সান্তাহার জংশন স্টেশনে বেড়েছে যাত্রীসেবার মানঃস্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা

নেহাল আহম্মেদ প্রান্ত, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি ঃ উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহি সান্তাহার রেলওয়ে জংশন স্টেশনে বেড়েছে যাত্রীসেবার মান। স্টেশন মাস্টারের চেষ্টায় চুরি-ছিনতাই, স্টেশনের সুষ্ঠু পরিবেশ ও যাত্রীদের নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে একাধিক প্লাটফরমে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি, স্টেশনে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ফিরে আসায় যাত্রীর সংখ্যাও বেড়েছে কয়েকগুন। বেড়েছে সরকারের রাজস্ব।

পূর্বে যেখানে স্টেশন দিনে একবারও পরিস্কার করা হতো না কিন্তু বর্তমানে স্টেশন মাস্টারের তদারকির কারণে দিনে কয়েকবার পরিস্কার করা হয়। যার কারণে আবর্জনা ও হকার মুক্তসহ ষ্টেশনের প্লাটফরমগুলো এখন ঝকঝক করছে। এছাড়াও যাত্রীদের বসার জন্য স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক মানের চেয়ার।

পরিবেশ বান্ধব স্টেশন গড়ে তোলার লক্ষ্যে কার্য্যরত স্টেশন মাষ্টার রেজাউল করিম ডালিম স্টেশনের অন্যান্য কর্মচারী ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতায় নিরলস ভাবে কাজ করে আসছেন। স্টেশনের এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে একজন চৌকশ ও পরিশ্রমী স্টেশন মাস্টার হিসেবে রেজাউল করিম ডালিমের কোন বিকল্প নেই বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর পঞ্চগড়, একতা, দ্রæতযান, কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর কুড়িগ্রাম, চিলাহাটি থেকে আন্ত:নগর নীলসাগর, লালমনিহাট থেকে লালমনি, রংপুর থেকে রংপুর এক্সপ্রেস, সান্তাহার জংশন থেকে বুড়িমারী আন্তঃনগর করতোয়া, দিনাজপুরগামী আন্তঃনগর দোলনচাপা এক্সপ্রেসসহ প্রায় ৩৫টি ট্রেন সান্তাহার জংশন স্টেশন দিয়ে চলাচল করে। ফলে এ স্টেশনে যাত্রী সংখ্যা এখন কয়েকগুন বেড়ে গেছে। পেশিশক্তিকে উপেক্ষা করে ও স্টেশনের একাধিক দপ্তরে চরম জনবল সংকট নিয়েও স্টেশন মাস্টার রেজাউল করিম ডালিম স্টেশনের আশেপাশের অবৈধ স্থাপনা মুক্ত, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা, ৫টি প্লাটফরমে যাত্রীদের বসার জন্য আধুনিক চেয়ার স্থাপন করাসহ স্টেশনকে চোর, মাদকসেবী ও হকার মুক্ত করার মতো কঠিন কাজগুলো পরিচলানা করে আসছেন। এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াতকারী অনেক ট্রেন যাত্রী, স্থানীয় বাসিন্দা ও সচেতনমহল স্টেশন মাষ্টারের এই সকল পজেটিভ কর্মকান্ড, স্টেশনের পরিবেশ ও যাত্রীসেবার মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

শহরের পাথরকুটা গ্রামের গোলাম হোসেন জানান, এক সময় সান্তাহার স্টেশনে মলমূত্র, পলেথিন, কাগজ বছরের পর বছর পরে থাকায় দুর্গন্ধ বের হতো। স্টেশনের কোথাও এসে দাঁড়ানোর মতো অবস্থা ছিলো না। বসার জন্য কোন চেয়ারের ব্যবস্থা ছিলো না। হকার ও চোরদেরদের আনাগোনায় মুখর থাকতো স্টেশন। কিন্তু বর্তমানে স্টেশনের চিত্র পাল্টে গেছে।

মালশন গ্রামের বাচ্চু মিয়া, নওগাঁর সাহাপুর গ্রামের ফজল আলীসহ অনেকেই বলেন ভালো কাজের প্রশংসা করাও একটি ইবাদত। বর্তমান স্টেশন মাষ্টারের কর্মকান্ড সত্যিই প্রশংসনীয় কারন তার অক্লান্ত পরিশ্রমের কারনেই আজ স্টেশনটি একটি পরিচ্ছন্ন ও ছিমছাম স্টেশনে পরিণত করেছেন। তাই স্টেশনের আধুনিকায়নের এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য স্টেশন মাস্টার হিসেবে ডালিম সাহেবের কোন বিকল্প নেই। কারণ তার জায়গায় অন্য কেউ এখানে এলে হয়তোবা এই ধারা আর অব্যাহত নাও থাকতে পারে। কারণ যে ব্যক্তি যে পরিবেশের জন্য উপযুক্ত তাকে সেখানেই রাখা উচিত।

স্টেশন মাষ্টার রেজাউল করিম ডালিম বলেন এই স্টেশনের দেখভাল করার জন্যই সরকার আমাকে বেতন দিয়ে এখানে রেখেছেন। তাই যাত্রী ও স্টেশনের জন্য ভালো কিছু করাটা আমার নৈতিক দায়িত্ব। আমি চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করার। যতদিন এখানে রয়েছি এবং অন্য কোথাও গেলেও এই ধারা বজায় রাখার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাবো। আর ভালো কাজের প্রশংসা পেলে সেই কাজগুলো আরো বেশি বেশি করার মনোবল অনেকগুন বেড়ে যায়।