১৯৭১ঃ চুয়াডাঙ্গা মুক্তির যুদ্ধ

মেসবাহ্ উল হক

 

এসেছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালে ২৬৫ দিনের যুদ্ধ শেষে এই মাসের ১৬ তারিখে দেশ শত্রুমুক্ত হয়। তাই ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস। তবে আমার কাছে বিজয় দিবস ৭ ডিসেম্বর যেদিন শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার রাতভর আক্রমণের মুখে আমার প্রিয় চুয়াডাঙ্গা শত্রুমুক্ত হয়। আমি গর্বিত সেদিন প্রিয় সহযোদ্ধাদের পাশাপাশি আমিও চুয়াডাঙ্গা মুক্তির সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম।

উল্লেখ্য এর মাত্র দশ দিন আগে ২৬ নভেম্বর রাতে এফএফ ও বিএলএফ (মুজিব বাহিনী) এর সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিযোদ্ধার দল নিয়ে আমরা চুয়াডাঙ্গার ওপর এক ব্যপক অন্তর্ঘাতমূলক আক্রমণ চালাই। সেদিন মহকুমা সদরের সেনা ও রাজাকার ক্যাম্পের ওপর একাদিক্রমে আক্রমণ চালানো, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছন্ন করা সহ শহরের প্রধান পেট্রোল পাম্পটি ধ্বংস করি। মহকুমা শান্তি কমিটির অন্যতম শীর্ষ নেতা (বিএনপির সাবেক এমপি) মোজাম্মেল হক ছিলেন ওই পেট্রোল পাম্পটির মালিক। উল্লেখ্য বিএলএফ এর ডেমোলিশন এক্সপার্ট বা বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি সেদিনের ওই অপারেশনের জন্য মোট বাইশ পাউন্ড পরিমান পিইকে-১ বিস্ফোরকের পাঁচটি চার্জ তৈরি করি যার চারটি সেদিন ব্যবহৃত হয়েছিলো। ওই বিস্ফোরক বহনে সেদিন আমার সাথে ছিলো মতিয়ার রহমান মন্টু। পেট্রোল পাম্পের বিপরীত দিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিস্ফোরকের চার্জটি সে-ই লাগায়।

যাহোক চুয়াডাঙ্গার ওপর ওই ব্যপক হামলার ফলে পাকিস্তানী দখলদার বাহিনী সহ তাদের স্থানীয় দালাল, রাজাকার ও অবাঙালি প্যারামিলিশিয়া বাহিনীর মনে চরম ভীতি সৃষ্টি হয়। চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শত্রু বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট এক অর্থে সেদিনের পর হতেই মহকুমা সদরে তাদের মূল ঘাঁটিতে গুটিয়ে আসতে শুরু করে। এর মাঝে শুরু হয় চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী অঞ্চল সহ বিভিন্ন স্থানে শত্রুসেনার ওপর মুক্তিযোদ্ধাদের উপুর্যুপরি আক্রমণ। সীমান্তের এপার-ওপারে গুলি বিনিময় তখন এক নিয়মিত ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়। এমতাবস্থায় ৩ ডিসেম্বর বিকেলে উত্তর-পূর্ব ভারতের এগারোটি বিমান ঘাঁটিতে পাকিস্তানী বিমান বাহিনী অতর্কিতভাবে আক্রমণ করে। তার প্রতিক্রিয়ায় ভারত সেদিন সন্ধ্যায়ই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে এবং তখন সেই ঘোষনার সাথেসাথে মুক্তিযুদ্ধের চুড়ান্ত পর্যায়ের সূত্রপাত ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে চুয়াডাঙ্গা মহকুমা সদর মুক্তির লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন স্থানীয় ইউনিট তাদের শক্তি সংহত করে চুয়াডাঙ্গার ওপর সমন্বিত আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়। উল্লেখ্য শুরু হতে চুয়াডাঙ্গার মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন গ্রুপে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করলেও আগস্ট মাস হতে বিহারের চাকুলিয়া সহ অন্যত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এফএফ নামে পরিচিত মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে উত্তর প্রদেশের দেরাদুনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিএলএফ বা মুজিব বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে একত্রে ও সমন্বিতভাবে যুদ্ধ শুরু করে।

আলমডাঙ্গা লাল ব্রীজ বধ্যভূমি

যাহোক চুয়াডাঙ্গার ওপর সমন্বিত আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়ার প্রেক্ষিতে ডিসেম্বরের ৪ তারিখ হতে পরবর্তী তিন দিন ধরে মহকুমার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের অপ্রতিরোধ্য আক্রমনে পলায়নপর দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী তল্পিতল্পাসহ পিছু হটে চুয়াডাঙ্গায় জড়ো হতে শুরু করে। ৫ তারিখের মধ্যে অধিকাংশ সীমান্তবর্তী অবস্থান ত্যাগ করে পাকিস্তানি বাহিনী চুয়াডাঙ্গার দিকে পশ্চাদপসরণ করতে থাকে। পশ্চাদপসরণকালে বিভিন্ন স্থানে তারা স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। উল্লেখ্য ওই দিন চুয়াডাঙ্গামুখী শত্রুসেনার একটি বড় বহর পীরপুরে মাথাভাঙ্গা নদীর পাড়ে আমাদের দলের দ্বিমুখী আক্রমণের শিকার হয়। এখন যেখানে উজিরপুর মাদ্রাসা মাথাভাঙ্গার সেই পকেটে নদীর দুই কূলে অবস্থান নিয়ে সেদিন প্রায় ঘন্টাতিনেক শত্রুসেনাকে আটকে রাখতে আমরা সক্ষম হই। আমাদের আক্রমণের মুখে শত্রুসেনার দল পিছু হটে যায় এবং তাদের বহরের সকল সামরিক যান সহ চুয়াডাঙ্গা-দামুড়হুদা সড়ক ত্যাগ করে সড়কের পূর্ব পাশে অবস্থান নিতে বাধ্য হয়। ওই যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান মন্টু। দু’পক্ষে সেদিন প্রচুর গুলিবিনিময় হয় এবং অন্ততপক্ষে পাঁচজন শত্রুসেনা মারাত্মকভাবে আহত হয়। এর বিপরীতে মাত্র একজন মুক্তিযোদ্ধা পায়ে সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ওই যুদ্ধে শত্রুসেনার দুটি ভারী যান সহ ১০৬ মিলিমিটার রিকয়েললেস রাইফেল যুক্ত একটি হালকা যান মুক্তিযোদ্ধারা উড়িয়ে দেয়। এমতাবস্থায় মূল সড়ক ছেড়ে রাতের আঁধারে গ্রামের পথ ধরে তারা পশ্চাদপসরণ করে। যাহোক এ’সময় অর্থাৎ ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চুয়াডাঙ্গার তিন দিক হতে শত্রু বাহিনীকে ঘিরে ফেললে বলতে গেলে তারা প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ওই তারিখে সারাদিন ধরে চলেছে মুহুর্মুহু গুলি বিনিময়। সেইসাথে শত্রুর মর্টারের প্রত্যাঘাতের জবাবে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিবর্ষণ, সাথে শতশত কন্ঠে “জয় বাংলা”র হুংকার। সেদিন দিবাগত রাত, সোমবার পেরিয়ে মঙ্গলবার, তারিখ ছিলো ৭ ডিসেম্বর। চুড়ান্ত আক্রমণের জন্য সে’রাতে মুক্তিযোদ্ধারা প্রস্তুত। লক্ষ্য – যেকোন উপায়ে সেই রাতেই মুক্ত করতে হবে মহকুমা শহর চুয়াডাঙ্গা – প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী চুয়াডাঙ্গা।

চুয়াডাঙ্গার শহীদ হাসান চত্বর ১৯৭১ এর ঐতিহাসিক দোতলার দৃশ্য। স্বাধীন বাংলার পতাকা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

এদিকে আগের কয়েকদিন ধরে পাকিস্তানী বাহিনীকে তাড়া বা চেজ করে সেদিন সন্ধ্যার মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধারা শহরের পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে চলা ‘আমাদের ছোট নদী’ মাথাভাঙ্গা’র অপর পাড়ে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের পাশে আলুকদিয়া’য় তাদের অবস্থান সংহত করে। সেইসাথে আমার দলের ৬০-৭০ জন প্রশিক্ষিত যোদ্ধা এবং সাথে কিছু সহযোগী গ্রামবাসী মিলে নদীর কূল ঘেঁসে অবস্থান নিই পীরপুর থেকে আলুকদিয়া হয়ে যেখানে মাথাভাঙ্গা বয়ে গেছে তিন দিক দিয়ে সেই দৌলতদিয়াড় পকেটে। আরেকটি দল অবস্থান নেয় শহরের উত্তরে। তৃতীয় দলটি অবস্থান নেয় বেলগাছির কাছে রেললাইনের পশ্চিম পাশে।

চুয়াডাঙ্গার ঐতিহাসিক আটকবর। ১৯৭১ সালে এখানেই মহান মুক্তিযুদ্ধে আটজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছিলেন। পরে এখানে স্মৃতিসৌধ গড়ে ওঠে।

এর মাঝে মুক্তিবাহিনীর উপুর্যুপরি আক্রমণের মুখে দখলদার পাকিস্তান বাহিনী রাতের অন্ধকারে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে চুয়াডাঙ্গা শহরের প্রবেশপথে মাথাভাঙা নদীর উপর ব্রীজটি বিষ্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেয়। উদ্দেশ্য, মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রযাত্রাকে বিলম্বিত ও বাধাগ্রস্ত করা। এর আগে ব্রীজের মুখে স্থাপিত ২২ পাউন্ডার ফিল্ডগানটি তারা সবার অলক্ষ্যে অপসারন করা সহ নদীর পশ্চিম পাড়ের চারটি বাংকার ত্যাগ করে পিছিয়ে যায়। এদিকে দিন পেরিয়ে রাতভর চলেছে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্রিমুখী আক্রমণ। এর মাঝে ঘন্টাখানেক প্রতিরোধ প্রচেষ্টা চালানোর পর অবস্থা বেগতিক দেখে চুয়াডাঙ্গা থানা আত্মসমর্পণ করে প্রাণ বাঁচাতে সেখানের সবাই পালিয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে মাঝ রাতের আগেই আমরা পৌঁছে যাই ব্রিজের পশ্চিম পাড়ে, শহরসীমার মাত্র আড়াইশো গজের মধ্যে। উপুর্যুপরি আক্রমণ ও প্রতিআক্রমণের পাশাপাশি সে’সময় হানাদার বাহিনীকে সারারাত ব্যস্ত রাখে মুক্তিযোদ্ধাদের মুহুর্মুহু “জয় বাংলা” শ্লোগান, চলতে থাকে বুলেটের ঝড়, সাথে গ্রেনেড ও শত্রুর মর্টার শেল এর কান ফাটানো বিস্ফোরণ ধ্বনি। এমন পরিস্থিতিতে পেছন হতে মেশিনগানের ফায়ার কভার নিয়ে মাথাভাঙা নদী সাঁতরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম দলটি প্রবেশ করে চুয়াডাঙ্গায়। নদী পেরিয়ে সেই দলে আমি এবং আমার আর পাঁচ জন সহযোদ্ধা রাতের আঁধারে অবস্থান নিই সদর থানা সংলগ্ন নদীর পাড়ে। মুহূর্তে যার যার পজিশন সংহত করে সংকেত পাঠাই নদীর অপর পাড়ে। এর মাঝে চুয়াডাঙ্গা থানার পতন ঘটেছে।

 

মুক্তিযোদ্ধাদের সারারাত ব্যপী প্রচন্ড গোলাগুলি ও দখলদার বাহিনীর প্রত্যুত্তরের শব্দে সেই ভোরে চুয়াডাঙ্গা শহরে ফজরের আজান শোনা যায়নি। শহরবাসী কেউ ঐ প্রচন্ড গোলাগুলির মাঝে বাইরে বেরুতে সাহসী হননি। ঘন কুয়াশার মধ্যে এর মাঝে আকাশে সামান্য আলোর আভা আছে কি নেই। ব্রীজের উড়ে যাওয়া পূর্ব প্রান্তে এলএমজি, সেমি অটোমেটিক রাইফেল, স্টার্লিং সাবমেশিনগান ও কোমরে গ্রেনেড নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা কয়েকজন তখন অবস্থান নিয়েছি। কিছুক্ষণ পর নদীর ওপার হতে সহযোদ্ধাদের দ্বিতীয় দলটি আমাদের সাথে এসে যোগ দেয়। এবার তাদের কভারে অগ্রবর্তী দল হিসেবে আমি ও আমার অপর জনাপাঁচেক সহযোদ্ধা উঠে আসি রাতের আঁধার ও ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা রাস্তার উপরে – চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার চৌরাস্তায়। পাশেই ন্যাশনাল ব্যাংকের (বর্তমান সোনালী ব্যাংক) শাখা। দেখি আমাদের আক্রমণের তোড়ে থানার পুলিশ সহ ব্যাংকে অবস্থানরত পুলিশ ও অবাঙ্গালী প্যারামিলিশিয়া বাহিনীর ইউনিটিটি আগেই পলায়ন করেছে।

 

সদর রাস্তার চারপাশ তখন নিঃস্তব্ধ; রাস্তায় পাশে কয়েকটি কুকুর অস্থির হয়ে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বড়বাজারের চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে আমরা জোর গলায় সমস্বরে চিৎকার দিই “জয় বাংলা”। সেই সাথে ট্রেসার বুলেট ছুঁড়ে সংকেত দিলে মুহুর্তে নদীর ওপার হতে সহযোদ্ধাদের কন্ঠে জবাব পাই। সংকেত পাওয়া মাত্র “জয় বাংলা” শ্লোগান দিতে দিতে তারা কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে জড়ো হতে থাকে। এর আগে বড় বাজারের মোড়ে একটি বাঁশের মাথায় উড়িয়ে দিই লাল-সবুজ-সোনালী রঙের স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। সেইসাথে সমস্বরে “জয় বাংলা”। রাইফেল ও মেশিনগানের বিকট শব্দে তখন ছোট্ট শহরটি জেগে উঠেছে। ঘন কুয়াশাঢাকা সেই ভোরে আশপাশ থেকে বেরিয়ে আসতে থাকে অবরুদ্ধ ভীত কয়েকজন মানুষ। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে গলা মিলিয়ে তাদের সোচ্চার কন্ঠে “জয় বাংলা” তখন চুয়াডাঙ্গা শহরের আকাশ পাতাল যেন কাঁপিয়ে দিচ্ছে। উল্লেখ্য তার আগেই শত্রু বাহিনী চুয়াডাঙ্গা হতে পলায়ন করে।

 

এর মাঝে আকাশে দেখা দিয়েছে দিনের প্রথম আলো। চোখ ভরে দেখি মুক্ত চুয়াডাঙ্গার প্রথম সকাল। মনে পড়ে ১৫ এপ্রিল অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে গৃহত্যাগের কথা। তার পর সেই প্রথম মুক্ত চুয়াডাঙ্গার মাটিতে দাঁড়িয়ে জাতীয় পতাকার প্রতি অভিবাদন জানানোর সাথেসাথে সম্মিলিত কন্ঠে “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” তখন আকাশ-বাতাস যেন মথিত করে চলেছে। লক্ষ্য করি সহযোদ্ধা কারও কারও চোখে অশ্রুরেখা। বলতেই হয় ভোরের আলোয় রাঙানো সেই অভূতপূর্ব ও ঐতিহাসিক ক্ষণের ব্যাখ্যাতীত অনুভূতিটি ছিলো আমার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সঞ্চয়।

 

সেই হতে প্রতি বছর এই দিনে ‘চুয়াডাঙ্গা মুক্ত দিবস’ পালিত হয়ে আসছে। এ উপলক্ষ্যে আজ স্মরণ করি চুয়াডাঙ্গা মুক্তির সেই যুদ্ধে আমার যেসব সহযোদ্ধা দেশ মুক্তির মহামন্ত্রে সেদিন জীবন বাজি রেখেছিলেন, এবং বিশেষ করে আমার তিন সহপাঠী, ঘনিষ্ট বন্ধু ও সহযোদ্ধা- শহীদ হাসান জামান, শহীদ আলাউল ইসলাম খোকন ও শহীদ আবুল কাশেম সহ অন্যান্য শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং জানা ও নাম না জানা অসংখ্য শহীদ ও নির্যাতিত নারীকে – যাদের ত্যাগ, সম্ভ্রম, অশ্রু, রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে আমাদের এই দেশ, আমাদের প্রাণের বাংলাদেশ।

[লেখকঃ বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার]