স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও উন্নয়নের ছোয়া থেকে বঞ্চিত জীবননগরের ভাঙ্গা ব্রীজ

এইচ এম হাকিম, স্টাফ রিপোর্টারঃ

১৯৭১ সাল থেকে ২০২২সাল চলমান অবস্থায় দির্ঘ সময় ৫০ বছর পার হলেও জীবননগর পৌর সভার ৫ নং ওয়ার্ডের লক্ষিপুর ভাঙ্গা ব্রীজের আজ অবদি কোন প্রকারের উন্নয়ন মেলেনি, স্বাধীনতার দির্ঘ ৫০ বছরে কয়েক ডর্জন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েও উন্নয়ন ঘটাতে পারিনি লক্ষিপুর ভাঙ্গা ব্রীজের,যার ফলে লক্ষিপুর এলাকাবাসি সহ আশে পাশের এলাকার মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত।

 

মুক্তিযুদ্ধের সময় জীবননগরকে পাক হানাদার মুক্ত রাখার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধারা ব্রীজটির একাংশ ভেঙ্গে ফেলেন। ৪০০ গজ পথের স্থলে ৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হাসপাতাল ও শহরে আসতে হচ্ছে । এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ভাঙ্গা ব্রীজের স্থানে একটি নতুন ব্রীজ নির্মানের।

 

চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর পৌরসভার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ভৈরব নদী। ভৈরব নদীর কারণে জীবননগর পৌরসভা দুভাগে বিভক্ত। ভৈরব নদীর ওপর দুটি ব্রীজ। পুরাতন ব্রীজ বা ভাঙ্গা ব্রীজ অপরটি নতুন ব্রীজ। ব্রটিশ আমলে ভৈরব নদীর ওপর এ ব্রীজটি নির্মিত হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের সময় জীবননগরকে পাক হানাদার মুক্ত রাখার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধারা ব্রীজটির একাংশ ভেঙ্গে ফেলেন। যুদ্ধের পর জোড়াতালি দিয়ে ব্রীজটি ব্যাবহার উপযোগি করা হয়।

তৎকালীন চুয়াডাঙ্গা মহাকুমার সাথে জীবননগর থানার সড়ক পথের যোগাযোগ এই ব্রীজের ওপর দিয়েই হতো। স্বাধীনতার পরবর্তীতে ভাঙ্গা ব্রীজের কোন সংস্কার বা উন্নয়ন হয়নি। এক সময় ব্রীজটি ব্যবহারের অনুপোযোগি হয়ে পড়ে। পৌরসভার চেয়ারম্যান আশরাফুল হক পৌরসভার অর্থায়নে পরিত্যাক্ত ব্রীজটি সংস্কার করেন। শুধুমাত্র জনগণের চলাচলের জন্য ব্রীজটি উন্মুক্ত করে দেন।

লক্ষীপুরের মুুমুর্ষ কোন রুগিকে হাসপাতালে নিতে হলে বা মালামাল বিক্রিয় জন্য শহরে আনতে হলে ৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে তারপর শহরে আসতে হয়। অথচ ব্রীজটির কারণে মাত্র ৪০০ গজ পথের স্থলে ৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে শহরে আসতে হচ্ছে । ব্রীজটি না হওয়ার কারণে পৌরবাসীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জীবননগর পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ভাঙ্গাব্রীজটির স্থানে একটি নতুন ব্রীজ নির্মান করা হোক।

ব্রীজটি নির্মিত হলে এটি শহরের বিকল্প সড়ক হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। ফলে শহরের ওপর যানবাহনের চাপও কম হবে। এ বিষয়ে জীবননগর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল হোসেন খোকনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ব্রীজটির কারণে আমার ওয়ার্ডের জনগণকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে ব্রীজটি চলাচলের উপযোগি করার চেস্টা করছি।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মোঃ আব্দুল লতিফ অমল বলেন, লক্ষিপুর এই ব্রীজটি নির্মানের বিষয়ে আমি চেয়ারম্যান থাকা কালিন অনেক জায়গায় কথা বলেছিলাম, কিন্তু কোন সুরাহ হয়নি,আমাদের একটাই দাবী অতি দ্রুত লক্ষিপুর ভাঙ্গা ব্রীজটি নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি কামনা করছি।

জীবননগর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, লক্ষীপুরের এ ভাঙ্গাব্রীজটি পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করেছে। ব্রীজটি ব্যাবহার অনুপোযোগি হওয়ায় জনগণকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এখানে একটি নতুন ব্রীজ নির্মানের জন্য আমি আমাদের এমপি মহদয়ের সাথে কথা বলেছি। তিনি আশ্বস্ত করেছেন একটি নতুন ব্রীজ নির্মানের জন্য। কোন সংস্থা হতে যদি নতুন ব্রীজ নির্মানে ব্যর্থ হই, তাহলে আমি পৌর সভার অর্থায়নে এখানে ব্রীজ নির্মান করবো।