স্বামী হিসেবে সাংবাদিকরা পারফেক্ট!

ফাতিহা নিগার অপূর্বা

প্রেমিক বা স্বামী হিসেবে সাংবাদিকরা আসলে কেমন? এমন প্রশ্নে অনেকেই আঁতকে উঠতে পারেন, ভাবতে পারেন সাংবাদিক মানেই বিপদজনক। না ভুল সাংবাদিকরা সঙ্গী হিসেবে অসাধারণ হয়ে থাকে। দেশ ও দশের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি একজন সাংবাদিক তার সঙ্গীর প্রতিও থাকে বিশ্বস্ত। তবে একজন সাংবাদিকের সঙ্গে প্রেম করা সহজ নয়। এর বড় কারণ হলও তারা পরিশ্রম অনুযায়ী উপার্জন করতে পারে না, এমন কি তারা কাজের ক্ষেত্রে প্রতি অনেক বেশি নিবেদিত থাকে। সবার ছুটি থাকলেও তাদের ছুটি মেলে কম। যে কারণে প্রিয়জন এবং পরিজনদের সময়ও দিতে পারে না। জেনেশুনে এমন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর সাহস ক’জনেরই বা থাকে!

সাংবাদিকরা নিজের বাস্তববাদী জীবনের সাথে মিল রেখে সঙ্গীর সাথে সমঝোতা করে চলতে পারেন। সঙ্গীর যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থেকে সমাধানের চেষ্টা করে। সাধারণ মানুষদের মতো অল্প কিছুতেই রেগে গিয়ে সম্পর্কের অবনতি করতে চায় না। কাজের চ্যালেঞ্জের মতো জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে ভালোবাসে তাই সঙ্গীর যেকোনো আবদার পূরণে নিজেকে উজাড় করে দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকেন যেনো।

অনেকে মনে করেন, সাংবাদিকেরা নিস্তেজ, অসামাজিক এবং আত্মপ্রেমেই মগ্ন থাকে। তবে বাস্তবতা ভিন্ন কথা। তারা শহরের সবচেয়ে আনন্দদায়ক পার্টিতে, সিনেমার প্রিমিয়ারে যেতে পারে; সেরা রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে পারে যেতে পারে যেকোনো স্বনামধন্য অনুষ্ঠানে স্পেশাল গেস্ট হিসেবে। এমন মানুষের সঙ্গী হতে কে না চাইবে! তাছাড়া সর্বত্র তাদের সম্মান থাকে, অনেকসময় তাদের সম্মানে সম্মানিত হতে পারেন তাদের সঙ্গীরাও।

একজন সাংবাদিককে অবশ্যই সৃজনশীল হতে হয়। জ্ঞানপূর্ণ এবং আকর্ষক গল্পগুলো তারা পাঠকের সামনে উপস্থাপন করে যা কিনা নিউজরুমের সীমার বাইরেও প্রসারিত হয়। একজন সাংবাদিকের সঙ্গে প্রেম করার অন্যতম সুবিধা হলও সে আপনাকে সবচেয়ে স্নিগ্ধ উপায়ে মুগ্ধ করতে পারবে। এমনকি তার দেওয়া কষ্ট কিংবা অবহেলাও হবে একইরকম সৃজনশীল! বুঝবে আপনার মনের কি চাহিদা, যেটা অন্য কোনো প্রফেশনে আপনি নাও পেতে পারেন।

বিশ্বের চারপাশে যা ঘটছে তার খোঁজ তারা স্বাভাবিকভাবেই রাখে। তাদের সঙ্গে কথোপকথন আকর্ষণীয় চমকপ্রদ। কথা চালিয়ে গেলে তা আপনাকে অনেককিছু জানতে সাহায্য করবে, তাদের সঙ্গে কথা অবিরাম কথা বললেও আপনি বিরক্ত হবেন না। কারণ তারা যেকোনো বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে পারে এমন কি আপনার যেকোনো সমস্যার নিখুঁত সমাধানও যেনো তার কাছে প্রস্তুত।

তাদের কাজের প্রতি অনুরাগই তাদের চালিত করে, অর্থ নয়। যদি এটি অর্থ তৈরির বিষয়ে হতো, তবে তারা এই পেশায় থাকতো না। তারা তাদের পরিশ্রমের হিসাবে ততটা উপার্জন নাও করতে পারে, তবে তারা সময়কে বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারে। এই উপভোগের ভাগ ইচ্ছে করলে আপনিও নিজের করে নিতে পারবেন।

বিশ্বাস হলও অন্যতম বৈশিষ্ট্য যা সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রেকর্ডের বাইরে রাখা থেকে শুরু করে তারা অনেক কিছুই নিরাপদ ও গোপন রাখতে জানে। নিশ্চিন্ত থাকুন, আপনি যদি একজন সাংবাদিকের সাথে প্রেম বা বিয়ে সঙ্গে করেন তবে আপনার বিশ্বাস ভঙ্গ হবে না এবং আপনার গোপনীয়তা সব সময় নিরাপদ থাকবে যদি তিনি হলুদ সাংবাদিক না হয়ে থাকেন।

সাংবাদিকদের তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই। তারা আপনাকে এক মিলিয়ন প্রশ্ন দিয়ে অতিষ্ঠ করবে না বা আপনি কীভাবে আপনার দিনের প্রতিটি মিনিট কাটিয়েছেন তা জানার দাবি করবে না। তারা আপনাকে স্পেস দেবে এবং বিনিময়ে একই আশা করবে। আপনি না বললেও আপনার মনের অবস্থা বুঝে নিবে এবং স্বাধীনতা দিবে ব্যক্তিগত জীবনে চলার পথে।

সাংবাদিক হওয়া সহজ নয়। এটি কঠোর পরিশ্রম এবং নিঃশর্ত অধ্যবসায় দ্বারা ভারাক্রান্ত একটি জীবন। খবরের উৎসের পেছনে দৌড়ানো থেকে শুরু করে খবরকে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা কোনটিই সহজ নয়। তারা ঠিক জানে যে কোনোকিছু সঠিকভাবে পেতে এবং কার্যকর করতে কি লাগে; এবং তাদের ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রেও একই আচরণ আশা করে। এসব কারণে সাংবাদিকদের বিচ্ছেদ ও তুলনামূলকভাবে কম। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলও জীবনকে উপভোগ্য করতে চাইলে সাংবাদিকদের বেছে নিতে পারেন নির্দ্বিধায়। স্বামী হিসেবে স্বামীরা পারফেক্ট।