সীমান্ত জুড়ে বিজিবির রেড অ্যালার্ট

প্রতিনিধি, রাজশাহী: ট্যানারি মালিকদের সাথে আড়তদারদের সমঝোতা না হওয়ায় রাজশাহী অঞ্চলে চামড়ার আড়তে এখনও আশানুরূপ কেনাবেচা শুরু হয়নি। এ অবস্থায় কোরবানির চামড়া ভারতে পাচারের আশঙ্কায় উত্তরাঞ্চলের সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে ভারতে চামড়া পাচার করতে না পারে, এজন্য সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে এ অঞ্চলের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি’র সদস্যদের।

সংশ্লিষ্টরা চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানীর সময় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনে বিক্রি করেন ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে। কিন্তু চামড়া বিক্রির টাকা পাননি কয়েক বছর ধরে। ফলে এবার চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। ঢাকায় উচ্চপর্যায়ের কয়েক দফা বৈঠকের পরও পাওনা পরিশোধ করছেন না ট্যানারি মালিকরা। ফলে রাজশাহী অঞ্চলে চামড়ার সবচেয়ে বড় আড়ত নাটোরে এখনো শুরু হয়নি কাঙ্ক্ষিত বেচাকেনা।

নাটোর চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান আক্কু বলেন, ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়েছে। তারা পাওনা টাকা পরিশোধ করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো আড়তদাররা আগের বকেয়া টাকা পাননি। অনেকেই আড়তে চামড়া নিয়ে এসেছেন। বেচাকেনা কেবল শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনো চামড়ার বাজার জমে ওঠেনি।

এ বিষয়ে, রাজশাহী জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ বলেন, রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা অন্তত ২০ কোটি টাকা পাবেন ট্যানারি মালিকদের কাছে। ট্যানারী মালিকরা বার বার বকেয়া টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। কিন্তু এখনো দেননি। ফলে এবারের ঈদে বাড়তি পুঁজি দিয়ে চামড়া কিনতে হয়েছে। নাটোরের আড়তে অনেক ব্যবসায়ীই চামড়া নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তারা আর নগদ টাকা ছাড়া চামড়া বিক্রি করতে চান না।

এদিকে ঈদের প্রায় তিন সপ্তাহ পরও আড়তে চামড়ার আশানুরূপ কেনাবেচা শুরু না হওয়ায় অবিক্রিত চামড়া ভারতে পাচারের আশঙ্কায় রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও জয়পুরহাটের ৪০৬ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা জারি করেছে বিজিবি। সদর দপ্তর থেকেও পাঠানো হয়েছে এ সংক্রান্ত কঠোর নির্দেশনা।

বিজিবি’র ১ ব্যাটেলিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বলেন, কোনোভাবেই যাতে চামড়া সীমান্তের ওপারে যেতে না পারে, সেজন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে বিজিবি সদর দপ্তর। মহাপরিচালকের নির্দেশনা অনুযায়ী নদীপথে স্পীডবোটে টহল জোরদার করা হয়েছে। বিওপিগুলোতে বিজিবি সদস্যদের সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সীমান্তের ৮ কিলোমিটারের মধ্যে চামড়া মজুদ পেলেই বিজিবি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।