হোল্ডারের ডাবল হ্যাটট্রিকে সিরিজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের

স্পোর্টস ডেস্ক

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ক্যারিবীয় এ পেইসার একাই ধসিয়ে দিয়েছেন ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপ। তার অনবদ্য ওভার হ্যাটট্রিকে সিরিজের পঞ্চম টি-টোয়েন্টিতে ১৭ রানের জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর সেই সুবাদে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করল সফরকারীরা।

পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ছিলেন ভিলেন। সেই ম্যাচে জেসন হোল্ডারের এক ওভারে ২৮ রান নিয়ে দলকে সিরিজে সমতায় ফেরানোর পথে এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছিলেন ইংল্যান্ড দলপতি মঈন আলি, কিন্তু এক দিন পরই দৃশ্যপট বদলে নায়ক বনে গেলেন হোল্ডার। দুর্দান্ত বোলিংয়ের পাশাপাশি দলকে জিতিয়ে দেন সিরিজও।

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ক্যারিবীয় এ পেইসার একাই ধসিয়ে দিয়েছেন ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপ। তার অনবদ্য ডাবল হ্যাটট্রিকে সিরিজের পঞ্চম টি-টোয়েন্টিতে ১৭ রানের জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর সেই সুবাদে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে সফরকারীরা।

ব্রিজটাউনে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ক্যারিবীয়দের শক্ত ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার ব্রেন্ডন কিং ও কাইল মায়ার্স। কিং দেখশুনে ব্যাট চালাতে থাকলেও ২২ গজে ঝড় তোলেন মায়ার্স।

 

ম্যাচের সপ্তম ওভারে তাদের ৫৯ রানের জুটি ভাঙে মায়ার্সের বিদায়ে। আদিল রাশিদের শিকার বনে মাঠ ছাড়ার আগে বামহাতি এ ব্যাটার খেলেন ১৯ বলে ৩১ রানের ঝড়ো ইনিংস।

এক ওভার বাদেই লিভিংস্টোনের শিকার হয়ে ৫ রানেই ফেরেন রোমারিও শেপার্ড। উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রেখে তখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন ব্রেন্ডন, কিন্তু দলীয় ৮৯ রানে লিভিংস্টোনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। ক্রিস জর্ডানের হাতে ধরা দিয়ে ৩১ বলে ৩৪ করে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।

অল্পতেই মাঠ ছাড়তে হয় নিকোলাস পুরাণকেও। শেষের দিকে অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডের ২৫ বলে ৪১ ও রভমান পাওয়েলের ১৭ বলে ৩৫ রানের টর্নেডো ইনিংসে ভর করে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রানে থামে ক্যারিবীয়দের ইনিংসের চাকা।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। ইনিংসের প্রথম ওভারেই দলীয় ৮ রানে আকিল হোসেনকে সুইপ করতে গিয়ে ইনসাইড এজে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা দিয়ে মাঠ ছাড়েন জেসন রয়।

এরপর নিয়মিত উইকেট পতন ঘটতে থাকলেও জেমস ভিন্সের ৩৫ বলে ৫৫ ও স্যাম বিলিংসের ২৮ বলে ৪১ রানের ইনিংসে ভর করে লড়াইটা জমিয়ে দেয় ইংল্যান্ড, কিন্তু ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা তখনও জানতেন না কী নাটক অপেক্ষা করছে তাদের জন্যে।

ম্যাচের শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংলিশদের প্রয়োজন ছিল ২০ রান। এমন সময় বল হাতে আসেন জেসন হোল্ডার। এসেই প্রথম বলটি দেন নো। সেই সঙ্গে দুবার জায়গা পরিবর্তন করেন স্যাম বিলিংস ও ক্রিস জর্ডান। পরের বলে আসেনি কোনো রান।

শেষ চার বলে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ১৭ রান। হাতে ছিল ৪ উইকেট।

ক্রিজের এক প্রান্তে তখন সেট ব্যাটার বিলিংস, তবে ফেস করছিলেন ক্রিস জর্ডান। হোল্ডারের ওভারের দ্বিতীয় বলটি লো ফুলটস পেয়ে লেগ সাইডে উড়িয়ে মারেন জর্ডান, কিন্তু উড়িয়ে মারা বলটি তালুবন্দি করেন হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র।

পরের বলটি ইয়র্কার লেন্থে করলেও সেটি মিড উইকেটে উড়িয়ে মারতে গিয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন বিলিংস। আর তাতেই ঘুরে যায় ম্যাচের মোড়।

চতুর্থ বলে আদিল রাশিদকে ফিরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ক্যারিবীয় হিসেবে হ্যাটট্রিক বাগিয়ে নেন ডানহাতি এ পেইসার। উড়তে থাকা হোল্ডার ইংল্যান্ডের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন পরের বলেই সাকিব মাহমুদকে ফিরিয়ে। শেষ ওভারে ডাবল হ্যাটট্রিক করে দলকে এনে দেন অবিশ্বাস্য এক জয়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে একাই পাঁচ উইকেট নেন হোল্ডার। চারটি উইকেট নেন আকিল হোসেন। আর একটি উইকেট যায় ওডেন স্মিথের ঝুলিতে।

দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের বলে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন হোল্ডার। একই সঙ্গে সিরিজে ৩৭ রান ও ১৫ উইকেট শিকার করায় সিরিজ সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচন করা হয় তাকে।