সিরাজগঞ্জে চরছোনগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী নিয়োগে টাকা ও জমি নেয়ার অভিযোগ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জে নানা অনিমের মাধ্যেদিয়ে একটি বিদ্যালয়ে নিয়োগ হলো প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী। এতে স্থানীয় ও প্রার্থিদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রভাবশালী হওয়াতে কেউ কিছু বলতে পারছেননা।

বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এমন ঘটনা চলে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নরে আলহাজ্ব শমসের আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে।

জানাগেছে,সম্প্রতি এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কিন্তু অনৈতিক পন্থায় নিয়োগ প্রক্রিয়ার ষড়যন্ত্র ফাঁস হওয়াতে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয় এবং পুনরায় নিয়োগের জন্য চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি দিন ঠিক হয়।

গতকাল বুধবার সকালে বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষার জন্য সদর থানা থেকে বিদ্যালয়ের নীচ তলায় পুলিশ মোতায়েন থাকলেও কৌশলে ভবনের দ্বিতীয় তলায় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

নিয়োগ পরীক্ষার জন্য প্রধান শিক্ষক পদে ১০ জন আবেদন করলেও পরীক্ষায় অংশনেয় ৫জন এবং নৈশপ্রহরী পদে ৫জন আবেদন করলেও সেখানে ৩জন উপস্থিত ছিলেন বলে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আনন্দ মোহন ঘোষ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

তবে প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী পদে অন্য প্রার্থিরা কেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিলেননা এমন প্রশ্ন্নের কোন সদুত্তোর তিনি দিতে পারেননি।

স্থানীয়দের একাধিক অভিযোগ যোগ্য ও স্থানীয় অনেক প্রার্থি থাকলেও তারা যেন নিয়োগ না পান সেজন্য অনেক আগেই একটি প্রক্রিয়া তৈরী করা হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক এসকল কর্মপস্থা ঠিক করেছেন।

প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য মোটা অংকের টাকার লেনদেন সহ নৈশপ্রহরী নিয়োগের জন্য নগদ ২লাখ টাকাসহ ১৫ শতক জমি লিখে দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে নৈশ প্রহরী নিয়োগ হয়েছে বলে এলাকায় জনশ্রুতি আছে।

নিয়োগ পরীক্ষা নিতে আসা সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এলিজা সুলতানা উপস্থিত গণমাধ্যমকে জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ পরীক্ষা ও প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কোন প্রকার টাকা বা জমি লেদদেন হয়েছে কিনা সেটা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও সহকারী প্রধান শিক্ষক বলতে পারবেন। আমি কিছু জানিনা।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস সবুর আকন্দ দাম্ভিকতার সাথে সাংবাদিকদের বলেন,নৈশপ্রহরী হিসেবে রিপন সেখ নামে একজনকে নিয়াগে দেওয়া হয়েছে সে আমার আত্নীয়। আর প্রধান শিক্ষক পদে শফিকুল ইসলাম নামে যাকে নিয়োগ করা হলো সেও আমাদের পরিচিত।

এখানে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করেই তাদের নেয়া হয়েছে। টাকা ও জমির বিষয়টি তিনি এরিয়ে বলেন আপনারা যা শুনছেন তা মিথ্যা এবং অসত্য।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন,আমি নিয়োগ সংক্রান্ত কিছুই বলতে পারবেনা। সবকিছু সভাপতি ও সহকারী প্রধান শিক্ষক জানে।

অপরদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতনিধি হিসবে নিয়োগ কমিটিতে থাকা সদস্য মাসুদ রানা কমিটির পক্ষে সাফাইগেয়ে বলেন কোন অনিয়ম হয়নি। আপনা যেটা শুনেছেন তা সঠিকনা। আমি এরচেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবোনা।

এদিকে নিয়োগ পরীক্ষা শেষে নৈশপ্রহরী রিপন সাংবাদিকদের জানান,আমাকে আগে থেকেই মনোনীত করা ছিলো। তবে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়া শফিকুল ইসলামের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এ প্রতিনিধিকে বলেন আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্বেও এমন একটা নিয়োগ সম্পর্কে কিছুই জানিনা। তবে নিয়োগসহ নানা অনিয়মেন কথা আমার কানে আসছে। আমি বিষয়টি নিয়ে কমিটির সাথে কথা বলবো।

স্থানীয়দের মতে দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে কোন শিক্ষ না থাকায় বিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম হয়েছে। নিয়োগ নিয়েও অনিয়ম হলো। তাই সঠিক তদন্ত করলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায়য়ে ত্রুটি আছে তা বের হয়ে আসবে।