসে আত্মগােপন থাকা অবস্থায় প্রথমে সেলিম এবং পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর নাম ধারণ করেন। পরবর্তীতে এক পর্যায়ে তিনি প্রবাসে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হলে তাকে ২০২০ সালের শেষের দিকে দেশে ফেরত পাঠানাে হয়েছিল এবং দেশে ফেরত এসে জঙ্গি ইকবাল আত্মগােপনে থেকে সমমানদের সঙ্গে পুনরায় যােগাযােগ স্থাপন করেন।

র‍্যাব বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) বলেন, ইতোমধ্যেই গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘটেছে। বিজ্ঞ আদালতে দীর্ঘ সাত বছরে সর্বমােট ২২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘােষণা করা হয়েছে। এতে যুগান্তকারী এই রায়ে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে।

গ্রেনেড হামলা সম্পর্কে গ্রেফতারকৃত আসামী ইকবাল জানান, মুফতি হান্নানের নির্দেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণ করেন তিনি। মুফতি হান্নান হামলা পরিচালনার জন্য তাকে গ্রেনেড সরবরাহ করেছিল। হামলা চলাকালীন সময়ে তিনি নিজেই মঞ্চকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়েছিল এবং ঘটনার পর তিনি ঝিনাইদহে গমন করেন এবং সেখানে আত্মগােপনে থাকেন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য যে, ঘটনা পরবর্তী র‌্যাব সাজাপ্রাপ্ত আসামি জঙ্গি ইকবাল হােসেনকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে একাধিক স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। ২০০৮ সালে জঙ্গি ইকবালকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে ঝিনাইদহে তার নিজ বাড়িতে এবং পরবর্তীতে গাজীপুর ও সাভারসহ বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনাও করেছিলেন র‌্যাব।